আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াত শিবির কি বলেছিলো, আর কি কি করে দেখালো?

টিভি দেখাটা কমাতে হবে। বিদ্যুত সাশ্রয় হবে। গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশে যে অরাজকতা চলছে, সেটা যে কবে বন্ধ হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নাই। শুক্র শনি বাদে গত চারদিন ধরে হরতাল চলছে। এই চারদিনে নানা এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হচ্ছে, চলছে সরকারী সম্পদ ধ্বংসের ব্যাপক নাশকতা।

বাঁশের কেল্লা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে গত বৃহঃস্পতিবারই দেশে নাশকতা চালাবার জন্য জামায়াত শিবির তার কর্মীদের আহবান জানায়। তারা যে নাশকতা চালাবার পরিকল্পনা করছে, সেটা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েই করছে, কিন্তু সরকার থেকে এই নাশকতা ঠেকানোর জন্য কোনো রকম পরিকল্পনা দেখা যায় নাই। একটার পর একটা রেললাইন উপড়ে ফেলছে, ট্রেনে আগুন দিয়ে দেশের সম্পদ নষ্ট করছে, এখনো পর্যন্ত আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনী কর্তৃক রেলওয়েকে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য কোনো রকম ব্যবস্হা গ্রহণ দৃশ্যমান হয় নাই। রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ, নায়ারগঞ্জ, টঙ্গী, কমলাপুর সবখানে ট্রেনে আগুন দেওয়া হচ্ছে। সরকারী সম্পদে আগুন দেওয়ার মতো বড় অপরাধ আর কিছু হতে পারে বলে মনে হয় না।

আমাদের দেশের সম্পদ খুবই সীমিত, সেটাও তারা ধ্বংশের কাজে নেমে পড়েছে। শুধু এই একটা নাশকতার কারণে জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্ধ করা উচিত, হরকাতুল জিহাদকে নিষিদ্ধ করেছিলো সরকার, তারা কি এতো বড় নাশকতা চালিয়েছিলো? তারা যা যা বলেছিলো, তার মাঝে কি কি করে দেখালো হিসাব করি। ১। রেল লাইন শুধু উপড়ে ফেলে নাই, আগুনও দিয়েছে। ২।

বাস টার্মিনাল থেকে কোনো গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে না, কক্সবাজার, বগুড়া অবরুদ্ধ। চট্টগ্রাম কক্সবাজার সড়কে ২-৩ দিন ধরে বন্ধ, পুলিশ বিডিআর দিয়েও কি এই সড়ক চালু করা গেল না? সব কি ঠুঠু জগন্নাথ? পর্যটকরা আটকা পড়ে আছে কক্সবাজারে। ৩। ঢাকাও কার্যত অবরুদ্ধ, সবজি চালান আসছে না, ঢাকা থেকে গার্মেন্টস এর কাপড় বন্দরে যেতে পারছে না। ১৩ কি ১৪টা জেলাতে ঢাকা থেকে কোনো পত্রিকা যায় নাই।

৪। কিছু কিছু থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি আক্রমণ করেছে, পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে পুলিশকে মেরেছে, ফাঁড়িতে পুলিশদের তালাবদ্ধ করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ৫। গ্রামাঞ্চলে সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে বলে প্রচারণা চালিয়েছে, মানুষকে বুঝাতে পেরেছে, সাঈদীর মতো আলেম (জালেম)কে চাঁদে দেখা গেছে , অতএব এত বড় আলেমকে জেল থেকে বের করতে হবে। ৬।

ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্হানে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের অফিসে হামলা করা হয়েছে ৭। পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ছবি তারা ভালোভাবেই প্রচার করছে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে, এই কাজে প্রচুর টাকাও ঢালা হচ্ছে। ৮। বিশ্বের সকল দূতাবাস ঘেরাও করে নাই এখনো, হয়ত এটাও করে দেখাবে। ৯।

ঢাকা কার্যত এখন অবরুদ্ধ। আমার পরিবারের কয়েকজন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসতে পারছে না, ট্রেনের টিকেট কেটেছে আগামীকালকের জন্য, কিন্তু সেটা আজকে ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। কারণ নিরাপত্তাহীনতা। ১০। বিভিন্ন স্হানে আওয়ামীলীগ নেতাদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হচ্ছে।

বগুড়াতে এমপির বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলাতে সরকারী অফিসে হামলা করা হয়েছে, আগুন দেওয়া হয়েছে। ঘোষনার বাইরে যা করছে। ১। বিভিন্ন স্হানে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করছে।

মন্দিরে আগুন দিয়েছে। এভাবে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। ২। পল্লীবিদ্যুতের অফিসে , সাবস্টেশনে আগুন দেওয়া হয়েছে। উত্তরাঞ্চলে কিছু এলাকাতে বিদ্যুতের অভাবে এই মৌসুমে সেচ বন্ধ, এইবার ঐসব এলাকাতে চাষ হবে না আর।

৩। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী যে হোটেলে অবস্হান করছেন, তার সামনেই ককটেল ফুটালো। ভারতীয় গণমাধ্যম খুব ফলাও করে এটা প্রচার করলো। আমাদের দেশের মানসম্মান কই গিয়ে ঠেকলো, একবার চিন্তা করে দেখেছন? একজন বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধানের নিরাপত্তাতে কি কোনো রকম ঘাটতি ছিলো? বিভিন্ন সময় নানা নাশকতা চালালে বলা হয়, গোয়েন্দা তথ্যের অভাবে জানা ছিলো না এমনটা হবে। কিন্তু এখানে তো কোনো গোয়েন্দা লাগে না।

আমার কথা হচ্ছে, শিবির প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে এই নাশকতা চালাচ্ছে,সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য কি ব্যবস্হা নেওয়া হয়েছে? সরকার শুধু শাহবাগ আর আজকে হরতালের দিন বিএনপি অফিসে নিরাপত্তা দিচ্ছে, আমরা সাধারণ আমজনতা কি দোষ করলাম? দেশে কি কার্যত কোনো সরকার আছে বলে কি মনে হচ্ছে আপনার? ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্হানে অরাজকতা চলছে, সরকার/ প্রসাশনের পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রনে কার্যত ক্ষমতা নাই। তারা আসলে কি চায়? সরকার কি মনে করছে, আজকের হরতাল শেষ হলে নাশকতাও শেষ হয়ে যাবে? আমার তো মনে হয় না। এটা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে হচ্ছে। এখন তো বিএনপিও এই অরাজকতাকে সমর্থন দিচ্ছে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।