কখনো কী এমন দাবি শুনেছেন শ্লোগানে - ‘রক্ষক থেকে বাঁচান’? অথচ গত ২৯ জুলাই তেমনি এক দাবি সম্বলিত টি-শার্ট পড়েছেন পুলিশের গুলিতে নিহত এক তরুণের মা। টরন্টোর কেন্দ্রবিন্দু ইয়ং-ডানডাস স্কোয়ারে শত শত বিক্ষুব্ধ জনতার মিছিলে তিনি অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি অন্যদের হাতে প্লাকার্ডে ওই দাবিটি শোভা পেয়েছে। কালো পোশাক পরিহিতা পাঁচ তরুণী ম্যাগাফোন হাতে ‘জাস্টিস ফর স্যামি’ আওয়াজে মুখরিত করেছেন পুরো মিছিল ও এলাকা। শেষটায় তা থেমেছে ডানডাস-থ্রিনিটি বেলউড পার্ক এলাকায়।
এখানেই দুদিন আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে টরন্টো পুলিশ ১৮ বছরের সিরিয়ান অভিবাসী স্যামি ইয়াতিমকে ১০ সেকেন্ডের ব্যবধানে অবিরত ৯টি গুলি ছুড়ে হত্যা করেছে। তারই জীবন্ত ভিডিও ফুটেজ এখন ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। সেখানে দেখা গেছে, আগেই সে ছুরি হাতে একটি ট্রামের সকল যাত্রীসহ চালককে ভয় দেখিয়ে নামিয়ে দিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ট্রামটিকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে এবং তাকে ছুরিটি ফেলে দিতে বললেও সে তা শুনেনি। পরিণতিতে সে হয়েছে এই নির্বিচার হত্যাকান্ডের শিকার! তাতে পুলিশের নির্বিচার গুলি বর্ষণের সমালোচনাসহ ওই বিক্ষোভ মিছিলের খবর অতি গুরুত্বে প্রচার করেছে কানাডার প্রায় সব মিডিয়া।
শীর্ষ স্থানীয় দুটি রক্ষণশীল জাতীয় দৈনিক গ্লোব অ্যান্ড মেইল এবং ন্যাশনাল পোষ্ট শিরোনাম করেছে- “হান্ড্রেডস অ্যাটেন্ড ‘জাস্টিস ফর স্যামি’ প্রোটেস্ট অ্যাগেন্সট ফ্যাটাল স্ট্রীটকার সুটিং” এবং “প্রোটেস্টার্স কনভার্জ অন টরন্টো পুলিশ স্টেশন ডিমান্ডিং জাস্টিস ফর সুটিং ভিকটিম স্যামি ইয়াতিম”। আর সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক টরন্টো স্টার শিরোনাম করেছে- “থাউজেন্ড মার্চ ফর স্যামি ইয়াতিম”। এছাড়া হাফিংটনপোষ্ট তাদের বিশ্বসংবাদে শিরোনাম করেছে - “সুটিং অফ এইটিন ইয়ার ওল্ড কানাডিয়ান বাই টরন্টো পুলিশ স্পার্কস আউটরেজ, প্রোম্পটস ইনভেস্টিগেশন”। টরন্টো স্টারের কলামিস্ট রোজি ডিমান্নো তার নিবন্ধ ‘আফটার স্যামি ইয়াতিম ভিডিওজ, উই উইল অল ওয়ান্ট টু সি হোয়াটস নেক্সট’-এর সূচনায় লিখেছেন, ‘দেয়ার ইজ নো জাস্টিফিকেশন - নান - ফর নাইন সর্টস ইন থারটিন সেকেন্ডস ইন দ্য মিডল অব দ্য সিটি। ইউ নো হোয়েন দ্যাট কাইন্ড অব লেথাল ফিউসিল্যাড টিপিক্যালি অকার্স ইন এ ডেন্সলি পপুলেটেড আরবান এরিয়া।
ডিউরিং সুটআউটস বিটউইন হিডলেস, স্লোপি, সোসিওপ্যাথিক স্ট্রিট গ্যাংস। কপস আর সাপোজড টু হ্যাভ বেটার জাজমেন্ট’। আর নিবন্ধের শেষটায় পুলিশের প্রশিক্ষণের সমালোচনায় লিখেছেন, ‘হাউ ক্যান দ্য লাইকলিহুড অব সাচ এনকাউন্টার্স নট বি এ ভিগোরাসলি অ্যাড্রেসড কম্পোনেন্ট অফ দেয়ার ট্রেনিং? দেয়ার হ্যাজ বিন এন্টায়ারলি টু মাচ লুকিং ব্যাক, এজ ইফ ইন হেল্পলেসনেস অভার ফ্যাটাল কন্সিকোয়েন্সেস’। অর্থাৎ শহরের মাঝে তের সেকেন্ডে নয়টি গুলি অর্থহীন। জনবসতিপূর্ণ শহরে এ ধরনের অবিরাম গুলিবর্ষণের যৌক্তিকতা থাকা চাই।
গুলিকালীন বুঝতে হবে কর্ণপাতহীন, অযত্ন ও রাস্তার সামাজিক দঙ্গল। পুলিশের সেই সঠিক বোধটুকু প্রয়োজন। কেন তাদের প্রশিক্ষণে এ ধরণের মুখোমুখিতার গুরুত্বারোপ থাকবে না। অসহায়ত্ব দিয়ে ঘটনার দায় ঠেকানো যাবে না। তাই স্যামির এই হত্যাকান্ডে টরন্টো পুলিশ নির্বিকার বসে নেই।
বরং এই প্রথমবারের মতো পুলিশের বিরুদ্ধে বিশেষ ‘ওয়াচডগ’ হিসেবে খ্যাত ‘স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট বা এসআইইউ’ পরিচালিত তদন্তকালীন পুলিশ প্রধান বিল ব্লেয়ার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আই এম অ্যাওয়ার অফ দ্য ভেরি সিরিয়াস কনসার্নস দ্যাট দ্য পাবলিক হ্যাজ। আই নো দ্যাট পিপল আর সিকিং অ্যান্সার্স এজ টু হোয়াট ওকার্ড, হোয়াই ইট হ্যাপেন্ড অ্যান্ড ইফ এনিথিং কুড হ্যাভ বিন ডান টু প্রিভেন্ট দ্য ট্রেজিক ডেথ অব দিস ইয়ং ম্যান’। অর্থাৎ জনতার মতো আমিও উদ্বিগ্ন - কী ঘটেছে, কেন এমনটি হলো এবং এই তরুণের জীবন রক্ষায় তেমন কিছু করা হয়েছে কী? এ ঘটনায় স্যামি ইয়াতিমের পরিবার থেকে বলা হয়েছে, ‘উই আর হার্ট ব্রোকেন, কনফিউজড অ্যান্ড স্টিল ইন এ স্টেট অব শক। উই ট্রাস্ট ইন দ্য কানাডিয়ান জাস্টিস সিস্টেম অ্যান্ড উই উইল সিক জাস্টিস ফর স্যামি’। সিটি টিভির খবরে প্রকাশ, ১৩ আগস্ট অপরাহ্নে টরন্টো পুলিশ হেড কোয়ার্টারের সন্মুখে দ্বিতীয় বিক্ষোভ আয়োজনেরও প্রস্তুতি চলছে, সে সময় পুলিশ বোর্ডেরও নির্ধারিত মাসিক বৈঠক রয়েছে।
তথ্যসূত্র
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।