আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুভ জন্মদিন রাইফেলস পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ



"শুভ জন্মদিন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ" সেদিনের সেই অজানা অচেনা রাইফেলস পাবলিক স্কুল এ্যাণ্ড কলেজ গতির আবেগে স্বপ্ন ও সাধনায় ৩৬ টি বছর পেরিয়ে আজ জাতীয় পর্যায়ে একটি সম্মানজনক আসনে অধিষ্ঠিত । সবুজ, শ্যামল, ছায়াঘন রাইফেলস পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ সবার কাছে সুপরিচিত একটি নিরাপদ ও আদর্শ প্রতিষ্ঠান । আজ ১ আগস্ট এই প্রতিষ্ঠানের ৩৬ বছর পূর্ণ হল। সেই ৩৬ বছর আগের রাইফেলস পাবলিক স্কুলে আজকের মতো বিশাল বিশাল ইমারত ছিলনা। ছিলনা সযত্নে লালিত ফুলের বাগান, মসৃণ মাঠ আর পাকা রাস্তা।

এবড়ো-থেবড়ো মাঠের কোথাও ছিল খানা-খন্দ, কোথাওবা ছিল কাঁটার ঝোপ। রাস্তাঘাট তখনো হয়ে উঠেনি । কাদার মধ্যে এলোমেলোভাবে বিছানো ছিল ইট। এক ইট থেকে আরেক ইট ডিঙ্গিয়ে প্রতিষ্ঠানে আসতে হতো । আজ প্রতিষ্ঠানের কলেবর বেড়েছে ।

স্কুল ভবন, কলেজ ভবন, মাল্টি- পারপাস ভবন, ইংলিশ ভার্শনের জন্য নতুন ভবন, --- মনে হয় যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের ছোঁয়ায় রাতারাতি সব তৈরী হয়ে গেছে। কাঁচা রাস্তার পরিবর্তে হয়েছে পাকা রাস্তা, হয়েছে সাজানো বাগান। শুধু কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিরাট কড়াই গাছটা। যে কড়াইবেদীর নামকরণ করা হয়েছে "ছায়ামঞ্চ"। ১৯৭৭ সালের ১ আগস্ট জুনিয়র স্কুল হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন হয়।

বিডিআর এর অভ্যন্তরে প্রায় ছয় একর জমিতে দন্ডায়মান এ প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরিকল্পনা করেন বিডিআর সদর দপ্তর এর দ্বিতীয় মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এম খলিলুর রহমান, পিএসসি । জানা যায়, এখানে স্কুলের পরিবর্তে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। পরবর্তী সময়ে মেজর সাখাওয়াত নামের এক অফিসার এখানে একটি স্কুল নির্মাণ করার প্রস্তাব করেন । এবং তার এই বিজ্ঞ পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দান করেন পরবর্তী মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী গোলাম দস্তগীর, পিএসসি। **১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭৮ সালে এই প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক স্কুল রূপে স্বীকৃতি লাভ করে।

**১৯৮০ সালে এস এস সি পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। **১৯৮৩ সালে কলেজ পর্যায়ে উন্নীত হয় এ প্রতিষ্ঠান । **১৯৮৫ সালে এইচ এস সি পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। **২০০৪ সালে এ প্রতিষ্ঠানে ন্যাশনাল কারিকুলাম এ ইংরেজী মাধ্যমের ক্লাস চালু হয় । প্রায় ৩০০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল এ প্রতিষ্ঠান।

এরা সবাই ছিল বিডিআর সদস্যদের সন্তান । বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী আছে । এর মধ্যে শতকরা ১৪ জন বিজিবি (বিডিআর) এর সন্তান । ১৯৯৬ সালে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এজাজ আহমেদ চৌধুরী এনডিসি, পিএসসি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বিডিআর এর দুইজন বীরশ্রেষ্ঠ সৈনিকের নামানুসারে বিডিআর পরিচালিত দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ সৈনিকদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। কিন্তু শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক আরোপিত শর্তের কারণে সে সময়ে নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়নি।

মেজর জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এনডিসি, পিএসসি ২০০৩ সালে পুনরায় বিডিআর এর দুজন বীরশ্রেষ্ঠের নাম বিডিআর সদর দপ্তরে অবস্থিত দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব করেন। এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে গভর্নিং বডি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ রাইফেলস পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০৪ সাল থেকে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ রাইফেলস পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ নামটি সরকারীভাবে কার্যকর করা হয় । ২০০৯ সালে পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহের ফলে সরকার বিডিআর পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়। ফলে বাংলাদেশ রাইফেলস নাম পরিবর্তন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ নামকরন করা হয়।

সেই সাথে প্রতিষ্ঠানের নাম থেকে রাইফেলস নামটি মুছে দিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ নামকরন করা হয় । ২০১১ সাল থেকে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক স্কুল কলেজ নামটি সরকারীভাবে কার্যকর করা হয় । কালের উত্তরনে এই প্রতিষ্ঠানটি আজ দেশের প্রথম সারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম। আমরা বিশ্বাস করি, অদূর ভবিষ্যতে এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা আরও অনেক বেশি কৃতিত্বের অধিকারী হবে। অজস্র ব্যক্তিমেধায় ঋদ্ধ হয়ে উঠবে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সমষ্টিগত সম্ভার।

একুশ শতকে দাঁড়িয়ে এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করবে- এই হোক সকলের অঙ্গীকার ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।