আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এত আতঙ্কের কোনও কারণ নেই :সৌরভ

তক

প্রশ্ন: নাগপুরে ভারতীয় হোটেলে এ দিন কানাঘুষো চলছিল, এই টিমের অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় হলে দু’হাজার তিন বিশ্বকাপের মতোই একটা কড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে নিত! সৌরভ: কী সিদ্ধান্ত? প্র: সে বার আপনি যেমন অনিল কুম্বলেকে বাদ দিয়েছিলেন, এ বার ক্যাপ্টেন থাকলে সাহস করে বাদ দিয়ে দিতেন গৌতম গম্ভীরকে। সৌরভ: আমি মোটেই গম্ভীরকে বাদ দিতাম না। কারা বলছে এ সব কথা? বড় টিমের সঙ্গে যে দিন ভাল পার্টনারশিপ হবে, সে দিন লোকে গম্ভীরের মূল্য বুঝবে। প্র: আপনার মনে হচ্ছে না তিন নম্বরে গম্ভীর মিসফিট? সৌরভ: একটুও না। সবাইকে কি সচিন বা সহবাগের মতো খেলতে হবে? তা ছাড়া কালকে গম্ভীর যথেষ্ট ভাল খেলেছে।

বোথার বেশির ভাগ ওভার কিন্তু ও-ই খেলেছে। গণ্ডগোলটা মোটেও গম্ভীরে হচ্ছে না। প্র: তা হলে কোথায় হচ্ছে? সৌরভ: ব্যাটিং অর্ডার সাজানো ঠিক হচ্ছে না। ধোনিকে আরও ওপরে আসতে হবে। ইউসুফ পাঠান কী এমন হনু ব্যাটসম্যান হয়ে গেল যে যুবরাজ আর ধোনির আগে খেলবে? প্র: আপনি হলে চেন্নাই ম্যাচের ব্যাটিং অর্ডার কী ভাবে সাজাতেন? সৌরভ: তিন গম্ভীর, চার ধোনি, পাঁচ যুবরাজ, ছয় রায়না আর সাত ইউসুফ।

কোহলিকে যদি চারে খেলাতে না-ই পারি তা হলে ছয়ে খেলাব না। সেখানে রায়না ঢুকবে। আর ইউসুফ পাঠানকেও বুঝতে হবে যে, ক্রিকেট মানেই প্রথম বল থেকে রানের খেলা নয়। ক্রিকেটে ব্যাটিং মানে শুধু ফোর্থ গিয়ার নয়। ফার্স্ট গিয়ার, সেকেণ্ড গিয়ারও গাড়িতে থাকে।

প্র: আপনার মতে টিম ইণ্ডিয়ার গণ্ডগোলটা কোথায় হচ্ছে? সৌরভ: গণ্ডগোলটা হচ্ছে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-টা আমরা ঠিক মতো ম্যানেজ করতে পারছি না। ওপেনাররা যে টেম্পোতে খেলছে সেই টেম্পোতেই নতুন ব্যাটসম্যানেরা খেলার চেষ্টা করছে। পাওয়ার প্লে-র টেম্পোটা ঠিক করতে হবে। একটা সেট হওয়ার ব্যাপার থাকে, উইকেটের বাউন্স বোঝার ব্যাপার থাকে। নেমেই চালানো যায় না।

নতুন ব্যাটসম্যান এসেই মনে করছে তাকে সহবাগের মতো চালাতে হবে। প্র: এ ছাড়া সমস্যা? সৌরভ: সমস্যা, যে দলটা মাঠে নামাচ্ছে তার মধ্যে ধারাবাহিকতা লাগবে। এই যে নেহরা মার খেয়ে গেল, তাকে বসিয়ে দিলাম, এটা করলে চলবে না। দল নিয়ে বড় বেশি টানাটানি হচ্ছে। মনে রাখতে হবে হোটেলের ঘরে বসে ইয়র্কার দেওয়া যায় না।

প্র: সারা ভারতবর্ষ আলোড়িত একটা প্রশ্ন নিয়ে। পঞ্চাশতম ওভার কি হরভজনকে দেওয়া উচিত ছিল না? সৌরভ: উচিত ছিল না। আমি হলেও হরভজনকে দিতাম না। প্র: আপনি ক্যাপ্টেন হলেও নেহরাই বল করতেন? সৌরভ: আমি হলে নেহরা বা জাহির, দু’জনের এক জন বল করত। স্পিনার নয়।

আমি দু’ভাবে হয়তো ভাবতাম। নেহরাকে যদি পঞ্চাশতমটা দেব ঠিকই করে রাখি, তা হলে আমি ৪৮তমটা মুনাফকে দিয়ে করাতাম। কারণ একটা পেস বোলারের বডি গরম হতে সময় লাগে, তাকেও ওয়ার্ম আপ করতে হয়। লাস্ট ওভারে এসেই সে পরের পর ইয়র্কার দিতে শুরু করবে এটা হয় না। আমি ক্যাপ্টেন হলে মনে হয় হরভজনের ওভারগুলো আগেই শেষ করে দিতাম।

৪৭ আর ৪৯তম ওভারটা বল করত নেহরা। শেষ ওভার করত জাহির। প্র: টিমকে দেখে মনে হল রীতিমতো আতঙ্কের ছায়া। শনিবার নাগপুরের রাত যেন শিরদাঁড়া দিয়ে শীতল স্রোত বইয়ে দিয়েছে। সৌরভ: এত আতঙ্কের কিছু হয়নি।

এত সমালোচনারও কিছু নেই। সমালোচনায় চ্যানেলের টিআরপি বাড়া ছাড়া কাজের কাজ কিছু হয় না। আমাদের টিম যথেষ্ট ভাল। শুধু কম্বিনেশনটা ঠিক করতে হবে। ধোনিকে আগে যেতে হবে।

আর প্লেয়ারদের কনফিডেন্স দিতে হবে। রোজ বদলালে হবে না। প্র: আপনি ক্যাপ্টেন হলে চেন্নাইতে কী ষ্ট্র্যাটেজি করতেন? সৌরভ: দুটো স্পিনার খেলাতাম। অশ্বিন অবশ্যই ঢুকত। আর ধোনিকে আমার পরামর্শ, ও যেন চেন্নাইতে ভাল উইকেটে খেলে।

আমার শুধু একটাই ভয়, খারাপ উইকেটে যদি আমরা খেলি এবং টস হেরে পরে ব্যাট করতে হয়, তখন ওদের পেস বোলারদের বল আচমকা নিচু-টিচু হয়ে যদি সচিন-সহবাগ তাড়াতাড়ি ফিরে যায়, তা হলে কিন্তু আর একপ্রস্ত কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। প্র: এ বারের বিশ্বকাপে ধোনির ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে কিছু বলবেন? সৌরভ: না। বললাম তো আতঙ্কের কিছু নেই। আসল বিশ্বকাপ তো কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে শুরু, ভুলগুলো শুধু তার আগে শুধরে নিতে হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।