খালেদ মুহিউদ্দীন: এরকম জয়ের পর সংখ্যা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে কার ভালো লাগে? কিন্তু ক্রিকেটকে যে জীবনের মতোই অনিশ্চিত সুন্দর বলা হয় সে কি আর এমনি এমনি৷ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে অসহায় আত্মসমর্পণের পর যে ৫৮ সংখ্যাটি বাদ দিতে পারলে আমরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচতাম সেই ৫৮ রানের নবম উইকেট জুটিই আমাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো৷ ২২৬ রানের লক্ষ্যে ১৬৯ রানে অষ্টম উইকেট হারানোর পর চরম আশাবাদী সমর্থকেরাও বিশ্বাস করতে পারেননি যে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় চাপা পড়বে মিরপুরের লজ্জা৷ বরং সংবাদপত্রের বার্তা সম্পাদকেরা তখনো 'এত কাছে তবু এত দূর' লাইনে শিরোনাম লেখার কথা ভাবছিলেন৷
নবম উইকেট জুটির কথা বললাম, তার কুশীলবদের কথা বললাম না৷ এই অকৃতজ্ঞতার কারণ ওই দুজনের নামের আগে বসানোর মতো যথাযথ বিশেষণ খুঁজে পাচ্ছি না৷ মধ্যযুগের রাজকীয় নকীবদের মতো দীর্ঘ ও অলংকারিক ভাষায় তাদের কথা বলতে পারলে মনে হয় সুবিচার করা হতো৷ জনাব শফিউল জনাব মাহমুদুলস্নাহ এই ব-দ্বীপের কুর্নিশ গ্রহণ করুন৷
ম্যাচটা আমরা সহজেই জিততে পারতাম৷ ২২৫ রানে ইংল্যান্ডকে বেঁধে রাখার পর তামিম আর গতকালের ম্যাচের ইমরুল কায়েসের ব্যাটিংয়ে লক্ষ্যটা তত বড় মনে হচ্ছিল না৷ ইংল্যান্ড দলের সবার শেষ দাঁতটি গোনার সুযোগ করে দিয়ে ফিরে গেলেন তামিম৷ অকারণ রানআউট হওয়া জুনায়েদ প্যাড খোলা শুরু না করতেই রকিবুলকে আসতে দেখলেন৷ এরপর সাকিব আর ইমরুলের ৮২ রানের জুটি৷ সাকিবের বন্ধ চোয়াল আর চওড়া ব্যাট দেখে অনেকেই মনে করছিলেন ম্যাচটা বুঝি জিতিয়েই তাঁবুতে ফিরতে চান অধিনায়ক৷ তিন উইকেটে ১৫৫ এর উঁচুমাথা থেকে আট উইকেটে ১৬৯ এর হেঁটমুণ্ডু চেনা বাংলাদেশ৷ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের অর্ধেক দর্শক তখন বাড়ির পথ ধরছে৷ বাংলাদেশ দলের কিছু প্রেমিক নিশ্চয়ই তখন অবস্থান নিয়েছেন_ কী করে দলের উদ্দেশ্যে মোক্ষম ঢিল মারা যায়৷
ম্যাচশেষে ধারাভাষ্যকার মাইকেল আথর্ারটন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কাছে জানতে চাইলেন, গত ম্যাচের পর লোকে ঢিল মেরে জানালা ভেঙেছে, আজ নিশ্চয়ই নতুন ঘর-বাড়ি বানিয়ে দেবে? সাকিব প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যেতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলেন৷
ইংল্যান্ডকে অল্প রানে বেঁধে রাখার কৃতিত্ব পুরো দলকেই দিতে হবে৷ ম্যাট প্রিয়রকে ফেরাতে মুশফিকের উপস্থিত বুদ্ধি, স্ট্রস বধে জুনায়েদের চটপটে ক্যাচ, ক্রমশ ভয়ংকর হয়ে ওঠা পুরনো শত্রু এয়োইন মরগ্যানকে থামাতে ইমরুলের দারুণ ক্যাচ_ সবই দারুণ কার্যকর ছিল৷
কালকের খেলা নিয়ে একটি প্রসঙ্গে না বললেই নয়৷ মাঠের শিশির৷ তবে যতক্ষণ পর্যনত্ম ইংল্যান্ড উইকেট পাচ্ছিল না তখনই এই শিশিরের আক্রমণ সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে৷ সোয়ান তো বল হাতেই রাখতে পারছিলেন না৷ কয়েক ওভার বয়সী বলটি বদলে না দেয়াতে অস্ট্রেলীয় আম্পায়ার ডেরিল হারপারের সঙ্গে চিল চিত্কার শুরু করে দেন ইংরেজ রাজহাঁস৷ হালকা চালে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে ইমরুল কায়েসের রান আউটের পর আট উইকেট পড়ার সময় কিন্তু মাঠের শিশিরের কথা একবারও মনে পড়েনি ইংরেজদের৷ ম্যাচের একমাত্র ছক্কাটি মেরে আমাদের দীর্ঘশ্বাস যখন আরেকটু লম্বা করছেন শফিউল তখনো ফিরে আসেনি শিশির৷ ম্যাচ জিততে হলে যে তখনও চলিস্নশ রান দরকার৷ আগের ম্যাচেই যারা ৫৮ রানে অলআউট হয়েছে সেই দলের দশ নম্বর ব্যাটসম্যানের চার-ছক্কা শিশুসুলভ চপলতাই হয়তো মনে করেছিল ইংল্যান্ড৷ শিশির নিয়ে চেঁচামেচি করার আর দরকার মনে করেনি৷
online earning education for bangladeshi people
for details pls visit http://www.bdcareer.tk
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।