আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাযির-নাযির একমাত্র আল্লাহ, অন্য কেউ নয়, এমনকি রাসূল সা. ও নন

আমি নাই।

আল্লাহ সর্বদ্রষ্টা এবং সর্বত্র বিরাজমান আমরা যাকে হাযির-নাযির বিশ্বাস করি তিনি হলেন আল্লাহ। এই গুন আল্লাহ ব্যতিত আর কারো হতে পারে না। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, অর্থ্যাৎ কোন ব্যাপারেই আল্লাহ অন্য কিছুর মত নন। তাই আল্লাহ দেখার ব্যাপারে বান্দার মত চক্ষুর প্রয়োজন হয় না।

তার শুনার জন্য বান্দার মত কানের প্রয়োজনও হয় না। তদুপরি আল্লাহ সবকিছুর সর্বদ্রষ্টা,সর্বশ্রুতা এবং সর্বত্র বিরাজমান। আর এরকম সর্বদ্রষ্টা,সর্বশ্রুতা এবং সর্বত্র বিরাজমানকেই হাযির-নাযির বলা হয়। যা একমাত্র আল্লাহর তা'য়ালার গুন। এই গুনে আর কেউ গুনাম্বিত হতে পারে না।

১। এ ব্যাপারে আল্লাহ এক আয়াতে বলেন, وَهُوَ مَعَكُمۡ أَيۡنَ مَا كُنتُمۡۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِيرٌ۬ অর্থাৎ, তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, আল্লাহ সেখানেই তোমাদের সাথে আছেন এবং তিনি তোমাদের কর্মকান্ড দেখেন। ২। অন্য আয়াতে বলেন, مَا يَڪُونُ مِن نَّجۡوَىٰ ثَلَـٰثَةٍ إِلَّا هُوَ رَابِعُهُمۡ وَلَا خَمۡسَةٍ إِلَّا هُوَ سَادِسُہُمۡ وَلَآ أَدۡنَىٰ مِن ذَٲلِكَ وَلَآ أَڪۡثَرَ إِلَّا هُوَ مَعَهُمۡ أَيۡنَ مَا كَانُواْ অর্থাৎ, কোন ৩ ব্যক্তি যদি চুপে চুপে কথা বলে, তখন আল্লাহ ৪র্থজন হিসাবে, আর কোন ৫ ব্যক্তি যদি চুপিসারে কথা বলে, তখন তিনি ৬ষ্টজন হিসাবে থাকেন। এর কম বা বেশী হলেও বান্দারা যেখানেই থাকে, তিনি তাদের সাথে সেখানেই থাকেন।

৩। অন্য এক আয়াতে বলেন, وَٱللَّهُ شَہِيدٌ عَلَىٰ مَا تَعۡمَلُونَ অর্থ্যাৎ, তোমরা যা কিছু করো না কেন, আল্লাহ তা প্রত্যক্ষ করেন। ৪। অন্য আরেক আয়াতে বলেন, وَأَنتَ عَلَىٰ كُلِّ شَىۡءٍ۬ شَہِيدٌ অর্থাৎ, আর তুমিই সবকিছুর প্রত্যক্ষকারী। ৫।

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَىۡءٍ۬ شَہِيدٌ অর্থাৎ, নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু প্রত্যক্ষকারী। ৬। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِيرٌ۬ অর্থাৎ, আর তোমরা আল্লাহতে ভয় করো এবং জেনো যে, তোমরা যাই কিছু করো না কেন, আল্লাহ তা দেখেন। ৭। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, وَٱللَّهُ بَصِيرُۢ بِٱلۡعِبَادِ অর্থাৎ, আল্লাহ বান্দাদের দেখেন।

৮। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, অর্থাৎ, আল্লাহ তাদের কার্যকলাপ দেখেন। ৯। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, وَٱللَّهُ بَصِيرُۢ بِمَا يَعۡمَلُونَ অর্থাৎ, তোমাদের ইচ্ছামত যাই কিছু করো, আল্লাহ সবই দেখেন। ১০।

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, إِنَّهُ ۥ بِكُلِّ شَىۡءِۭ بَصِيرٌ অর্থাৎ, নিশ্চয়ই তিনি সবকিছু দেখেন। ১১। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, وَقَالَ ٱللَّهُ إِنِّى مَعَڪُمۡ অর্থাৎ আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সাথে আছি। ১২। আরেক আয়াতে তিনি বলেন, وَأَنتُمُ ٱلۡأَعۡلَوۡنَ وَٱللَّهُ مَعَكُمۡ অর্থাৎ, আর তোমরাই হবে বিজয়ী এবং আল্লাহ তোমাদের সাথে আছেন।

হাযির-নাযির বা সর্বত্র বিরাজমান ও সর্বদ্রষ্টা হওয়া একমাত্র আল্লাহ পাকের বৈশিষ্টপূর্ণ গুন হওয়ায় অন্য কাউকে এ গুনে গুনাম্বিত করা শিরকি এবং কুফরি আক্বীদা-বিশ্বাস। কিন্তু কিছু জ্ঞানপাপী এবং ভ্রান্তপন্থী গন্ডমূর্খ লোক আজকাল রাসূল সা.কে হাযির-নাযির বলে বিশ্বাস করে। আর আল্লাহ তা'য়ালার প্রতি ধৃষ্টতা প্রদর্শন করে আরো বলে যে, আল্লাহ হাযির-নাযির নন। বরং হাযির-নাযির একমাত্র নবী করীম সা. গুন। একথা বলে তারা নবীজীকে হাযির-নাযির সাজাবার চক্রান্তে লিপ্ত আছে।

অথচ, আল্লাহর রাসূল সা. হাযির-নাযির নন। কারণ, যার আসা-যাওয়া আছে তার হাযির-নাযির হওয়ার প্রশ্নই উঠে না। কিন্তু যার আসা-যাওয়া নেই তিনি হাযির-নাযির। রাসুল সা. এর আসা-যাওয়া আছে তাই তিনি হাযির-নাযির নন। যেহেতু আল্লাহর আসা-যাওয়া নেই, সেহেতু তিনি হাযির-নাযির: মানে তিনি সর্বত্র বিরাজমান এবং সর্বদ্রষ্টা।

এই গুন একমাত্র আল্লাহ তা'য়ালরই, আর কারো নয়। যদি রাসুল সা. হাযির-নাযির হতেন, তাহলে তিনি কেনই বা মেরাজে গেলেন? আর কেনই বা যাবেন? যদি তিনি গিয়ে থাকেন, তাহলে হাযির-নাযির নন, না গিয়ে থাকলে তাহলে মেরাজ হল কীভাবে? আর যদি না গিয়ে মেরাজ করেন, তাহলে সূরায়ে বনী ইসরাইলে উল্লেখিত এই আয়াতের অর্থ বা উদ্দেশ্যই কী? سُبۡحَـٰنَ ٱلَّذِىٓ أَسۡرَىٰ بِعَبۡدِهِۦ لَيۡلاً۬ مِّنَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ إِلَى ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡأَقۡصَا ٱلَّذِى بَـٰرَكۡنَا حَوۡلَهُ ۥ لِنُرِيَهُ ۥ مِنۡ ءَايَـٰتِنَآ‌ۚ إِنَّهُ ۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ । অর্থাৎ, পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল। এই আয়াতে তো আসা-যাওয়া কথা বলতেছে বুঝা যাচ্ছে।

মোট কথা, আল্লাহ তা'য়ালা ব্যতীত আর কেউই হাযির-নাযির নন। এমনকি রাসূল সা. ও নন। আসুন আমরা এব্যাপারে আক্বীদাকে যাচাই-বাচাই করে সঠিক বিশ্বাস অন্তরে স্থাপন করি। তাহলে মুক্তির আশা করতে পারি। ইনশাআল্লাহ @ চলবে #


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।