আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ড. ইউনুছকে বলছি "রাজনীতিবিদদের ঈর্ষার জবাব রাজনীতিতেই - যদি দিতে চান"

যারা GRE/GMAT পরীক্ষা দিবেন, কোন MATH সমস্যায় পড়লে আমাকে জানান। যে কোন MATH সমস্যার সমাধান দিব - যত দ্রুত সম্ভব। কিভাবে সমাধান করা হল বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ পাবেন।

জাতি হিসেবে আমরা খুবই আবেগী তাই সহজেই ঘোরে পড়ে যাই এবং আমাদের ঘোর কাটতে অনেক সময় লাগে। ঘোরের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে মূর্খ এবং উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তির পার্থক্য খুব কমই ধরা পড়ে।

আমরা সব জানি, মানি, বুঝি কিন্তু ঘোর কাটাতে পারি না। তবে আমাদের প্রধান সমস্যা ঘোরে থাকাটা নয়। সমস্যাটা হল অন্য জায়গায়। আমাদের এই ঘোরটা সহজেই নিয়ণ্ত্রিত হয় অন্যের দ্বারা। আমরা নিয়ণ্ত্রনকারীর অভিপ্রায়ের ব্যাপারে খুব কমই চিন্তিত।

তাইতো আমাদের এই ঘোর যুগ যুগ ধরে স্বার্থপর-চতুর রাজনীতিবিদদের মুল অস্ত্র। দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের চরিত্র কতটা যে পবিত্র তা নিয়ে আশা করি কেউ দ্বিমত পোষণ করবেন না। রাজনীতিবিদরা দ্বিমত করলেও করতে পারেন- কারণ তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করতে অভ্যস্ত নন। তাদের মুখে দেশ আগে, কাজের বেলায় স্বার্থ আগে। আত্মস্বার্থ সিদ্ধিতে ক্ষমতা আগে।

আর গণতন্ত্রে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। এদেশের আপামর জনগণকে সহজেই ঘোরে ফেলা যায়। সুতরাং সমাধান খুব সহজ- যেকোন উপায়ে যদি জনগণকে ঘোরে ফেলা যায় তবেই বাজিমাত। তাই একজন ফাদলেন মহান পিতার স্বপ্ন বাস্তবানের গল্প; আর আরেকজন তার স্বামীর আদর্শ। মজার ব্যাপার হল এই 'স্বপ্ন' আর 'আদর্শ' কোনটাই কিন্ত static নয়; দুটোই dynamic. যখন যে নীতিতে স্বার্থ থাকবে, তখন সে নীতিটাই যথারীতি 'স্বপ্ন' আর 'আদর্শ' হয়ে যাবে।

আর দেখবেন পাবলিককে সেভাবেই বোঝানো হচ্ছে, ঘোরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা সবাই যে এই চালাকিটা বুঝিনা- তা কিন্তু না। বুঝি বলেই পরিবর্তন চাই। এই পারিবারিক গনতণ্ত্রের অবসান চাই। কিন্তু সেক্ষেত্রে অন্য সমস্যা, হাতেতো আর কোন Option নাই।

গনতণ্ত্রের ইতিহাসে গত ২০ বছর আমরা শুধু "Face"-কে "Change" করে আসছি। একবার এই আপা তো পরের বার ওই আপা। দুই আপার বাইরে কেউ নাই। কেউ থাকলে আবার এই দুই আপা এক হয়ে যান প্রতিরোধের জন্য। তাই "Change"-কে আর "Face" করা হয়নি আমাদের।

এই রাজনীতির পথটাই নোংরা। ভাল মনের মানুষ এখানে কমই আসতে চান। কোন এক জায়গায় দেখেছিলাম, "সমাজ কলুষিত হয় মন্দ মানুষের জন্য নয়, ভাল মানুষগুলোর নিস্ক্রিয়তার জন্য"। মন্দ থাকবেই, কিন্তু ভালরা যদি নিস্ক্রীয় থাকে তবে মন্দরা রাজত্ব করবে এটাই স্বাভাবিক। যত দিন যাচ্ছে এই সমস্যা ততই প্রকট হচ্ছে।

আমরা সবাই বুঝি, কেন এতদিন ড. ইউনুছের গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে থাকাটা বেআইনি হয়নি, এখন কেন হচ্ছে? অথবা, বেআইনি হলেও কেন এতদিন কোন সমস্যা হয়নি এবং সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক চুপচাপ ছিল, এখন কেন সরব হলেন? কেন কোর্ট রুল দিতে গড়িমসি করেন। সব কিছুরই একটা গঠনমূলক সমাধান আছে। সারাবিশ্বের কাছে যিনি সম্মানিত, দেশের ইতিহাসে যার অর্জন চিরকাল দ্যূতি ছড়াবে, সরকার তাকে এভাবে হেনস্ত না করলেও পারতেন। ড. ইউনুছ একজন সাহসী মানুষ। আমি অন্তত বিশ্বাস করি।

সবাই সাধারণত বড় কোন সম্মান পেলে তাকে সম্বল করেই জীবনের বাকি দিনগুলো বাঁচতে চান, কোনরুপ ঝুঁকি নিতে চান না। ড. ইউনুছ এরকম নন। তাইতো গতানুগতিক চিন্তাধারর বাইরে এসে দেশের দুঃসময়ে রাজনীতিতে আসতে চেয়েছিলেন। আমাদের পরশ্রীকাতর রাজনীতিবিদরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে আজকের পথ অবলম্বন করেছেন, যে লালসায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ড. ইউনুছের যে অর্জন তাকে ছোট করে দেখানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তার সমাধান বা জবাব আদালতে পাওয়া যাবে না। আমাদের বিচার বিভাগকে কতটা ভরসা করা যায়, Amnesty International-এর রিপোর্টে তা উম্মোচিত হয়েছে।

যদি চান- রাজনীতি দিয়েই এই প্রতিহিংসার জবাব দিন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো প্রায় ২.৫ বছর বাকি, এখনও যথেষ্ট সময় আছে। জনগণের একটা বড় অংশ পারিবারিক গণতণ্ত্রের বিকল্প খুঁজছে, তাদের সমর্থন পাবেনই। আপনার ভাবমূর্তি নষ্ট করে সরকার সে রাস্তা বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে। যদি চান- আর একবার সাহস দেখান।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।