আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বড় শক্তিধর দলগুলোকে নিয়ে হালকা-পাতলা বিশ্লেষন

নো ওয়ান ক্যান মেক মি ফিল ইনফেরিওর উইদআউট মাই কনসেন্ট!

বাংলাদেশ দল নিয়ে তো অনেক আলোচনা হলো এবং হচ্ছে। এবার না হয় একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই। আজকের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে অন্যান্য শক্তিধর দলগুলার শক্তি, দূর্বলতা, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পসিবিলিটি ইত্যাদি ইত্যাদি। ছয়টা দলের শক্তিমত্তা নিয়ে আলোচনা করবোঃ পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দঃ আফ্রিকা (ওঃ ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডকে আপাতত বাদ রাখলাম)। এদের মধ্যে যে কেউই চ্যাম্পিয়ন হতে পারে, কেননা ‘ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা’! যাই হোক, সবার খেলা দেখার পরে আমি কি চিন্তা-ভাবনা করছি সেটাই এখানে তুলে ধরছি (আজকে শুধুমাত্র এশিয়ার তিনটি দেশ নিয়ে বলি)ঃ পাকিস্তানঃ এখন পর্যন্ত খুব ইমপ্রেসিভ পারফরম্যান্স করছে পাকিস্তানীরা, যেটা এদের কাছ থেকে কেউ অতটা আশা করে নাই।

এদের মূল শক্তি হচ্ছে মিডল-অর্ডার ব্যাটিং লাইন-আপ! ইউনুস ও মিসবাহ-এর মতো দুইটা স্তম্ভ সম্ভবত আর কোন দলেই নাই, এরপর লোয়ার মিডল-অর্ডারে রয়েছে আফ্রিদি ও রাজ্জাক। আপার ও লোয়ার মিডল-অর্ডারের মধ্যে এত সুন্দর ভারসাম্য আর কোন দলেই নেই! আর বোলিং-এও পাকিস্তান ব্যালান্সড, আফ্রিদি তো আছেই, উমর গুলও সেরকম বোলিং করছে! এদের মূল দূর্বলতা টপ অর্ডার ব্যাটিং। শুরুতেই এদের উইকেট পড়ে যাচ্ছে একটা-দুইটা, দুর্দান্ত কোন ভিত্তি গড়ে দিতে পারছে না প্রথম তিনজন ব্যাটসম্যান! এছাড়া ফিল্ডিং-এ এদের দূর্বলতা তো সবসময়ই ছিলো! তবে যতই শক্তিশালী ও ব্যালান্সড হোক, পাকিস্তান যে চ্যাম্পিয়ন হবে না এটা আমি লিখে দিতে পারি! এরা এদের ভালো খেলা শুরুতেই খেলে ফেলেছে, এবং জায়গা মত ঠিকই ধরা খাবে (হয় কোয়ার্টার বা সেমি ফাইনালে)! পাকিস্তানীরা যদি তাদের আনপ্রেডিকটেবল ইমেজ বজায় রেখে সেদিন কানাডার কাছে হারতো, তাইলে অবশ্য আমি এতটা নিঃসন্দেহ হতে পারতাম না! কিন্ত তাদের এই টানা তিনটি বিজয়ই আমাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে যে সামনে একটা দিন আসবেই যেদিন এদের প্রত্যেকটা ডিপার্টমেন্ট খারাপ পারফর্ম করবে! (কারনটা ক্রিকেটীয় নয় মানি, কিন্তু এটাই হচ্ছে তাদের নেচার, কোন উপায় নাই)! তাই আমার বিবেচনায় পাকিস্তানকে এবার সর্বোচ্চ সেমিফাইনাল খেলেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে! শ্রীলংকাঃ শ্রীলংকার মূল শক্তি দুইজন বোলারঃ মালিঙ্গা ও মুরালিধরন! এরা যুগপৎভাবে যেদিন ভয়ংকর বোলিং করবে, সেদিন শ্রীলংকাকে আটকানো যে কারো পক্ষেই কষ্টকর হয়ে পড়বে। এছাড়া সাঙ্গাকারার কনসিসটেন্সী একটা বড় ভরসার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের ব্যাটিং-এ। অবশ্য শ্রীলংকাকে আমি কখনোই প্রি-ফেভারিট হিসেবে গোনায় আনি নাই মূলত তাদের ব্যাটিং-এর জন্য! পাঁচ-ছয় নাম্বারে এদের যে ব্যাটসম্যান আছে, তাদের তো কেনিয়া দলেও জায়গা পাওয়ার কথা না! আর আরেক ভরসার প্রতীক জয়াবর্ধনাকে আমি কোনকালেই জাতের ব্যাটসম্যান মনে করি নাই, শুধু অনসাইডে খুব দুর্দান্ত খেলে বলে আমার কিছুটা সম্মান পায় সে! দিলশানের উপরও আমার তেমন কোন আস্থা নেই, জায়গা মত ফ্লপ খাওয়ার চান্স অনেক বেশী।

তাই এই ব্যাটিং-লাইন আপ নিয়ে শ্রীলংকা চ্যাম্পিয়ন হবে, এতটা আশাবাদী আমি হতে পারছি না! আমার বিবেচনায় এদের সর্বোচ্চ দৌড় হবে সেমি ফাইনাল, তবে কোয়ার্টার ফাইনালেও বাদ পড়লে অবাক হবার কিছু থাকবে না! ভারতঃ বলার অপেক্ষা রাখে না, ব্যাটিং-ই ভারতের মূল শক্তি। যে দলে শচীন আছে, তাদের আর চাওয়া-পাওয়ার কি থাকতে পারে? আর সাথে আছে গৌতম গম্ভীর ও ভিরাট কোহলী! এই সলিড তিনজন ব্যাটসম্যানের উপস্থিতিকেই আমি বলবো ভারতের ব্যাটিং-এর সবচেয়ে শক্তিশালী দিক! এরপর আসে শেওয়াগ-যুবরাজ-ধোনী-পাঠানের নাম! এদের নিয়ে বেশী কিছু বলার নাই; ‘উপার কাট’, ‘হেলিকপ্টার শট’ দিয়ে তারা যদি বিশ্বকাপ জিততে চায়, আমি মানা করার কে? যদিও এদেরকে নিয়েই বিপক্ষ দল বেশী চিন্তিত থাকে, তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলবোঃ ‘‘যুবরাজের বেলায় লং-অন, ডিপ মিড-উইকেট ও ডিপ-স্কয়ার লেগে তিনটা ফিল্ডার রেখে অফস্ট্যাম্পের বাইরে টানা বল করতে থাকো, ধোনির বেলায় শুধু স্ট্যাম্প-টু-স্ট্যাম্প বোলিং করে যাও! আর শেওয়াগের বেলায় শুধু হাফ-চ্যান্সগুলাকে ফুল-চ্যান্স বানানোর চেষ্টা করো! যদি এগুলো করতে ব্যর্থ হও, তাহলে ভারতকে তোমরা কেউই ঠেকাতে পারবে না!’’ ভারতের বোলিং দূর্বল হলেও আনপ্রডিক্টেবল লাগে আমার কাছে। জহির খান ও হরভজন কখন ভালো বল করবে আর কখন বাজে বোলিং করবে এটা কেউ বলতে পারে না! সে তুলনায় মুনাফ প্যাটেল অনেক কনসিস্টেন্ট! মুনাফের উপর অনেকাংশেই নির্ভর করবে বড় ম্যাচে ভারতের জয়-পরাজয়! আর ভারত চ্যাম্পিয়ন হবে কি হবে না, এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলবো, এটা নির্ভর করছে একমাত্র শচীনের উপরে! সেমিফাইনাল বা ফাইনালে শচীনের একটা ক্ল্যাসিক ব্যাটিং-এর কারনেই ভারত হয়তো চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেতে পারে! তবে আমার প্রেডিকশন হচ্ছে ভারত এবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেবে বা ফাইনালে হারবে যদি না শচীন কোন অভাবনীয় ইনিংস খেলে! (অস্ট্রেলিয়া, দঃ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডকে নিয়ে পরে লিখবো ইনশাল্লাহ)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।