Nothing
জীবনে নারীদের ভালবাস কিংবা আলগে রাখার উপর ভিত্তি গড়েই বেড়ে চলে আমাদের জীবন। আমি আজ স্মরণ করতে চাই তাদের যারা আমাকে ভালবেসে আদর করে অতি যত্নে আমাকে গড়ে তুলেছে। যাদের ঋণ শোধ করার কোন উপায় আমার কেন মানব জাতিরও হয়ত নেই।
বড় মা - ছোট থেকে আমরা মূলত বড় মা'র আদরে বড় হয়েছে। আমরা ৫ ভাই-বোন যার ফলে মা হয়তও প্রায়শই ঝামেলায় থাকত আমাদের নিয়ে ও সংসারের নানাবিধ কাজের মাঝে থাকতে হতো তাকে।
বড় মা আমাদের এতটাই অকৃত্রিম ভালবাসত যে একটা সময় মনে হতো বড় মা যেদিন মারা যাবে সেদিন আমিও মারা যাব এবং একই কবরে যেন মাটি হয়। আমাদের ঈদের সময় বড়মাই সব চাইতে বেশি সালামী দিত যা সবার চাইতেও কয়েকগুন বেশি। একটা কথা মনে পড়ে গেল- এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে যাখ কারফিউ চলছিল হঠাৎ কারফিউ'র মাঝে বড়মা চলে আসল লালবাগ থেকে নতুন পল্টন পথটা নিশ্চয় কমনা। আমি অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলাম মৃতুর কোন ভয় নেই আমাদের দেখার ও আদর করার সেকি আগ্রহ। বড়মা আমি তোমায় অনেক মিস করি।
আমার জীবনের সবচেয়ে যোটা কষ্টের বিষয় সেটা হচ্ছে আমি বড়মার মৃতু্র সময় ঢাকায় ছিলাম না মৃতুর চারদিন পর এসে যানতে পেরেছিলাম সে আর নাই। এখনও বুকে ব্যাথা করে।
মা- মাকে নিয়ে লিখতে গেলে আসলে কখনই হয়ত শেষ হবে না কেননা এই মা ডাকটা নিয়েই হয়ত অনন্তকাল ধরে লেখা যাবে। আম্মুর ছোটবেলাতে বিয়ে হয়ে যার। আর্থিক অবস্থা আমাদের চেয়ে অনেক ভাল ছিল।
কখনও হয়ত ঘরের কাজ করতে হয়নি কিন্তু আমাদের পাচঁ ভাইবোনকে কখনই বুঝতে দেয়নি সংসারে একা পরিশ্রম করাটা কতটা কঠিন। আমাদের পারিবারিক অবস্থা হঠাৎ অনেক খারাপ হয়ে যায়। আর্থিক অবস্থা এতকবারে শূন্যের কোঠায়। তখনও দেখেছি আম্মু কতটা শান্তভাবে ঠান্ডা মাথায় সংসার চালিয়েছে। আমার মনে পড়ে আমরা কিছু টাকা পেতাম আম্মুর ফুপার কাছে যেহেতু আমাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ ছিল তাই আমি আম্মু একদিন তার ফুপার কাছে টাকাগুলো চাইতে গেল টাকাতো দেয়নি বরং অনেক বেদনাদায়ক কথা বলেছে।
মা টাকা পায়নি তার জন্য কষ্ট পায়নি, কষ্ট পেয়েছিল আমি একটা নতুন সার্ট পড়ে গিয়েছিলাম সেটা দেখিয়ে তার ফুপা বলেছিল টাকার সমস্যা থাকলে ছেলেকে নতুন সার্ট পড়াস কিভাবে। আমার মনে আছে মাকে আমি সেদিন দেখেছিলাম বিষন্নভাবে যেই প্রতিচ্ছবি আমি কখনই ভুলিনি।
দাদি- ছোট থেকেই বাবার আত্নীয়দের সাথে খুব বেশি মিশার সুযোগ হয়নি কেননা দেখতাম তারা কেমন জানী কর্মাশিয়াল ভালবাসে বুঝা যায় সামনা-সামনি দেখাচ্ছে ব্যতিক্রম ছিল দাদি। সে কখনই আমাকে কৃত্রিম ভালবাসতো না মনে পড়ে দাদি প্রতি বছর আমার জন্য একটা করে মোরগ নিয়ে আসত মানত হিসেবে মিরপুর মাজারে দেওয়ার জন্য। ব্যাপারটা বেশ স্পেশাল ছিল আমার জন্য কেননা দেশের বাড়ি থেকে দাদি এসেছে মোরগ নিয়ে তাও কিনে না মোরগটাকে লালন-পালন করেছে আমার জীবনের বিনিময়ে উৎসর্গ করার জন্য আমিও একদিন মোরগটাকে পালতাম চাল-টাল খেতে দিতাম তারপর মাজারে যেয়ে ছেড়ে দিতাম।
আমি শুনেছি ছোট বেলায় একবার আমার অবস্থা খুব খারাপ ছিল মারা যাব এমন অবস্থা সেই সময় দাদি আর রহমান সূরা পড়ে আমার শরীরে ফু দিয়ে নাকি বলেছিল আল্লাহ যদি আমার নাতির জীবন ভিক্ষা দাও তাহলে ও বড় না হওয়া পর্যন্ত প্রতি বছর একটা করে মোরগ উৎসর্গ করব। আমি সুস্থ হয়ে উঠি এবং মোরগ প্রতিবছর দেওয়া হয়। দুঃথখর বিষয় আমার দাদি মারা যাওয়ার সময়ও আমি ছিলাম না মৃতুর দিন আমি জানতে পারি দাদি নেই কিন্তু আসার আগেই তাকে মাটি দেওয়া হয়।
প্রেমিকা- আমি খুব চঞ্চল ছিলাম যেহেতু সবার অনেক ভালবাসা পেয়ে বড় হয়েছি। সবার প্রেমিকা ছিল আমিও ভাবতাম আমারও প্রেমিকা প্রয়োজন কিন্তু আমার চাহিদা ছিল অন্য রকম আমার প্রেমিকা হয় আমার চেয়ে বড়, বিধবা অথবা বিধর্মী হতে হবে্।
প্লিজ কেহ খারাপ ভাববেন না। যাই হোক একদিন পেয়ে গেলাম আমার কাংখিত নারীটিকে আমায় অনেক ভালবাসত। আমার জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করেছে সমাজের সাথে লড়েছে জিতেছেও কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের মিল হয়নি কেননা আমাদের দুজনের ধর্ম ছিল ভিন্ন সাত বছর প্রেম করার পর আমরা ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নেই ভবিষ্যত পজন্মের অনেকেই হয়ত আমাদের এই সিদ্ধান্তের কারনে সমস্যায় পড়বে বিশেষ করে আমাদের ছেলে-মেয়েরা। খুব ভালো ভাবে বিদায় নেয়া হয়েছিল আমার বিশ্বাস ও সুখে আছে আমিও খারাপ নেই। ওর একটা ব্যাপার আমাকে দারুন নারা দেয় আর তা হলো ও আমার প্রতিটি বিষয়ে অনেক যত্নবান ছিল আমি ওর প্রেমিক হলেও সে আমাকে মনে হয় নবজাতক কোন শিশুর মতো আমাকে আগলে রাখত।
নারী দিবসে এদের সবাইকে বলতে চাই- ভালবাসি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।