হাড়ি-পাতিল ধোয়া বড়ই বিরক্তিকর কাজ। আগে বুয়া করে দিত। এখন নিজেরই সব করা লাগে।
যাক গে যে কথা বলতে চাচ্ছিলাম। একদিন হাড়ি-পাতিল ধুতে গিয়ে দেখি কলপাড়ে এক নতুন অতিথি এসেছেন।
এসেই মাথা দুলাচ্ছেন আনন্দে।
তাকে সুস্বাগতম জানিয়ে হাই বলতেই তিনিও এগিয়ে এলেন হ্যালো বলার জন্য।
কিন্তু তার সাথে হ্যান্ডশেক করার কোনরকম ইচ্ছা বোধ হল না। তাই তাকে ওখানেই বসিয়ে রেখে চলে এলাম। নিজের বাড়ি মনে করে বিশ্রাম নিক।
বাড়িতে আরও কিছু অতিথি আছেন যাদের যন্ত্রণায় মোটামুটি কাতর ছিলাম। রান্না করতে বসে দেখি তারা আমার বয়ামের পিছন থেকে উঁকি-ঝুকি মেরে দেখছেন কী রান্না হচ্ছে। খুন্তি দিয়ে তাড়া করতেই তিড়িং করে একটা লম্ফ দিয়ে দৌড়ে পালান, আবার একটু পর শুরু হয়ে যায় উঁকি-ঝুকি।
সেদিন দেখি আমার নতুন কিনে আনা চানাচুরের প্যাকেটের এক পাশে তেরচা করে কাটা আর প্যাকেটের অর্ধেক চানাচুর উধাও। একটু পর দেখি সেই অতিথি নিজের বাড়ি মনে করে প্যাকেট থেকে চানাচুর বের করে কুটুর কুটুর করে খাচ্ছেন।
আমি সামনে যেতেই চুপটি করে লুকিয়ে বসে থাকলেন, আমি যে দেখতে পাচ্ছি ঠিকই সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।
"এই যে মশাই, হচ্ছেটা কী", বলতেই একটু মাথা তুলে দেখল। তারপরই দৌড়ে পালাল।
ঐ চানাচুর অতিথি মশাইকে দানই করে দিলাম। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই প্যাকেট খা খা করতে থাকল।
সন্ধ্যা হতে না হতেই শুরু হয়ে যায় মশাইদের খুটুর খাটুর। সড়াৎ সড়াৎ করে বিছানার পাশ দিয়ে দৌড়ে গিয়ে আমার ঘুমেরও বারোটা বাজিয়ে দেয়।
একদিন তো এক মশাই আমার মশারীর ভেতর ঢুকে পড়ে সে কি কেলেংকারী। চারপাশ দিয়ে গোল গোল করে ৪০০ মিটার রেস শুরু করলেন, আর মাঝখানে আমি নৃত্যকলার (সেই সাথে অপেরা সঙ্গীতেরও) প্রদর্শন চালিয়ে যেতে থাকলাম। ইজ্জতের পুরাই ফালুদা বানিয়ে ছাড়ল হতচ্ছাড়া গুলো।
উনাদের জন্য এইবার একটু বিশেষ খাতিরের ব্যবস্থা না করলেই নয়।
নিয়ে এলাম বিশেষভাবে শুধু ইঁদুর মশাইদের জন্য তৈরী কেক। সে কেকের অর্ধেকটা রাখলাম রান্নাঘরে, আর বাকী অর্ধেক বেডরুমে টেবিলের নীচে। পরদিন দেখি রান্নাঘরের কেক পুরোপুরি উধাও। টেবিলের নীচেরটুকু সেইভাবেই আছে।
দুই দিন ওভাবেই পড়ে রইল ঐটুকু। এই টুকরাটা কি মশাইরা একটু চেখেও দেখবেন না? কেকের জায়গা পরিবর্তন করে দিলাম। বিছানার পাশে উনাদের দৌড়াদৌড়ির জায়গায় রেখে দিলাম। এইবার কিছু কাজ হল। প্রতিদিন একটু একটু করে কমতে থাকল।
তিন-চারদিনের মধ্যে পুরোটুকু উধাও।
দেখা যাক এখন সময়মত মশাইরাও উধাও হন কি না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।