আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একি বললেন বিএনপি'র সাবেক মন্ত্রী শাজাহান সিরাজ!

Hope is immortal

বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এবং সাবেক মন্ত্রী শাজাহান সিরাজ বলেছেন, বিএনপি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক। তারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি। এ দল যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে কাজ করছে। এ জন্য বিএনপির রাজনীতি থেকে তিনি দূরে সরে গেছেন। এ দল করা তার ভুল ছিল।

এ 'অপরাধে' প্রয়োজন হলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইবেন তিনি। তার দাবি, জিয়াউর রহমান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেউই স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। তিনি যে ইশতেহার পাঠ করেছিলেন, সেটিই স্বাধীনতার ঘোষণা। তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন, তাদের নিয়ে তিনি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান। সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।

গতকাল সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। দীর্ঘদিন নিশ্চুপ থাকার পর হঠাৎ দু'দলের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে সমকালের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন তিনি। শাজাহান সিরাজ বলেন, একটি ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এ দলের রাজনীতি করেন এমন মুক্তিযোদ্ধাদের ভালো পথে নিতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ক্ষমতার লোভে দলের মুক্তিযোদ্ধারাও পথভ্রষ্ট হয়েছেন। মনের দুঃখে এতদিন এসব কথা বলেননি। এখন তিনি অনুতপ্ত। বিএনপির রাজনীতি করা তার ভুল ছিল।

এ দল করার চেয়ে মৃত্যু হওয়া ভালো। তিনি বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক দল নয়। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াই গণতন্ত্র বিশ্বাস করেন না। ক্ষমতায় গিয়ে তিনি আরও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিলেন। যার খেসারত তাদের দিতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এ দল লাইনচ্যুত। কোনোভাবেই এ দলকে 'লাইনে' আনা সম্ভব নয়। বিএনপি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক। তার ধারণা, রাজনীতির জন্য সামনে আরও কঠিন সময় আসছে। এবার ওয়ান-ইলেভেনের চেয়েও ভয়াবহ কিছু হবে।

রাজনৈতিক দলগুলো এখনও তা টের পাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে আবার ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে। আর বিএনপি বিরোধী দলে থেকে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর। স্বাধীনতার এই ইশতেহার পাঠক বলেন, জনগণ দু'দলকে চিনতে পেরেছে। তারা ধোঁকা খাবে না।

তারা সবই বুঝতে পারছে। শুধু সময়ের অপেক্ষায় আছে। সময় হলেই তারা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে। তিনি জানান, রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে সব মুক্তিযোদ্ধাকে এক হতে হবে। দেশকে স্বাধীনতার চেতনায় গড়ে তুলতে তিনি উদ্যোগ নিচ্ছেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। জনগণের চাহিদার প্রতিফলন ঘটাতে পারে এমন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন। শাজাহান সিরাজ বলেন, তিনি বিএনপিতে পদ চাননি। দলের জাতীয় কাউন্সিলে যাননি। তাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

এ দল করার যে ইচ্ছা তার নেই, তা দলকে আকারে-ইঙ্গিতে জানিয়েছেন। তাই তাকে পদ দেওয়া হয়নি। এতে কোনো দুঃখ নেই তার। কারণ তিনি মন্ত্রিত্বের জন্য তদবির করেননি। তাকে খালেদা জিয়াই মন্ত্রী বানিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপিতে অনেক নেতাই আছেন, যারা এ দল করতে চাচ্ছেন না। ওই নেতারা তার সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানিয়েছেন। এটি বিএনপির জন্য সিগন্যাল। তার মতে, ওয়ান-ইলেভেন থেকে শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার কোনো শিক্ষা হয়নি। তারা বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হননি।

বরং আরও স্বৌরাচারী হয়ে উঠেছেন। সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া উচিত। অন্যথায় জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে না। বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করছে। তারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে চায়।

জামায়াতের সঙ্গে জোট করে বিএনপি কলুষিত হয়ে গেছে। তারেক রহমানের বিএনপির নেতৃত্বে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারেক রহমানকে এত তাড়াতাড়ি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা ঠিক হয়নি। তার রাজনৈতিক জ্ঞান কম। তাকে তৈরি করে রাজনীতিতে আনা উচিত ছিল। তিনি বলেন, 'আমি বিএনপির নীতিনির্ধারক ছিলাম না।

নীতিনির্ধারণী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমার সঙ্গে আলোচনা করত না। তাই বিএনপি আমলে যেসব অপকর্ম হয়েছে, তার দায়ভারের অংশীদার আমি নই। যারা বিএনপির সর্বনাশ করেছে, তারা এখনও খালেদা জিয়ার আশপাশে রয়েছে। এসব লোক উঠতে-বসতে খালেদা জিয়াকে গালি দিত। তারাই এখন খালেদা জিয়ার কাছের লোক।

' এক প্রশ্নের জবাবে শাজাহান সিরাজ বলেন, শায়খ আবদুর রহমান এবং বাংলাভাই কাদের সৃষ্টি তা সবাই জানে। নতুন করে বলতে হবে না। ১০ ট্রাক অস্ত্র আনার সঙ্গে কারা জড়িত, তাও স্পষ্ট। কিন্তু এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করার মতো ক্ষমতা তার ছিল না। তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও ক্ষমতাহীন ছিলেন।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। ৩ মার্চ সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। তার (খালেদা জিয়া) ধারণা, জিয়া একাই দেশ স্বাধীন করেছেন। বাস্তবতা হলো, স্বাধীনতা সংগ্রামে জিয়ার কোনো অবদান ছিল না। আন্দোলনের আগে এবং পরে কখনোই জিয়া ছিলেন না।

তবে তার ঘোষণা জনগণকে অনুপ্রাণিত করেছে। এর বেশি কিছু নয়। তাই বলে তার ওই 'বক্তব্য' স্বাধীনতার ঘোষণা নয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক। তাকে সামনে রেখে তারা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন।

বঙ্গবন্ধুও স্বাধীনতার ঘোষক নন। ৩ মার্চ তিনি (শাজাহান সিরাজ) যে ইশতেহার পাঠ করেছেন, সেটি স্বাধীনতার ঘোষণা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তা স্বীকার করে না। উভয় দলই মনে করে, তারাই স্বাধীনতার একমাত্র দাবিদার। যারা জয় বাংলা এবং বঙ্গবন্ধু স্বীকার করত না, তারাই আজ আওয়ামী লীগের বড় নেতা।

বিএনপি করার চেয়ে মৃত্যুও ভালো

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।