দিনের শুরুতে : চোখ খুলেই চিনি দিয়ে চা খাওয়া বন্ধ করুন। প্রয়োজনে মিষ্টির জন্য সুইটনার চলতে পারে। চায়ের বদলে অল্প গরম পানিতে লেবু চিপে খেতে পারেন। ওজন বাড়াতে না চাইলে নিয়মিত ব্রেকফাস্ট ছেড়ে সকালের খাবারে রাখুন ৫০ গ্রামের মতো হুইট ফ্লেঙ্। ওটস-ও খেতে পারেন সঙ্গে দু'একটি ফল।
প্রতিবার অল্প করে খান : মাথায় রাখুন আপনি যেখানেই যাবেন অল্প করে খাবেন। একটু একটু করে খান। দিনে চারবারের পরিবর্তে ছয়বার খান। যেমন সারাদিনে ২০০০ ক্যালরি খাওয়ার কথা থাকলে প্রতিবার ৪০০ ক্যালরি করে ৫ বার খাবেন। দুপুরে হালকা কিছু খেয়ে বিকাল ডটার আগে খেতে পারেন ফ্রুটস সালাদ বা খোসাসহ দু'একটি ফল।
ফলের রস খাবেন না। গোটা ফলই বেশি উপকারী। দাওয়াত থাকলে ঘরে কম করে খাবেন। শুরু করুন এক গ্লাস পানি দিয়ে। দেখবেন খাই খাই ভাবটা আর থাকছে না।
এরপর নজর দিন সালাদের দিকে। সবজির আইটেম থাকলে অবশ্যই খাবেন। খাবার শেষে অবশ্যই বোরহানি কিংবা টকদই থাকবে। হাতের কাছেই রাখবেন শসা, টমেটো, গাজর। প্রচুর ফল খাবেন।
পানি খাবেন অন্তত ১২ গ্লাস। পানি ওজন কমায়। চর্বি যাতে শরীরে শোষিত না হয় সে জন্য খাবার গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে সালাদ এবং শেষে টকদই বা বোরহানি খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া মাংস খাবার পরপর কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে নিলেও শরীরে চর্বি জমার প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়। রাতের খাবার শেষ করবেন ৯টার মধ্যে।
খাওয়ার পর ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। আধা ঘণ্টা হেঁটে তারপর ঘুমাতে যান।
দই রাখুন ঈদে : উৎসবের মেন্যুতে দই একটি অনন্য খাবার। তাই খাবার তৈরিতে এবং খাবার শেষে নানা কারণে উপকারী। সম্প্রতি আলোচিত প্রোবায়োটিঙ্রে মধ্যে দই অন্যতম।
প্রাবায়োটিঙ্ হচ্ছে এক ধরনের জীবিত জীবাণু, যা পরিমিত মাত্রায় শরীরের অনেক উপকার করে। দইয়ের মধ্যে থাকে সেরকম একটি প্রোবায়োটিঙ্। যার নাম ল্যাকটিক এসিড ব্যাকটেরিয়া বা সংক্ষেপে ল্যাব। এই ল্যাব কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ থেকে শুরু করে হজমের সুবিধাসহ শরীরের অনেক উপকার করে। 'মিট টেন্ডারাইজার' হিসেবে দই পাশর্্বপ্রতিক্রিয়াহীন।
এ কারণে মাংস মেরিনেট করতে দইয়ের ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকর। সালাদেও দই ব্যবহারে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। উৎসবে এলোমেলো খাওয়ার ফলে পেটের গোলযোগ সারাতে কিংবা দ্রুত ডায়রিয়া সারাতে দই গ্রহণ করা যেতে পারে। যাদের দুধ হজমে সমস্যা তারা অনায়াসে দইকে বেছে নিতে পারেন। পোলাও-মাংস খাওয়ার পর দই খাওয়ার উপকার অনেক।
দই মাংস হজমে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ : কিডনির এনজিওটেনসিন কনর্ভাটিং এনজাইমের কার্যকারিতাকে কমানোর মাধ্যমে রক্তচাপ কমাতে কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পারে দই। কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতেও দই উপকারী। ঈদের এই ভোজনের আয়োজনে সবার জন্য তো বটেই, এমনকি যারা উচ্চ কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপ কিংবা মেদাধিক্যে ভুগছেন তাদের বেলায়ও খাবারের পর দই কিংবা বোরহানি উপকারে আসবে।
সালাদ মাস্ট : ঈদের তুমুল পোলাও মাংসের আয়োজনে কোলেস্টেরল যাতে শরীরে ঢুকতে না পারে আর খাবার খেয়ে কোষ্ঠকাঠিন্যও যাতে না হয় সে জন্য খাবারের সঙ্গে সঙ্গে নজর দিন সালাদে।
শসা, টমেটো, নুন, লেবু সহযোগে এক বাটি সালাদ যেন প্রতিবারের খাবারে থাকে। খিদে মিটবে, ওজন কমবে, শরীরে ঢুকবে না ক্ষতিকর কোলেস্টেরল। পোলাও, বিরিয়ানি এবং মাংস খাওয়ার পাশাপাশি সালাদ গ্রহণ করা উচিত। কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন এমন সবার
জন্য সালাদ ওষুধের মতো কাজ করবে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।