রাতমজুর কামলা একদা গভীর উদ্বেগ নিয়া স্ট্যাটাসাইল:
" টেমশনে আছি, একজনে আমারে জিগাইছে ভ্যালেন্টাইন ডে তে প্রোগ্রাম কি, আমি কইছি বাসায় বইসা মুভি, খাওন আর ঘুম। হেতে কৈল হেতে নাকি প্রোগ্রাম বদলাইবো আমার, ডরে আছি ব্যাপক। এই মাইয়ারে আমি ব্যাপক ডর খাই "
জনগন হুমড়ি খাইয়া পড়িল, হুড়মুড় করিয়া কমেন্টাইল। আম জনতার একজন হিসেবে আমিও ভীড় ভাট্টা দেখিয়া আগাইলাম, অনেক সাহস সঞ্চয় করিয়া একখানা কমেন্টাইলাম -
" ইয়া ভগবান!! তুমি আমার কাছে এইরকম একজন কাউরে পাঠাও। এই ভ্যালেন্টাইনও আমারে মুভি, খাওন আর ঘুম প্রোগ্রাম ঠিক করা লাগছে ।
হে ভগবান হে ভগবান ... তাড়াতাড়ি... ভ্যালেন্টাইন ডে কিন্তু গতবছরের মতো এবছরো ১৪ ফেব্রুয়ারীতে ..."
জনগনের একাংশ এইবার আমার উপর ঝাপায়া পড়িল। তাহারা লাইকায়িত করিতে লাগিল। ছয়জনকে সামলাইলাম সাফল্যের সহিত। দুইদিন লাগিল সামলাইতে, এই দুইদিনে লোভের জিহবা লকলক করিয়া বাড়িল। অত:পর, সেই কমেন্টখানাকে স্ট্যাটাসের মর্যাদা দান করিলাম -
" হে ভগবান .... হে ভগবান .... বিগত বছরগুলোর মত এ বছরো ভ্যালেন্টাইন ডে'র প্রোগ্রাম হলো - খাওয়া, ঘুম আর মুভি দেখা .... হে ভগবান ... কাউকে পাঠাও ভগবান প্লিজ ... তাড়াতাড়ি... গত বছরের মতো এ বছরও কিন্তু ভ্যালেন্টাইন ১৪ ফেব্রুয়ারী .. দ্রুত দ্রুত "
এইবারও সামলানো গেল না, ২৯ জন বন্ধুবান্ধব ঝাপায়া পড়িল।
ইহাদের উল্লেখযোগ্য অংশ নারী কিন্তু তাহারা কেহই সিঙ্গল নহে এবং সকলেই আমার স্ট্যাটাসকেই ভালোবাসিল, আমাকে নহে। কোন এক বার্তবাহক জানাইল, পাঠানো হৈয়াসে, তবে ঢাবির জগন্নাথ হলে
মাথায় বজ্রপাত হৈলো, ভগবান জগন্নাথ হলে কেন পাঠাইলেন? আস্তাগফিরুল্লাহ। তাই প্রার্থনায় সামান্য সংশোধনী যুক্ত করিতে হৈলো ..
" ওহ হো, হে ভগবান, সামান্য ভুল হয়ে গেছে .... জগন্নাথ হলে পাঠাইও না, ওটা ছেলেদের হল ...শামসুন্নাহার হল তার একটু পাশেই ..."
স্ট্যাটাসের এই জোর দেখিয়া ঘুমরাজ ও সামলাইতে পারিল না, অনুমতি লৈয়া কপি-পেস্ট মারিল। ১৮ জনে লাইকাইত করিলেও তাহার বরাত বোধহয় ততটা ভালো ছিল না। কোথাকার কোন উতকট বন্ধু তাহার থলের বেড়াল বাহির করিয়া দেবার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাইলে তিনি সাফল্যের সহিত মোকাবেলা করিলেন।
এইবার বৃহস্পতি কপি-পেস্ট করত: তাহার স্ট্যাটাস বৃদ্ধি করিবার চেষ্টা চালাইলেন। তাহার বরাত ততোধিক খারাপ হৈলো, মাত্র ৯ জনে আসিয়া তাহাকে নয়, বরঙ তাহার স্ট্যাটাসকে ভালোবাসিয়া গেল।
এইভাবে তো চলিতে দেয়া যায় না, সুতরাং বুদ্ধি বাহির করিতে হৈলো। ভগবানের কাছে গণদোয়ার আয়োজন করিতে হৈলো। সময় ব্যয় করিয়া খুলিতে হৈলো একখানা ফ্যানপেজ যদি এইবার ভগবান নজর দেন অভাগাদের দিকে।
তিনি এখন পর্যন্ত চাহিয়া দেখেন নাই। বোধহয় আরও জনসমাগমের অপেক্ষায় আছেন।
আপনারা চুপ করিয়া দেখিতেসেন কি? তাড়াতাড়ি আসুন, ভগবানের দরবারে প্রার্থনা করিবার এই পত্রে স্বাক্ষর করিয়া যান - জানেনই তো, ভগবান যখন দেন, তখন পাত্র উপুড় করিয়াই দেন, সুতরাং দিলে আপনিও ভাগ পাইবেন
ঝাপায়া পড়ুন, স্ট্যাটাস কপি পেস্ট মারুন, অনুমতির জন্য দেয়ালে লিখিলেই চলিবে, লাইকায়িত করিয়া আরও জনগনকে এই গনদোয়ায় যোগ দিবার সুযোগ দিন :
হে ভগবান, ১৪ তারিখের আগেই ১টা ভ্যালেন্টাইন পাঠাও ভগবান প্লিজ, দ্রুত দ্রুত
দুইটা ফা্ও পেজ:
দারাশিকোব্লগ
কেউ কেউ ব্যাকবেঞ্চার, আমি ব্যাকবেঞ্চেষ্ট
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।