লজ্জা আর ভয়,এ দু'টো জিনিসই ভালোবাসার প্রধান শত্রু। সব সময় দু'জনে তৃষার্ত হয়ে থাকে একটু দেখার জন্য,একটু ছোয়ার জন্য,কাছাকাছি বসে একটু কথা বলার জন্য- আর কেউ এতে বাধা দিচ্ছেও না। যত বাধা এই লজ্জা আর ভয়। হিমি হাসতে হাসতে আমাকে বলল,তোমার সব প্রেমিকাদের এত তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যায় কেন?আমি অবাক হয়ে বললাম,তার মানে?হিমি আগের মতোই হেসে হেসে বলল,তোমার প্রেমিকাদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যায় কিন্তু তোমাকে কেউ তারা বিয়ে করতে চায় না কেন?আমি হো হো করে হেসে সিগারেটে জোরে টান দিলাম। আসলে বাইশ থেকে বত্রিশ বছর সময়টা হচ্ছে সবচেয়ে চমৎকার সময়।
এই সময়ে সেক্স জিনিসটা সবচেয়ে বেশি উপভোগ করা যায়,কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ ছেলেমেয়েরাই এই সময়টা নষ্ট করে। আবার এমনও হতে পারে হয়তো তারা সুযোগ পায় না। পড়াশোনা শেষ না করে চাকরি বাকরি না পেলে কেউ বিয়ে করতে পারে না। কিন্তু পড়াশোনা কিংবা চাকরির সাথে সেক্সের সম্পর্ক কি?দু'জন মিলে যদি কোনো একটা বিশেষ কাজ করে আনন্দ পায় এবং তাতে যদি অন্য কারো কোনও ক্ষতি না হয় তাহলে সেটা কিছুতেই খারাপ কাজ হতে পারে না।
আচ্ছা,কোনো মানুষ কি শুধু একজনকে ভালোবেসে বেঁচে থাকতে পারে?অনেকদিন আগে হিমি আমাকে বলেছিল,'তুমি জানো,তোমার হাত ছুঁয়ে আমি কখনো মিথ্যা বলি না।
' আমি বললাম,আমার চেয়ে আর কেউ বেশি চেনে না তোমাকে। একটু ভালো করে লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে,হিমির পা পৃথিবীর মাটি ছোঁয় না। এই ধুলোবালির নোংরা পৃথিবী থেকে কয়েক আঙুল উঁচুতে সে থাকে। যেন,হিমি অন্য গ্রহ থেকে পৃথিবীতে কিছুদিনের জন্য বেড়াতে এসেছে। সম্পূর্ন অপ্রত্যাশিত সব জায়গায় হিমির সাথে আমার বার বার দেখা হয়েছে।
আজও দেখা হলো,লাল সিল্কের শাড়িতে হিমিকে খুবই সুন্দর,প্রায় অপার্থিব লাগছিল- আমার কাছে সে হিমি বলল,একি তোমার জামার মাঝখানের বোতামটা লাগাও নি কেন?অবলীলায় হিমি আমার বুকের খুব কাছে দাঁড়িয়ে বোতাম লাগিয়ে দিল।
হিমিদের বাড়িতে আমি কখনও যাইনি। যাইনি কারন- যদি হিমির বাড়িতে গিয়ে আমি দস্যু হয়ে উঠি। আজ ভোরে স্বপ্নে দেখলাম,হিমি আয়নার সামনে, দাঁতে ফিতে কামড়ে চুল বাঁধছিল। আমি হিমির পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
হিমি আমার দিকে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে- কিন্তু আয়নার মধ্যে আমরা দু'জন দু'জনকে দেখছিলাম- আমরা দু'জনে একই দিকে তাকিয়ে- অথচ দু'জনকে আমরা পরস্পর দেখতে পাচ্ছি- হিমির আঁচল টা বুক থেকে খসে পড়বো পড়বো-অথচ খসে পড়ছে না। কি এক অসম্ভব কায়দায় হিমি দু'টি মাত্র হাতে চুল,চুলের ফিতে,চিরুনি এবং আঁচল সামলাচ্ছে-চোখে দুষ্ট দুষ্ট হাসি।
আজ অফিসের জি এম আমাকে তার ঘরে ডেকে বললেন,তুমি তো বিয়ে করনি,সুন্দর বিকেল গুলো কাটাও কি করে?অফিসের জি এম-এর মুখে এরকম প্রশ্ন আশা করিনি। (এই,জি এম হচ্ছেন আমার বাবা। মোঃ মেহের হোসেন খান।
)সামান্য হেসে বললাম,বাসায় ফিরে চা টা খেয়ে,বইটই পড়ি,গান শুনি,কম্পিউটারে গেমস খেলি।
আজ সকালে মিরপুর যাওয়ার পথে হঠাৎ মনে হলো,আমি হিমির যোগ্য নই। ...আমি হিমির যোগ্য নই। আমি ওপরে ওঠার বদলে দিন দিন আরও নিচে নেমে যাচ্ছি। ইদানিং আকাশের দিকে তাকালেই আমার হিমির কথা মনে পড়ে।
এজন্য আমি আজকাল আকাশের দিকে পারত পক্ষে আকাশের দিকে তাকাই না। কিন্তু মজাত ব্যাপার হলো- হিমির সাথে দেখা হলেই- হিমির শরীরের এক একটা অংশ আমার এক একদিন নতুন করে ভালো লাগে। আজ চোখে পড়লো,ওর পা দু'টো। সোনালি রঙের পেন্সিল হিল জুতোটিতে বার্মিজ নকশা করা। কি সুন্দর পা দু'টো-মৃসন নরম।
এ পৃথিবীতে হিমিই একমাত্র মেয়ে, এই ধুলো-মলিন রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলেও যার পায়ে এক ছিটে ধুলো লাগে না। মনে হলো,হিমির ঐ পা দু'খানি হাতের মুঠোয় নিয়ে গন্ধ শুকলে আমি বেলি ফুলের গন্ধ পাবো।
আমি খুব শ্রীঘই চলে যাবো নীলগিরি পাহাড়ে। সেখানে একটা ছোট বাড়ি বানাবো,আমার অনেক দিনের সখ। আর কারো দাসত্ব করতে হবে না,কারো কাছে মাথা নোয়াতে হবে না।
সেখানে জমি কিন এটেল মাটিতে ফসল ফলাবো,সমুদ্রে মাছ ধরব। জল-কাদার মধ্যে পরিশ্রম করবো। জেলে ডিঙ্গি নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে চলে যাবো,ঝড়-বাদল তুচ্ছ করে।
মনের মধ্যে আমার দারুন এক অস্বস্থি সব-সময়। তাই আমি আজকাল কোনো আড্ডাতে যোগ দেই না।
এই তীব্র অস্বস্থিরতার কারণে,ইদানিং খুব এল এস ডি আর ইয়াবা খেতে ইচ্ছা করে। যদি তাতে মনের অস্বস্থি কমে। আমি খুব কঠিন পুরুষ,জীবনে অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করেছি,অনেক নিষ্ঠুর নির্দয় ব্যবহার পেয়েছি কিন্তু কখনও আমার চোখে জল আসেনি।
(এই লেখাটার নাম দিতে চেয়েছিলাম- "চাঁদের নিজের কোনো আলো নেই" কি মনে করে হঠাৎ নাম দিয়ে বসলাম "বলব কথা বাসর ঘরে"। একটা বাংলা সিনেমার নাম।
একদিন রাস্তায় পোষ্টার দেখেছিলাম। হাঃ হাঃ হাঃ)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।