কিশোরী হেনা ধর্ষণের শিকার হয়ে যে শারীরিক ও মানসিক আঘাত পেয়েছিল, তার প্রতিকারের বদলে এমন বর্বর শাস্তির মুখোমুখি হয়েছে, যা সহ্য করে বেঁচে থাকা ১৪ বছরের কোমল কিশোরীর পক্ষে আর সম্ভব হয়নি।
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চামটা গ্রামের গরিব কৃষক দরবেশ খাঁর কিশোরী মেয়ে হেনাকে ধর্ষণ করেছিল তার চাচাতো ভাই মাহাবুব। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, মাদ্রাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম—গণমান্য এই ব্যক্তিদের বিচারে ধর্ষণের ঘটনাটি শুধু ধর্ষকের অপরাধ বলে বিবেচিত হয়নি, ধর্ষিতাকেও তাঁরা অপরাধী সাব্যস্ত করে দোররা মারার আদেশ দিয়েছেন। ১৪ বছরের কিশোরী ১০০টি দোররার আঘাত সইতে পারেনি, ৭০টি আঘাতেই জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েছে। চিকিৎসার জন্য হেনাকে নড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলেও চিকিৎসকেরা তাকে বাঁচাতে পারেননি।
ধষর্ণের পর হেনার প্রয়োজন ছিল শারীরিক চিকিৎসা ও মানসিক সমর্থন-সহযোগিতা, কিন্তু তাকে হত্যা করা হলো। এ দেশের গ্রামগঞ্জে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। দোররা মারার আদেশ যাঁরা দিয়েছেন, তাঁরা স্থানীয়ভাবে গণ্যমান্য ও প্রভাবশালী। তাঁদের অজানা থাকার কথা নয়, সালিস বৈঠকের নামে নারীদের ওপর এ ধরনের নির্যাতন চালানো আইনত অপরাধ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠোর বিধান আছে।
কিন্তু তাঁরা সে আইনকে পাশ কাটিয়ে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে সালিস বৈঠকের নামে এমন সব বিচার করেন, যা সাধারণত প্রভাবশালী অপরাধীদের বাঁচিয়ে দিয়ে বা লঘু শাস্তি দিয়ে দুর্বলের ওপর নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের ফলে মৃত্যু না হলে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে মেয়েদের এমন দোররা মারার ঘটনাকে অপরাধ বলে মনে করে না অনেক মানুষ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থারও টনক নড়ে কেবল মৃত্যুর মতো বড় ঘটনার পরে।
সুত্র: প্রথমআলো
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।