শূন্য হৃদয়ে ডঙ্কা বাজে এ কিসের, জানো কি হে!
'' যুদ্ধ ও ভালোবাসার কাহিনী নিয়ে তরুণ পরিচালক রুবাইয়াত হোসেনের চলচ্চিত্র ‘মেহেরজান’ মুক্তি পায় গত ২১ জানুয়ারি। ছবিটি পরিবেশনায় ছিল আশীর্বাদ চলচ্চিত্র। ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স, বলাকা ও অভিসার, যশোরের মণিহার, রাজশাহীর রাজতিলক এবং খুলনার সঙ্গীতায় একযোগে ছবিটির প্রদর্শনী চলছিল।
এসব সিনেমা হলে ছবিটি দ্বিতীয় সপ্তাহ প্রদর্শনেরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সপ্তাহ পূর্ণ করার আগেই ছবিটির প্রদর্শনী বন্ধ হয়ে গেছে।
আশীর্বাদ চলচ্চিত্র ‘মেহেরজান’ পরিবেশনায় অপারগতার কথা জানিয়ে ছবির প্রিন্ট সব কটি প্রেক্ষাগৃহ থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
‘মেহেরজান’ মুক্তির পরপরই একে নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক, আলোচনা ও সমালোচনা। একজন পাকিস্তানি সৈন্যের সঙ্গে বাঙালি মেয়ের প্রেম, পাকিস্তানি সৈন্যের প্রতি সহানুভূতি, মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করে দেখাসহ নানা অভিযোগ ওঠে ছবিটির বিরুদ্ধে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব কারণেই ছবিটিকে প্রোগৃহে পরিবেশনের দায়িত্ব পালন করবে না বলে আশীর্বাদ চলচ্চিত্র সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও আশীর্বাদ চলচ্চিত্রের স্বত্বাধিকারী হাবিবুর রহমান খান জানিয়েছেন, ছবিটি ভালো না চলার কারণেই প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে।
বাংলানিউজ এ প্রসঙ্গে জানার জন্য যোগাযোগ করে ছবির পরিচালক রুবাইয়াত হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এটি যুদ্ধের প্রোপটে নির্মিত মূলত ভালোবাসার গল্প, এখানে দেখানো হয়েছে যুদ্ধের নৃশংসতা ও হানাহানি ভালোবাসার মাধ্যমে অতিক্রম করে শান্তি ও সহমর্মিতার পথ উন্মোচন করা যায়। ছবিটি না চলার অভিযোগ মোটেও ঠিক নয়। দর্শকরা ‘মেহেরজান’ বেশ আগ্রহের সঙ্গেই দেখছিলেন। টিকেট অগ্রিম বিক্রি হয়ে যাওয়া তারই প্রমাণ বহন করে।
রুবাইয়াত হোসেন এ বিষয়ে তার নিজের ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এরা মোশন পিকচার্সের একটি লিখিত বক্তব্য বাংলানিউজে প্রেরণ করেন। বক্তব্যটি হুবহু তুলে ধরা হলো :
‘সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মেহেরজান’ চলচ্চিত্রকে এর পরিবেশক আশীর্বাদ চলচ্চিত্র বিনা নোটিশে নামিয়ে নিয়েছেন। যদিও এর ব্যাপক দর্শক চাহিদা ছিল। বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্সে আজকের সমস্ত টিকেট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। বহু দর্শক আজ টিকেট কেটেও ছবিটি না দেখে ফিরে গেছেন।
উল্লেখ্য এই ছবির পরিচালক বা প্রযোজনা সংস্থা এরা মোশান পিকচার্সের কোনোপ্রকার মৌখিক ও লিখিত অনুমতি ছাড়াই এককভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশে ছবিটি পরিবেশনার দায়িত্বে চুক্তিবদ্ধ আশীর্বাদ চলচ্চিত্র। অনুমান করি, তারা এই ছবি নিয়ে উদ্ভূত কিছু বির্তক ও চাপে নিরূপায় হয়ে সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন। একটি শৈল্পিক কাজের ত্রুটি-বিচ্যুতি শৈল্পিকভাবে চিিহ্নত না করে মুষ্ঠিমেয় জনমতকে অপপ্রচারে উৎসাহিত করার মাধ্যমে নস্যাৎ করার এহেন চর্চা আপামর শিল্পী-সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবী সবার জন্যই অশুভ ইঙ্গিতবাহী। বাংলাদেশ সুস্থ ধারার বিনোদনমূলক ছবির অপ্রতুলতার মধ্যে ‘মেহেরজান’-এর মতো সপরিবারে উপভোগযোগ্য একটি নির্মল ছবি দেখা থেকে দর্শকদের বঞ্চিত করার কারণে এবং দর্শককেই সিনেমাটি দেখে ভালো মন্দ বিচারের সুযোগ না দেওয়ার কারণে আমরা বিশেষভাবে আশাহত (সংশ্লিষ্ট সকল কলাকুশলীর পক্ষে প্রযোজক, এরা মোশান পিকচার্স)। ’
‘মেহেরজান’ পরিবেশনায় অপারগতা প্রদর্শনের পেছনে কোনো ধরনের চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে আশীর্বাদ চলচ্চিত্রের স্বত্বাধিকারী হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি পুরোপুরিই ব্যবসায়িক।
এর পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই। ছবিতে যদি মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের পরিপন্থি বা আপত্তিকর কিছু থাকতো তাহলে সেন্সর বোর্ড থেকে নিশ্চয়ই ছাড়পত্র পেতো না। সেন্সর বোর্ড ছাড়পত্র দিয়েছে বলেই ছবিটি রিলিজ পেয়েছে। কিন্তু ছবিটি চলেনি তাই নামিয়ে ফেলা হয়েছে। স্টার সিনেপ্লেক্সে ছবির টিকেট অগ্রিম বিক্রি হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এক সিনেপ্লেক্সের অবস্থান দিয়ে তো দেশের অন্য সিনেমা হলগুলোর অবস্থা বিচার করা যায় না।
একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, তথ্য মন্ত্রণালয় ও চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের বিশেষ অনুরোধেই ‘মেহেরজান’ চলচ্চিত্রটি পরিবেশনার দায়িত্ব পালনে অপারগতার কথা জানিয়েছে আশীর্বাদ চলচ্চিত্র। তবে এ বিষয়ে সেন্সর বোর্ডের একাধিক কর্মকতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি। '''
মূল সূত্র ও পুরো সংবাদ View this link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।