মানুষ ৩ রকম, ১। আগুনে পুড়ে যায়, ২। আগুনে গলে যায়, ৩। আগুনে ঋদ্ধ হয়
ভীর-জারা সিনামার preview দেখাত, একটা পুরাতন মহল মত জয়গায় প্রীতি জিন্টা কালো একটা কামিজ পরা, শাহরুখ প্রীতিরে জড়ায় ধরে রাখসে প্রীতিও তার ছাড়তে চাচ্ছে না, তার ওড়না বাতাসে উড়তেসে কি একটা সুর বাজত আর লেখা আসত "VEER-ZAARA"
ছবির promo দেইখা বড় বোনরে কইলাম প্রেম কাহিনী, "লাইলী মজনু" টাইপ কিছু।
আমার বড় বোন গত একবছর যাবত সিডনী প্রবাসী, আমারও ইদানিং টিভি দেখা কম পরে।
সেদিন বারডেমের সামনে পোষ্টার দেখলাম জয়া বাচ্চনের কানের পাশে গোলাপি কাঠগোলাপ গুজা উপরে লেখা "মেহেরজান" আমি ভাবলাম উমরাওজান টাইপ কিছু হবে। পাশ দিয়া কিছু সুন্দর পিঠখোলা জামা পরা ডানাকাটা পরী আর বুক খোলা ছেলে দেখা যায়।
একে একে মানুষজন মুভি দেইখা আসে আমি তাদের মুখের কথা শুইনাই এই লেখা লেখতেসি, ভুল ত্রুটি যা হয় আমার। মানুষ জনের না।
ভীর-জারা সিনেমার মেসেজটা ওই মুহূর্তে ভারত আর পাকিস্থানের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির হিসাবে খুব উপযুক্ত একটা মেসেজ ছিল।
"অনেক যুদ্ধ হইসে, এখন একটু ভালবাসা-বাসি হোক। "
তাও কিছু বৈষম্য ছিল। ভারতীয় মাত্রই খুব হদয়বান আর পাকিস্থানি মাত্রই ছোটলোক লোভী এমনটা ভারত দেখাইসিলো, আমরার রুবাইয়্যাত আফা উলটা নিজেগোই ছোট রাইখা পাকিস্থানি সেনাগো উপ্রে উঠাইসে.......
প্রেক্ষাপট তুলনা করলে, কাটাতারের বেড়ার এইপাশে ঐ পাশে আমাদের সাথে যেমন পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালীদের একটা হৃদ্যতা (সেটা সামনে যতই মিঠা কথা আর পিছনে বাঁশ মারা হোক) দেখা যায়, পকিস্থানেও সেরকম কিছু ব্যাপার আছে। পাকিস্থানেও কিছু পাঞ্জাবী-পাঠান রয়ে গেছে তারা মুসলিম, জারা সেই গোত্রের মেয়ে। ভীর সমগোত্রীয় হিন্দু তাই ব্যাপারটা অনেকটা মুর্গী ঝোলে মুর্গীর মাংস পরার মত।
কিন্তু মেহের আর ওয়াসিমের প্রেম হচ্ছে দুধলাউ এর মধ্য মুর্গীর ঝালমাংস দিয়ে দেবার মত, রুব্যাইয়াত আপা নিশ্চয়ই এই দুই জিনিশ একসাথে মিলায় খেতে পারবেন না। আমরাও পারতেসি না।
ভারত-পাকিস্থানের যুদ্ধটা সীমান্তে হয় কখনোই পুরা পাকিস্থান কাইচা সব সৈন্য অস্ত্রাগারে যত অস্ত্র ছিল তা দিয়া ভারতের উপর ঝাপায় পড়ে নাই। ভারতের প্রতিটা ঘরে ঘরে ঢুইকা মেয়ে লেবেল আছে দেইখাই ঝাপায় পড়ে নাই, কোন ভারতীয় মেয়েকে উলংগ অবস্থায় পাকিস্থানি সৈন্যদের বাংকার থেকে বের করা হয় নাই, ভারত বছরের পর বছর ধরে অর্থনৈতিক বৈষ্যমের শিকারও না। এই জিনিশগুলা পাকিস্থান আমাদের সাথে করসে, কাজেই ভারতের পক্ষে পাকিস্থানকে ভালবাসা যত সোজা আমাদের জন্য সেটা না।
আমার জানা ছিল বাড়ির মেয়ে হচ্ছে বাড়ির সম্মান সেটা নিয়া খেলা করতে নাই। ভীর জারায় ভারতীয়রাও সেটা করে নাই। তারা বাড়ির ছেলেরে আগায় দিসিলো অন্যের বাড়ির মেয়ে ভাগায় আনতে। তিরিশ বছর পরের যে দৃশ্য ছিল এমনকি সেখানেও একটা পাল্টী ঘটনা গোছের কিছু দেখায় নাই। পাকিস্থানি মেয়ের চওড়া পিঠ দেখাইসে, ডীপকাট জামা দেখাইসে, যা ৩০ বছর পরের মেয়ে সামিয়া রূপী রাণী মুখার্জীও পরার সাহস করে নাই।
আমরা আমাদের মেয়েদেরই দেখাই ফেলসি।
যেহেতু মানুষ-জনের চোখ দিয়া দেখসি, সবাই তো আর ভুল বুঝে না কেউ কেউ ভালও বুঝে তেমন একজন কাল রাতে ফোন করল। সে আমাকে তাদের সাথে "মেহেরজান" দেখতে যাবার আমন্ত্রন জানাইসিলেন। আমি বললাম আইসা বইলো কি দেখলা আমি পরীক্ষা শেষ কইরা দেখুম নে। তার সিনেমা ওভার অল ভালোই লাগসে।
তখনকার ছাত্র ইউনিয়ন করা মেয়েরা নাকি এরকম জামাই পরত। তার আম্মার সাথে দেখা হইলে জিগাইতে হইব "খালাম্মা রাজেস্থানি চোলি কাটের জামা পড়তেন?" পুরা ম্যুভি দেখার পর তার নাকি একটা ভাল লাগা ফিলিংসও ছিলো।
যে কারণে সে বারবার করে সিনেমাটা দেখতে বলল সেটা হচ্ছে ওয়াসিম খানের বডি "উফ আহ...ইসসস......আমি কি মিস করলাম" আমি যেন অবশ্যই সেটা দেখতে যাই....
"আফ্রিদি ম্যারি মি" পোষ্টার আলা মেয়েটার একটা খোজ লাগানো দরকার। খুব সন্দেহ হইতেসে মেয়েটা আসলে কে ছিল!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।