"বাউল মানুষ"
সেরা অলরাউন্ডার। ২০১০ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলার। ২০০৯ সালের উইজডেনের বর্ষ সেরা ক্রিকেটার। এ রকম কত অর্জনই না সাকিব আল হাসানের নামের পাশে যুক্ত হয়েছে। তবে ২০০৬ সালের আগষ্টে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেকের পর তার সবচেয়ে বড় অর্জন দেশের মাটিতে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব লাভ।
এর আগেও সাবিক টাইগারদের দলপতি ছিলেন। সেটা ছিল অস্থায়ী। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এখন স্থায়ীভাবেই অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়েছেন সাকিবকে। তার নেতৃত্বে ৩৩ ম্যাচের ১৭টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। হার ১৬টিতে।
তারপরেও বাংলাদেশের সফল অধিনায়কের তালিকা করলে সবার উপরেই যে থাকবে সাকিবের নাম, এটা এখন পর্যন্ত ধ্রুব সত্য। তাই স্বপ্নের বিশ্বকাপের দায়িত্ব সম্ভাবনাময় এই স্বপ্ন সারথির কাঁধেই। এ কারণেই নতুন আরেকটি রেকর্ড কড়া নাড়ছে সাবিকের দরজায়। ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নামলেই তিনি হয়ে যাবেন দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপের সবচেয়ে কম বয়সী অধিনায়ক।
সাকিব আল হাসানের কাছে গত বছরটা স্বপ্নের মতো।
পুরো বছরটাই তিনি অসাধারণ খেলে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন। ৭৮৭ রান করে বিশ্বের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিনি নবম। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়ে ছিল তার আগুনঝড়া পারফরম্যান্স। সাকিবের ঘূর্ণির সামনে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি কোনো ব্যাটসম্যানই। সর্বোচ্চ ৪৬ উইকেট নিয়ে বিশ্বে সাকিবই গত বছরের সেরা বোলার।
সাকিবের নেতৃত্বে গত দুটি সিরিজেও অসম্ভব ভালো করেছে টাইগাররা। তাছাড়া নেতৃত্ব পেলে সাবিক যেন আরও বেশি জ্বলে ওঠেন। বলে ব্যাটে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সেই তো নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধেও তিনি দ্যুতি ছড়িয়েছেন। পেয়েছেন 'মোস্ট ভেলুয়েবল অব ক্রিকেটার'র পুরস্কার।
এ কারণেই সাকিবের ওপর দেশবাসীর প্রত্যাশাও বেড়েছে আরও বহুগুণ। স্বপ্ন দেখছেন ক্রিকেট প্রেমিকরা। তবে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপে থাকা দেশগুলোর বিরুদ্ধে সাকিবের যে পারফরম্যান্স তা খুব একটা সুখকর নয়। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১০২ ম্যাচে ৩৪ দশমিক ৯৮ গড়ে ২ হাজার ৮৩৪ রান করেছেন তিনি। উইকেট নিয়েছেন ১২৯টি।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাকিব ততটা উজ্জ্বল নয়।
সাকিবের ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরির সংখ্যা ৫টি হলেও বাংলাদেশের গ্রুপে থাকা ছয় দলের বিরুদ্ধে একটিও নেই, তবে ১৭টি হাফ সেঞ্চুরির মধ্যে ৯টি রয়েছে। তার সেরা বোলিং পারফরম্যান্সটিও এই দলগুলোর বিরুদ্ধে নয়। ভারতের বিরুদ্ধে ৬ ম্যাচে ৩৩ দশমিক ৩৩ গড়ে মোট ২০০ রান করেছেন। উইকেট নিয়েছেন ৬টি।
সেরা বোলিং ২/৪৩। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৬ ম্যাচে, ২৪ দশমিক ৫০ গড়ে ১৪৭ রান, উইকেট ৫টি, সেরা ২/৪৮। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭ ম্যাচে ২৪ দশমিক ৬৬ গড়ে ১৪৮ রান করেছেন। উইকেট ৯টি, সেরা ৩/৩২। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৫ ম্যাচে ২৭ গড়ে করেছেন ১৩৫ রান।
উইকেট ৩টি, সেরা ১/২৬। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৬ ম্যাচে ২৩ দশমিক ৭৫ গড়ে ৯৫ রান। উইকেট ৯টি, সেরা ২/১৬। নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র একটি ম্যাচ খেলে ১৫ করেছেন তিনি। উইকেট পেয়েছেন ২টি।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম সাকিবের জন্য পয়মন্ত। এ মাঠ যেন সবকিছু উজাড় করে দিয়েছেন টাইগার দলপতিকে। এখানে খেলা ৩৪ ম্যাচে তার গড় ৪৩ দশমিক ৭৬। দুটি সেঞ্চুরিসহ ১ হাজার ৯৪ রান করার পাশাপাশি উইকেটও নিয়েছেন ৪৮টি। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধূুরী স্টেডিয়ামেও দুর্দান্ত সাকিব।
৭ ম্যাচে ১৪টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। সেরা বোলিং ৮ রানে ৩ উইকেট। বাংলাদেশের গ্রুপ পর্বের ৬টি ম্যাচই হবে এ দুই ভেন্যুতে (চট্টগ্রামে ২টি, মিরপুরে ৪টি)। তাই সাকিবকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন দেশবাসী। তার নেতৃত্বে স্বপ্নের বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে সারা মাঠ প্রদক্ষিণ করবেন টাইগাররা, ক্রিকেট প্রেমিক মাত্রই মনে এমন কল্পনা থাকলেও তা কতটুকু বাস্তবে রূপ পাবে তা সময়ই বলে দিবে।
লিন্ক :http://www.bangladesh-pratidin.com/?view=details&type=gold&data=Cook&pub_no=272&cat_id=1&menu_id=4&news_type_id=1&index=0
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।