আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভরা বর্ষায় দার্জিলিংয়ে [ তৃতীয় কিস্তি ]



আমরা যখন দার্জিলিং ছিলাম তখন পুরো দার্জিলিং নিজেদের জন্য আলাদা প্রদেশ গঠনের দাবিতে মুখরিত ছিল যেটা কিনা গোর্খাল্যান্ড নামে পরিচিত। আমি স্থানিয়দের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি যে,হিল স্টেশন হিসেবে দার্জিলিং এর রয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি কিন্তু দার্জিলিং থেকে পর্যটন বাবদ যা আয় হয় তার কিছুই নাকি দার্জিলিঙের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় হয় না পুরোটাই চলে যায় পশ্চিম বঙ্গ সরকারের পকেটে। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে তৈরি বিল বোর্ড। গোর্খাল্যান্ড। ঘুম মনেস্ট্রি এর সামান্য দূরেই হচ্ছে বাতাসিয়া লুপের অবস্থান।

বাতাসিয়া লুপ হচ্ছে অনেকটা আমাদের দেশের শহিদ মিনারের মত। বাতাসিয়া লুপ বানানো হয়েছিল গোর্খা সৈন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যারা ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার জন্য নিজেদের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছিলেন। বর্ষায় বাতাসিয়া লুপ এমন মেঘাচ্ছন্ন থাকে। বাতাসিয়া লুপে আমি। বলা বাহুল্য, শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাবার পথে বাতাসিয়া লুপের চারপাশে টয় ট্রেন পুরো একপাক ঘুরে অনেকেই এর কারণ হিসেবে বলেন যে শহিদদেরকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই নাকি এমনটা করা হয়।

বাতাসিয়া লুপের একাংশ। বাতাসিয়া লুপ পরিদর্শন শেষে আমরা চলে গিয়েছিলাম চা বাগান এবং চিড়িয়াখানা দেখবার জন্য। প্রথমেই গিয়েছিলাম আমরা চিড়িয়াখানা দেখবার জন্য যেই চিড়িয়াখানার ভেতরে হিমালায়ান মাউন্টেইনারিং ইন্সিটিউট অবস্থিত। চিড়িয়াখানা যাবার পথেই পড়েছিল ST PAUL SCHOOL যেখানে শাহরুখ খানের Main Hoon Naa ছবির শুটিং হয়েছিল। ST PAUL SCHOOL,আমাদের বাংলাদেশের অনেক বাচ্চাও কিন্তু দার্জিলিং এর স্কুলে পড়াশুনা করে এমন দু-একজনের সাথে আমাদের বাসে কথাও হয়েছে।

ST PAUL SCHOOL থেকে বের হয়ে আমরা রওয়ানা দিয়েছিলাম চিড়িয়াখানার উদ্দেশে,পথিমদ্ধে আমাদেরকে যেন একরাশ মেঘ এসে গ্রাস করেছিল। মেঘের দল। আরও একটি ছবি। উড় মেঘের দল ছুটে চলে অজানায়...... রাস্তার অবস্থা দেখুন। কুয়াশায় পথচলাই মুশকিল ছিল।

চিড়িয়াখানার দিকে যাবার নির্দেশনা । চিড়িয়াখানার প্রবেশপথ। চিড়িয়াখানার ম্যাপ। এই চিড়িয়াখানাটি রেড পাণ্ডার জন্য বিখ্যাত এছাড়াও এতে আরও কিছু বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী আছে। আমি গিয়ে প্রথমেই রেড পাণ্ডার খোঁজ করেছিলাম।

রেড পাণ্ডার খাঁচার দিকে যাবার নির্দেশনা। উনাকে ক্যামেরাবন্দী করতে আমাকে যথেষ্ট কতসরত করতে হয়েছিল কারণ উনি আমাদের সাথে মোটামুটি লুকোচুরি খেলেছিলেন বলা যায়। রেড পাণ্ডা ( ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ) পাখি,নাম মনে নাই ভালুক মশাই। আরও অনেক প্রাণীর ছবি আছে কিন্তু আপনারা বিরক্ত হতে পারেন তাই দিলাম না। চিড়িয়াখানা ঘুরতে ঘুরতেই আমরা চলে গিয়েছিলাম হিমালায়ান মাউন্টেইনারিং ইন্সিটিউট এর কাছে।

ঢোকার মুখেই আপনি দেখতে পাবেন এই প্রতিকৃতি, প্রবেশদ্বারে আমি। মাজখানের খোলা চত্বর। দেয়ালে ঝোলানো বানী। নানা ধরনের গিট্রু। মাউন্টেইনারিং মিউজিয়াম এর দিকে যাবার পথের সিঁড়ি।

তেঞ্জিং নরগের মূর্তি। মিউজিয়াম সম্পর্কে কিছু কথা। যদিও ভেতরে ক্যামেরা ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল কিন্তু আমি প্রায় সবাইকে দেখেছি ক্যামেরা ব্যবহার করতে। তাই মিউজিয়াম এর ভেতরের কিছু ছবি দেওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না। ভেতরে ঢুকলেই আপনার চোখে পড়বে এই দৃশ্য।

দুই অভিযাত্রী। আমি। ভারতের হয়ে প্রথম এভারেস্ট জয়ীর ব্যবহার্য জিনিসপত্র। এভারেস্টের পথে। পত্রিকায় এভারেস্ট জয়ের খবর।

পুরো হিমালয়ের ধারণা আপনি এখান থেকেই পাবেন। কিভাবে এবং কোন রুটে এভারেস্ট জয় করা যায় সেই ব্যাপারেও এখানে ধারণা পাবেন। এক পিচ্চির সাথে আমি। আজ আর নয়............ হাত ব্যাথা করছে, যাবার আগে আমাদের হোটেলের বারান্দা থেকে তোলা বোনাস ছবি.................. (চলবে ) দ্বিতীয় পর্ব

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।