আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দরে তালিকাভুক্ত ১১ ব্যাংক

অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালুতে নেমে এসেছে তালিকাভুক্ত আরও একটি ব্যাংকের শেয়ারের দাম। গতকাল রোববার দিন শেষে প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ারের বাজারদর নেমে এসেছে ১০ টাকায়, যা ব্যাংকটির ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের সমান। এ ছাড়া গতকালের দরপতনে অভিহিত মূল্যের কাছাকাছি চলে এসেছে আরও ১০টি ব্যাংকের বাজারদর।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সংরক্ষিত তথ্য অনুযায়ী, গতকাল দিন শেষে ১১টি ব্যাংকের শেয়ারের বাজারদর এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। অবশ্য বাজারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১০-২০ বছরের মধ্যে ব্যাংকের শেয়ারের দাম কখনোই এতটা নিম্ন পর্যায়ে ছিল না।

এমনকি ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পরও সে সময়কার তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর শেয়ারের দাম এতটা নিচে নামেনি।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, রোববার দিন শেষে যে ১১টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমে এসেছে সেগুলো হলো: প্রিমিয়ার ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স (এনসিসি) ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও উত্তরা ব্যাংক। এর বাইরে দীর্ঘদিন ধরে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক অভিহিত মূল্যের কম দামে লেনদেন হচ্ছে। বর্তমানে শেয়ারবাজারে ৩০টি ব্যাংক তালিকাভুক্ত রয়েছে।
দিন শেষে এক্সিম ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের দাম ১১ টাকা ৭০ পয়সা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের দাম ১২ টাকা ১০ পয়সা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দাম ১১ টাকা ৭০ পয়সা, ন্যাশনাল ব্যাংক ১১ টাকা ৫০ পয়সা, এনসিসি ব্যাংক ১১ টাকা ৮০ পয়সা, প্রাইম ব্যাংক ২০ টাকা ২০ পয়সা, শাহ্জালাল ব্যাংক ১৪ টাকা ৩০ পয়সা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ১২ টাকা ৫০ পয়সা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ১৩ টাকা ৪০ পয়সা ও উত্তরা ব্যাংকের শেয়ারের দাম ২৪ টাকা ৯০ পয়সায় নেমে এসেছে।


দরপতনের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে অনেকগুলো ব্যাংকের শেয়ারের দাম কয়েক দিনের মধ্যেই অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের দামের এমন পরিস্থিতির জন্য ব্যাংকগুলোর আয় কমে যাওয়াকেই প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজনেস অনুষদের শিক্ষক মোহাম্মদ মূসা প্রথম আলোকে বলেন, অনেকগুলো ব্যাংকের শেয়ারের দাম গতকাল দিন শেষে যেখানে নেমে এসেছে, তা শুধু এক বছর নয়, গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই খাতের শেয়ারের দামে এখন বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। ব্যাংকগুলোর শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস কমে যাওয়ায় দামে এর প্রভাব পড়েছে।


মোহাম্মদ মূসা আরও বলেন, ব্যাংকগুলো এখন যা আয় করছে তার বড় অংশ দিয়ে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিং করতে হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের কু-ঋণের যে অবস্থা, তাতে নিকট ভবিষ্যতে আয় বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনাও কম। তাই এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন বিনিয়োগকারীরা। এ কারণে ব্যাংকিং খাতের অনেক শেয়ারের দাম অবমূল্যায়িত পর্যায়ে নেমে এসেছে।
১৯৮৭ সালে থেকে শেয়ারবাজারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন ডিএসইর সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী।

জানতে চাইলে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ১৯৮৮ থেকে ৯০-৯১ সালের দিকে অনেকগুলো ব্যাংকের শেয়ারের দাম অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে এসেছিল। সে সময় ব্যাংকিং খাতের নানা সংস্কার কার্যক্রমের কারণে ব্যাংকগুলো ধারাবাহিকভাবে কয়েক বছর লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারেনি। এরপর মাঝে কয়েকবার হাতে গোনা কয়েকটি ব্যাংকের দাম অভিহিত মূল্যের নিচে থাকলেও গত দশ বছরের মধ্যে এতটা নিচে নামেনি। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।