আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুতর্ক-সুতর্ক

অনেকেই এই কুতর্ক করিতেছেন যে, পুলিশ পাহারা লইয়া শাহবাগে যে আন্দোলন চলিতেছে তাহা আবার একটা আন্দোলন হইলো? আমাদিগোকে করিতে দিলে আমরাও উহার দশগুণন লোক জমায়েত করিতাম ইত্যাদি। তাহাদের প্রতি বলিবো, ’৭৫ পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ গোটা কয়েক যুগ রাজাকারদিগো কি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পায় নাই? রাষ্ট্রীয় মদদে ও বিভিন্ন দলের ঘাড়ে সাওয়ার হইয়া তাহারা এই দেশে কী না করিয়াছে? প্রধানমন্ত্রীত্ব পাইয়াছে, স্পীকার হইয়াছে, বঙ্গভবনে পর্যন্ত ধুকিয়াছে। আল-বদর কমান্ডারদিগের গাড়িতে উড়িয়াছে জাতীয় পতাকা। তাহা হইলে আজ রাজাকার-বিরোধী আন্দোলনকারীরা নিরাপত্তা পাইলে এত লাগে কেনো? যখন এই আন্দোলনকারীরা রামদা’র কোপে ফালি-ফালি হইবার অঘোষিত ফতোয়া মাথায় লইয়া ঘুরিতেছেন, যখন যে কোনো মূহুর্তে সন্ত্রাসীর বোমায় ছিন্ন-ভিন্ন হইয়া যাইতে পারে শত-শত লোক, তখন যদি তাহারা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা না পায় তাহা হইলে আর মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি বলিয়া দাবিকরিয়া থাকে এমন একটি জোটকে জনগণ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরীষ্ঠতা দিয়া মহান জাতীয় সংসদে কেনো প্রেরণ করিয়াছে? আর এক দল বলিতেছে, দেশে কী একটা গন্ডগোল বাধাইয়া দিলো, পথে-ঘাটে যানজট, রাস্তায় নামিতে পারিতেছিনা বিবিধ। ইহারা বোধ করি ’৭১ কেও গন্ডগোলই বলিবান কেননা তখনো দেশে বাস্তবিক একটা গোলযোগই বাধিয়াছিলো আর রাস্তা-ঘাটে চলাচলও বিপদজনক হইয়াছিলো।

কিন্তু কাহারা এই বিপদের আশু কারণ ও দুশমন, আর তাহারা কাহাদের বংশধর তাহা ভাবিয়া ইহারা আর মুসিবত বাড়াইতে চাহেন না। আর সর্বশেষ একদল রহিয়াছেন যাহারা বলেন, দেশটাকে দুই ভাগে বিভক্ত করিয়া ছাড়িলো, ছিলেম তো বেশ মিলিয়া-মিশিয়া…তাহাদিগকে শুধু এইটুকুই বলিবো, পানির মধ্যে কোনো দানাদার পদার্থ কি বিষ গুলাইয়া দিলে তাহা মিশিয়া যায় ঠিকই, কিন্তু এক হইয়া যায় না। এখন সময় আসিয়াছে ইতিহাসের সেই অমিয়জল বিষমুক্ত করিয়া পান করিবার। ইতিহাসের পাতায় পাতায় দুইটি দল রহিয়াছে, একটি সত্যের দল আর একটি মিথ্যার। তাহাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব অনিবার্য।

কোনো নতুন মানবমুক্তির ধর্ম কি পুরাতন বাতিল ধর্মকে উচ্ছেদ বা কমপক্ষে প্রভুত পরিমাণে দুর্বল না করিয়া ছাড়িয়াছে? কোনো বিপ্লব কি প্রতি-বিপ্লবীদের স্বস্তিতে রাখিয়া নূতন সমাজ বিনির্মাণ করিতে পারিয়াছে? তাহা হইলে আমাদের আর এত দ্বিধা কেনো? সত্যের জয় যে সকল সময়ে তড়িত গতিতে হইয়াছে তাহাও নহে। কিন্তু শেষ হাসি ঠিকই হাসিয়াছে ন্যায়। ০১/০৩/১৩ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।