আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সফল এক তরুণীর গল্প

চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি।
আজকের ইত্তেফাকের লিংক- Click This Link ০০ প্রাঞ্জল সেলিম ০০ পরিবারে কেউ বিত্তশালী আছে কি? কর্মক্ষেত্রে সুযোগ করে দিতে পারে এমন কেউ? নেই!! কোনো সমস্যা নেই। আসুন আশলে কুয়েলস সম্পর্কে জেনে আসি, মাত্র ১৭ বছর বয়সেই কিভাবে সে তার জীবনকে শূন্য থেকে নিয়ে গেছে সফলতার শীর্ষে। নিজের ঘর থেকে শুরু করে সে তার লক্ষ্যে পেঁৗছেছে তার বয়সী টিনেজ মেয়েদের জন্য 'হোয়াটএভারলাইফ ডট কম' নামের সাইটটি বানিয়ে। আয়ান মোরেই, ভ্যালু ক্লিক মিডিয়া কোম্পানির মার্কেটিং ম্যানেজার, ইন্টারনেটে টিনেজারদের নিয়ে খোঁজাখুঁজি করছিলেন।

হঠাৎ তিনি হোঁচট খেলেন একটি সাইট দেখে। টিনেজারদের এত অ্যাকটিভিটিজ, এত কথা এক সাইটে আবদ্ধ করে রাখা, ব্যপারটা তাকে স্বভাবতই নাড়া দেয়। সেই সাথে তিনি যা খুঁজছিলেন তা খুব সহজেই পেয়ে যান। তিনি আরো অবাক হন জেনে যে, এই সাইটটির প্রতিষ্ঠাতা একটা ছোট্ট মেয়ে। মজার ব্যপার হলো, মাইস্পেস, ফেসবুকের মতো অসংখ্য সাইট ইন্টারনেটের জগতে গাছের পাতার মতো গজিয়ে উঠলেও তা বেশিদিন টেকে না, চলার পথেই হারিয়ে যায়।

অথচ এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার যুদ্ধে শুরু থেকেই ভালোই চলছে 'হোয়াটএভারলাইফ ডট কম' নামের টিনেজ সাইটটি। সাইটটি অনেক দিক থেকেই উন্নত। জনপ্রিয় ওয়েবসাইট মাইস্পেসের সাথে এর ডিজাইনের অনেকটাই মিল আছে। তবে, আকর্ষণীয় বিষয় হলো, দৈনিক প্রায় হাজারখানেক টিনেজ মেয়ের ছবি এতে অ্যাটাচ করা হয়। সাইটটি নিয়ে আয়ান মন্তব্য করেন, 'চমৎকার অলংকরণ ও কাজের বৈচিত্র্য_আমাদের এমনটাই দরকার'।

আয়ান অল্প চেষ্টাতেই পেয়ে গেলেন সাইটটির নির্মাতা, অ্যাশলে কুয়েলসকে। উদ্দেশ্য, ব্যাপকভাবে টিনেজদের আনাগোনায় মুখরিত এ সাইটটিতে নিজের কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেওয়া। আর এর জন্য তিনি ৪৫০ ডলার অথবা মুনাফা ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভেবে রাখেন। কিন্তু প্রথমেই তার ব্যর্থতার মুখ দেখতে হয়। অ্যশলে তার প্রস্তাব নাকচ করে দেয়।

তবে, কয়েক সপ্তাহ পরে সে তার মত বদলায়। সেসময় আয়ান একটা ব্যবসায়িক কাজে লস অ্যাঞ্জেলসে থাকায় পুরো ব্যপারটি ফোন ও ইমেইলের মাধ্যমে সারতে হয়। তখনও তাদের সামনাসামনি কথা হয়নি। আয়ানের জন্য ব্যপারটা খুবই মজার অভিজ্ঞতা ছিলো। কারণ তার ব্যবসায় পার্টনার হতে যাচ্ছে মাত্র ১৭ বছরের একটা মেয়ে।

তার কোম্পানি থেকে প্রশ্ন করা হয়, মেয়েটা কি পারবে এমন কাজের সাথে দ্বায়িত্ব নিয়ে যুক্ত হতে? উত্তরে তিনি বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি, ইন্টারনেটে বিচরণ করে এমন অনেক জাদুকরের মধ্যে সে একজন। আর তার বয়সী যে কারও থেকে এ বিষয়ে সে অনেক বেশি অভিজ্ঞ। ' অ্যাশলে, সত্যিকার অর্থেই ইন্টারনেট প্রফেশনাল বলা যায় তাকে। 'হোয়াটএভার লাইফ ডট কম' প্রতিষ্ঠার প্রায় দুবছরই আগেই সে হাইস্কুল ছেড়ে দিয়েছিলো। একটা বাসা ভাড়া নেয় এবং নিজের একটা কোম্পানি করার উদ্যোগ নেয়।

তার সাথে ছিলো লিলি অ্যালেন সহ আরো কয়েকজন, তার মতোই শিক্ষার্থী। ইন্টারনেটের কাজ খুব ভালোভাবে জানতো বলেই বিভিন্ন জায়গা থেকে তাকে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু কোনোটাই সে গ্রহণ করেনি। এমনকি তাকে কোম্পানির পক্ষ থেকে একটা গাড়ি ও ১.৫ ডলার বেতন অফার করা হয়েছিলো। এ বিষয়ে কেউ কিছু জানতে চাইলে তার জবাবে সে হেসে বলে, আমার কি চাকরি করার বয়স হয়েছে? আমার তো লাইসেন্সই নেই! ইন্টারনেট নিয়ে ব্যবসা করতে গিয়ে তার প্রথমেই যে জিনিসটার দরকার হয় তা হলো, অর্থায়ন।

সেটা জোগাতে সে ওয়েবপেজ তৈরির ব্যবসা করতে থাকে। সেখানেও একসময় ভালো ব্রেক পায়। মাইস্পেসের ডিজাইন তারই করা। সেটা সে বিক্রি করে কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু সেখান থেকে তেমন কিছুই আয় করতে পারেনি সে।

এরপর সিদ্ধান্ত নেয়, এমন কিছু করার, যা থেকে সে আয় করতে পারবে। সেখান থেকেই মূলত 'হোয়াটএভার লাইফ'-এর সূচনা। এই সাইট থেকে তার ইনকাম বলতে গেলে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই হয়। গুগলের একটা জরিপে বলা হয় যে, 'হোয়াটএভার লাইফ' অন্যসব সাইট থেকে বেশি আকর্ষণ করে সবাইকে। অন্যসব সাইটে ৬০ মিলিয়ন দর্শনার্থী গেলে তার সাইটে আসে ৭ মিলিয়নের মতো।

এটা প্রতিমাসের গড় হিসাব। কারণ, এ সাইটে টিনেজ মেয়েদের নিয়ে অনেক কিছু আছে। যেমন_টিনেজদের জন্য পত্রিকা, কসমো গার্ল প্রভৃতি। এ ছাড়াও টিন রাংকিংয়ের ব্যবস্থা থাকায় ব্যবসায়ীদের বিজ্ঞাপন দেওয়ার ভালো সুযোগ রয়েছে এখানে। ব্রিটানিকা, আমেরিকান আইডল, এফডিএ ও সিবিএস-এর মতো সাইটগুলোতে যেরকম বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, মাপকঠিতে তার সাইটের বিজ্ঞাপনের হারও তেমনই।

সেই সূত্রে তার সাইটের কারণে যখন তাকে অপেরা থেকে ফোন দেওয়া হয়, সে বিশ্বাসই করতে পারছিলো না। হাজারো দর্শকের সামনে সে বলে, 'আমি কখনোই ভাবিনি যে, আমি কাউকে প্রভাবিত করার মতো অবস্থানে যেতে পারবো। ' এই অনুষ্ঠানের পরপরই তার সাইটে আরো ১,৫০০ জন মেয়ে যুক্ত হয়েছিলো। সঠিক সময় সে সঠিক কাজটিই করেছিলো। তার সাইটে এইচটিএমএল-এর ওপেন সোর্স থাকায় সবাই মাইস্পেস থেকে বিভিন্ন লেআউট কোড নিয়ে 'হোয়াটএভার লাইফ'-এ পেস্ট করতো।

সেখানে নিজের মতো প্রোফাইল তৈরি করে নেওয়া যায় এবং সেই সাথে সেটাতে আরো রঙিন নকশা যোগ করে সাইট প্রোফাইলকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা যায় বলে জনপ্রিয়তাও ছিলো বেশি। যারা 'হাই ফাইভ' ব্যবহার করেছেন, তারা ব্যপারটা খুব সহজেই বুঝতে পারবেন। কারণ, বর্তমানে 'হোয়াটএভার লাইফের সেই হালকা চেহারা আর নেই। অসংখ্য ফিচার ও বিজ্ঞাপন দিয়ে সাইটটি ভরে গেছে। তাই বলে জনপ্রিয়তা কমে যায়নি বিন্দুুমাত্রও।

মাইস্পেসের লেআউট ও 'হোয়াটএভার লইফ'-এর লেআউট বেশ জনপ্রিয়তা পায় ইন্টারনেট জগতে। জুন মাসে গুগলের এক জড়িপে দেখা যায়, গড়ে ৩০টা টপ সাইটের মধ্যে 'হোয়াটএভার লাইফ ডট কম'ও রয়েছে। পরবর্তীতে এ সাইট নিয়ে পত্রিকাও বের হয়। মিডিয়ার বিজ্ঞাপন নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের জন্য আয়ের স্বর্গ এ সাইটটি।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।