আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভয় ছিলো আশরাফুলের


ভয় ছিলো আশরাফুলের খবরের কাগজ পড়েই সকাল আটটায় প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলমকে ফোন করেন মো. আশরাফুল। অনেক চেষ্টার পরেও প্রধান নির্বাচককের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। বুকের ভেতরে ধুকপুকুনিটা বেড়ে যায়। বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন ভঙ্গের শঙ্কা নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন। শেষে দুপুরে আশরাফুলকে সুখবরটি দেন প্রধান কোচ জেমি সিডন্স।

আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাওয়ার অবস্থা আশরাফুলের। ঘটনার বর্ণনা সাবেক অধিনায়কের মুখেই শোনা যাক,“বিশ্বকাপ দলে থাকবো কি থাকবো না এনিয়ে একটু চিন্তা হচ্ছিলো। বিশেষ করে আজকে সকালে সংবাদপত্র দেখে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। যদিও চাপে পড়ার কথা নয়। কিন্তু প্রশ্ন ওঠায় চিন্তা হয়েছে।

” প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলমের নেতৃত্বধীন তিন সদস্যের কমিটির মূল্যায়নে ১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ দলে ছিলেন আশরাফুল। সোমবার টেকনিক্যাল ও মূল্যায়ন কমিটির সামনে এ নিয়ে জবাবদিহি কম করতে হয়নি তাদেরকে। কিন্তু মঙ্গলবার মূল্যায়ন কমিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ম্যারাথন চার ঘন্টার সভায় দৃশ্যপট বদলে যায়। কমিটির প্রভাবশালী কর্মকর্তা দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল এবং গাজী আশরাফ হোসেন লিপু নির্বাচকদের ওপর চাপ তৈরি করেন আশরাফুলকে বাদ দিয়ে অলক কাপালিকে দলে নিতে। রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত নির্বাচকরা নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে টুটুলের সঙ্গে আলোচনা চালান।

তাতেও সুবিধা হয়নি। শেষে বুধবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামালের হস্তক্ষেপে জয়ী হন নির্বাচকরা। জয়ী হন আশরাফুলও। বড় আসরে বরাবরই ভালো খেলেন আশরাফুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দারুণ একটি ইনিংস খেলেন।

নিজের তৃতীয় বিশ্বকাপ স্মরণীয় করে রাখতে এবারও স্বপ্ন দেখছেন সাবেক অধিনায়ক,“এখন পর্যন্ত যতগুলো বড় আসরে খেলেছি, ভালো হয়েছে। আশা করি এই বিশ্বকাপেও ভালো করতে পারবো। ” নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজে খেলার সুযোগ পেলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ছিলেন না শাহরিয়ার নাফিস। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গাজী ট্যাঙ্ক ক্রিকেটার্সের হয়ে পারফরমেন্স করায় নির্বাচকরা বিশ্বকাপের জন্য মূল্যায়ন করেছেন তাকে। দলে ফিরতে পেরে খুশি উদ্বোধনী এই ব্যাটসম্যান।

বলছিলেন,“আমি সবসময় ভেবেছি বিশ্বকাপ খেলতে হলে লিগে ভালো খেলতে হবে। আল্লাহ’র রহমতে বড় ম্যাচগুলোতে রান পেয়েছি। নির্বাচকরাও আমাকে বিবেচনা করেছেন। আমি চেষ্টা করবো ভালো খেলতে। ” অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বিশ্বকাপের দল নিয়ে খুশি।

তার দৃষ্টিতে সেরা এই মুহূর্তের সেরা ১৫ জনকে নিয়ে সাজানো হয়েছে বিশ্বকাপ দল। সাকিবের ভাষায়,“আমার মনে হয় সেরা স্কোয়াড হয়েছে। নির্বাচকরা এর চেয়ে ভালো কিছু করতে পারতেন বলে মনে হয় না। আশা করি বিশ্বকাপে ভালো কিছু হবে। ” সাকিবের জন্য এবারের বিশ্বকাপ অভিযান অন্যরকম।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে ছিলেন উদীয়মান ক্রিকেটার। চারবছর শেষে, দেশের মাঠে অধিনায়ক হিসেবে খেলবেন আরেকটি বিশ্বকাপ,“একদম নতুন একজন খেলোয়াড় হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলেছি। এখন ১০০’র ওপরে ওয়ানডে খেলা হয়ে গেছে। অধিনায়কত্বও পেয়েছি। আমার জন্য এটা অনেক বড় পাওয়া।

” তবে মাশরাফির অভাব সাকিবকেও নাড়া দিয়েছে,“খবরটা শুনলে যে কারো খারাপ লাগতো। তবে আমার মনে হয় না মাশরাফি ভাই ভেঙ্গে পড়েছেন। আজ পর্যন্ত যে অবস্থায় থেকে তিনি খেলছেন, আমার মনে হয় না অন্যকোন খেলোয়াড় পারতো। আশা করি ফিট হয়ে বিশ্বকাপ দলে ফিরবেন। উনার সেই সামর্থ আছে।

উনি ফিরলে দলের জন্য খুবই ভালো হবে। ” আশরাফুল তো ভাবতেই পারছেন না মাশরাফিকে ছাড়া হ্যাট্রিক বিশ্বকাপ খেলবেন। কিন্তু বাস্তবতা তাকেও মেনে নিতে হচ্ছে। অবশ্য বন্ধুর জন্য অপেক্ষায় থাকছেন মিডল-অর্ডার এই ব্যাটসম্যান,“ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপ। প্রত্যেক ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে বিশ্বকাপ খেলার।

কিন্তু মাশরাফির ভাগ্যটা খুবই খারাপ। শেষ ১০/১২ বছর আমরা এক সঙ্গে খেলছি। আগে দুটো বিশ্বকাপে দু’জনেই ছিলাম। ওর স্বপ্ন ছিলো দেশের মাঠে এবার বিশ্বকাপটা খেলবে। আমি যতটুকু জানি ইনজুরির জন্য ওকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

তবে দ্রুত উন্নতি করছে মাশরাফি। এখনো সুযোগ আছে। যদি পুরোপুরি ফিট হয় তবে অবশ্যই বিবেচনা করবে। আমি মনে করি ওর এখনো সুযোগ আছে। ” বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘন্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১১ সূত্র-এখানে
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।