ফ্রেন্ডলি কিলিং করপোরেশন
ভারতের সাথে আমাদের সাইবার অপটিক কানেকশন হতে যাচ্ছে। পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত বিটিসিএল এই কাজ সম্পাদন করবে। শিলিগুড়ি হ্যাবের সাথে আমরা কানেক্টেড হবো। ভালো কথা। ঐ সব এলাকায় ২০ টি আইটি সেণ্টার গড়ে উঠবে আর ১০০০ গ্রামকে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল আইটি ভিলেজে রুপান্তরিত করবে।
ভারত বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ভার্চুয়াল সংযোগ বাড়বে।
আমরাসসহ সার্কের আরো তিন দেশ এই নেটওয়ার্ক গ্রিডের আওতায় আসবে। যখন কী না বাংলাদেশকে চাপে রাখার জন্য ভারতীয় পত্র-পত্রিকা “ইসলামী জঙ্গিদের” নিরাপদ আস্তানা হিসেবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ সরকার যাকে তাকে ধরে, যে কোন বহুল পঠিত বইকে [কিংবা কিতাবকে] জঙ্গিবাদের জোশের উৎস হিসাবে প্রপাগান্ডা করছে, তখন বলতে দ্বিধা নাই, আমাদের ইন্টিলিজেন্স কতো গন্ড মুর্খ! জ্ঞান বলতে মানুষকে সন্দেহ করার বাতিক। যখন বাংলাদেশের মানুষ খবরো রাখে না যে, বাংলাদেশের সকল নূরানী, এবতেদিয়া, হাফেজিয়া, খারেজী, আলিয়া যতো প্রকারের মাদ্রাসা আছে, সবগুলোকে ইউএইস আইডির অর্থায়নে জিপিএস প্রযুক্তি ব্যাবহার করে সুচিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। প্রিসিসন বোমা মারতে সুবিধা হবে।
বাংলাদেশের সবচে বেশী এখন বিপদের মধ্যে আছে বাঙালী মোসলমান।
তাদের অর্থের উৎস, পাঠ্যসূচি নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছে ওরা। এডিবি আমাদের জন্য একটি নতুন আদর্শ লিপি অর্থাৎ কোড অব কন্ডাক্ট, জাতীয় আচরণবিধি রচনায় হাত দিয়েছিল। পরে এর বিপদ বুঝতে পেরে ক্ষান্ত দিয়েছে। আমরা কী অবস্থায় আছি! আমাদের সকল ছোট দোকান, প্রতি পলে, পাড়া মহল্লার সকল দোকান Geo-referenced Mapping-এর আওতায় নিয়ে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আরেকটি প্রতিষ্ঠান।
বহু বছর আগে বলকান যুদ্ধ শুরুর দিনগুলোতে আমি প্যারিসে ছিলাম। সে-ই সময়ের কিছু আগে রুয়ান্ডায় হুতো-টুটসিদের মধ্য ইতিহাসের জঘন্যতম গোত্রদাঙ্গা হয়। আমাদের বন্ধুরা আফ্রিকান কমিশন গঠন করেছিলো ঘটনার তদন্ত করতে। এই ঘটনার প্রেক্ষাপট তৈরির পশ্চাদপটে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বহুপাক্ষিক সংস্থার অবদান ছিলো। এর আগে এক মার্কিন জেনারেল আফ্রিকার বেশ ক’টি দেশ সফর করেছিলেন, আফ্রিকার কয়েকটি হাড়জিরজিরে দুর্বল রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীকে প্রাইভেটাইজ করার প্রস্তান নিয়ে।
প্রকারান্তরে ইঊএন –এর মাধ্যমে সেনাবাহিনীর প্রাইভটাইজেসন ঘটে গেছে। ঘাটাইলে যান। দেখে আসুন, আমাদের শান্তি কমান্ডে কী ঘটছে। এই সব কথা পাড়ছি, অন্য সব কথা তুলবো বলে।
এক কথাঃ
যোগাযোগের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক দিক নিয়ে আমাদের বে-খেয়াল হলে চলবে না।
বাংলাদেশ যেন তথ্য ডাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে পরিণত না হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নে সাইবারনটিক সংক্রান্ত বিতর্কটি এই ক্ষেত্রে স্মর্তব্য। এটি যেন বিপ্লবীদের গতিবিধির উপর নজরদারির হাতিয়ার না হয়। এর মধ্য দিয়ে ভারতীয় আইটি ইন্ডাস্ট্রির একদল মজুরও তৈরি হতে পারে বাংলাদেশে।
দুই কথা
বাংলাদেশের জনগোষ্ঠিকে সেক্যুলার ও ইসলামপন্থি (তাদের ভাষায় জঙ্গি অথবা ভাবী জেহাদি) এই দুই ভাগে ভাগ করার যে শর্ত সমাজে, মনস্তত্বে ও বাংলাদেশের এক শ্রেণীর মানুষে মগজে গিজ গিজ করছে সেটাকে পুরাপুরি কাজে লাগিয়ে একটা দাঙ্গা লাগিয়ে দেয়ার জন্য কেউ কেউ তৎপর।
তিন কথা
বাংলাদেশের উর্দিপরা কৃষকের সন্তানদের কখনোই দেশপ্রেমের কথা ভুলানো যাবে না। দেশ তাদের কাছে একটা অর্জন।
চারকথার পর ঝগড়া
ভারতীয়রা হিন্দু শাসনের শানে নতুন সভ্যতার সন্ধান পায়। বাংলাদেশ মুসলমানদের দ্বারা শাসিত হলে অসুবিধা কোথায় ? কংগ্রেসের সাম্প্রতিক কালে প্রকাশিত ইতিহাস মিথ্যায় ভরা। কংগ্রেস তলে তলে একটি প্রচন্ড সাম্প্রদায়িক দল।
কংগ্রেস ভোটে জেতার জন্য ভারতের অসহায় ( যা জারী রাখা হয়েছে) আলাভোলা মুসলমানদের বার বার রক্ষার করার করে/প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে ওয়াদা ভঙ্গ করেছে।
সাম্প্রদায়িকতার নাটের গুরু কংগ্রেস-ই। বাংলাদেশে ইসলাম থাকলে অসুবিধা,ভারতে হিন্দুত্ব থাকলে সুবিধা! আসলে রাজনীতি ও ধর্মের সম্পর্কগত দিক নিয়ে “ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের” অবস্থানের সাথে আমি মোটেও একমত নই। বিজেপির ইতিহাস প্রকল্পের উপর আমি দীর্ঘদিন নজর রেখেছি। হিন্দুস্তানে যারা আছে সকলেই হিন্দু রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অর্থে বিজেপির এই অবস্থানের মানে বোঝা, এর সার উপলব্ধি করার হিম্মত থাকা দরকার।
১৯৭১ সালের সব অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় যদি বাঙালী জাতীয়াতাবাদিদের সাথে আমরা যারা অপরাপর লাঙ্গল-জোয়াল কাধের বাঙ্গালরা সুর মিলাতে যাই যে, যুদ্ধে ইসলামের বা ধর্মের পরাজয় হয়েছে। এটা ঠিক যে, পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠি যেভাবে ইসলামী জিগির তুলে তুলে, বাঙালীদের অধিকার হরণ করে করে তিতিবিরক্ত করে ফেলেছিল, তাতে ধর্মাতংক, বিশেষ করে উদিয়মান শিক্ষিত মানুষের মধ্যে তৈরি হবার বস্তুগত কারণ জারী ছিলো ষোল আনা। কিন্তু বাঙালী নামক যে “ জাতীয়তাবোধ” সে সময় একটা অনির্দিষ্টতার মধ্যে, যা ক্রমাগতভাবে মূর্ত হয়েছে চিহ্নে, স্মারকে, টিপে- যা কিছু ইসলামিক, তা বর্জনের মধ্য দিয়ে তার ফল কিন্তু ভালো হয় নাই। মুসলামান কিংবা হিন্দুর তুলনামূলক বিশ্লেষণ ও পাকিস্তানের ন্যয্যতা নিয়ে মহান অম্বেদকার সাহেবের “ পাকিস্তানের উপর” বইখানা পাঠ করুন। তাতে অনেক প্রশ্নের জবাব মিলবে।
রাজনীতিতে অমিল বোঝা মিলের জন্য অনেক বেশি জরুরী। ভারতত্ত্ব পাঠে মন বসাব। মনে হয় আমি বাঙলা থেকে উৎসারিত সর্বভারতীয় বিপ্লবের পক্ষে। ভারতত্ত্ব পাঠে মনোনিবেশ করবো “ বেদে যা নাই” সেটা জানার জন্য। তার জন্য কুষ্টিয়া কিংবা নদীয়া স্কুলের ছাত্র হতে কোন অসুবিধা নাই।
তবে কথাটা হলো এই, বাঙালী জাতীয়তাবাদিরা এখন বড়ো বেশী “ ইসলামিক” হয়ে উঠছে। ঈমানের পরীক্ষা দিচ্ছে। ভোট এলে তা টের পাওয়া যায়। আর তাদের ওলেমা-মাশায়েকদের নিয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট তো আছেই।
চারকথার পর বাঙ্ময় চিৎকার (Discourse)
আমি খুব একটা র্যা শনাল নই।
কারণ, পশ্চিমা র্যা শনালিটির ঘোরপ্যাঁচ আমি দেখেছি। আমি ভারততত্তের পশ্চিমাকরণ দেখেছি জার্মান, ফরাসি ও ইংলিশদের হাত ধরে। প্রধানতঃ ইংরেজের অস্বীকার ও জার্মানদের স্বীকৃতির ঐ কালপর্বটা বোঝা জরুরী। ভারতের প্রথম পরিকল্পনা সব মহাভারতীয় পরিকল্পনা। হিমালয়ের মত, জ্ঞান সমুদ্র মন্থন করে করে এক একটা পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে।
প্রফেসর দামোদর কোসাম্বি মশাই ভারতীয় পরিকল্পনার মহাভারতীয় দিক নিয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। এখন “সমুদ্র মন্থন” নীতির অংশ অংশ হিসেবে সব নদীর উজানে বাধ দিচ্ছে ভারত। এটা কিন্তু বেদের চরম লঙ্ঘন। আমাদের বেদেরা তরংগের মানে বোঝে। জলে যার অধিবাস।
আমাদের জেলেরা জলের মায়াজালে জীবন দেয়। সমুদ্র তাদের ডাকে। দরিয়া তাদের দখলে থাকে। কিন্তুক, কয়ে রাখি, এরা সবাই বাঁধবিরোধী। রিজিয়া বেগম যিনি “ চাষীদের” বড়ো সাধক বলেছেন তার পরিবারের আশ্রাফ উদ্দিন চৌধূরী একটি বই লিখেছিলেন “রাজ বিরোধী”।
আমি বই লিখবো “বাঁধ-বিরোধী”। আমার ‘স্মৃতিসত্তাকণা’ কাব্যগ্রন্থে জলযুদ্ধের কথা বলেছি। ঐ একই কাব্যগ্রন্থে গণতন্ত্রকে সিফিলিস বলেছিলাম। গণতন্ত্রকে “রটনা” বলতে আমার দ্বিধা নাই। কে যেন বলেছে, গণতন্ত্র খুব ভাল।
আমি বলি, গণত্ন্ত্র যখন বার বার মহোষৌধি হিসাবে আর প্রেসক্রাইভ করা হবে না, তখনই সত্যিকারের মুক্তি ঘটবে মানুষের।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।