আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিছু রূপ চিরকাল অপরূপ চিরজীবন্ত- তেমনি দুষ্প্রাপ্য কিছু রূপ ১ম পর্ব

আমি বাধঁনহারা, মৃত্তিকা বুকে, আপন রূপে...........
দুষ্প্রাপ্য রঙন : গ্রীষ্মে বলধা গার্ডেনের সিবিলি অংশে নেটহাউসের সুদৃশ্য রঙনটি সবার নজর কাড়ে। আমাদের দেশে রঙনের অনেক ভ্যারাইটি চোখে পড়লেও এই প্রজাতিটি অনেকটাই (Ixora suparba) দুষ্প্রাপ্য। গাছ খাটো, গুল্ম শ্রেণীর, কয়েকটি মাত্র শাখা। পাতা কাণ্ড ও ডালের আগায় গুচ্ছবদ্ধ, ৫-২২ ইঞ্চি লম্বা, ১২-১৬ ইঞ্চি চওড়া। ফুল সাদা, সুগন্ধি, ডালের আগায় বড় বড় গুচ্ছে পাতার বেস্টনির মাঝখানে ফোটে।

গুচ্ছ ১৫ সেন্টিমিটার চওড়া, প্রতিটি তিন সেন্টিমিটার লম্বা, পাপড়িসংখ্যা চার। দুর্লভ এই প্রজাতিটি বাড়ে খুব ধীরে, বছরে ৭-১০ সেন্টিমিটার। ফুল ফোটে গ্রীষ্মে। কমব্রেটাম : কোনো বাংলা নাম নেই। প্রথম দেখি কার্জন হল প্রাঙ্গণে।

আরবরি কালচারের ঘরের সামনে। দেখতে ভারি সুন্দর। চোখ ফেরানো যায় না। তা ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিভবন প্রাঙ্গণে, রমনা পার্কে মাধবী লতার পাশে ও বলধা গার্ডেনের সাইকিতে চোখে পড়ে। কমব্রেটামকে (Combretum coccineum) কেউ কেউ ব্রাশ ফুল নামে ডাকেন।

মূলত মাদাগাস্কারের প্রজাতি। আমাদের আবহাওয়ায় অভিযোজনা চমত্কার। কাষ্ঠলতা, বড় ঝাড় হয়, কচি ডাল সবুজ, তাতে বাদামি রঙের রোম থাকে। পাতা একক, ৮-১৮ সেন্টিমিটার লম্বা, গাঢ় সবুজ, বিন্যাস বিপ্রতীপ। বর্ষা-শরৎ ছাড়া প্রায় সারা বছরই ফুল থাকে।

ডালের আগায় চ্যাপ্টা মঞ্জরিতে কমলা-লাল ফুল ফোটে, গন্ধহীন। তাতে অনেকগুলো সোনালি পুংকেশর ছড়ানো থাকে, এরাই পাপড়ির অভাব মেটায়। দলনল ১ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার লম্বা, মুখে চারটি ত্রিকোণ লতি। বংশবৃদ্ধি কলমে। দীর্ঘ প্রস্ফুটন ঐশ্বর্যের কারণে পথপাশে মানানসই।

বনপারুল : পারুল নামেই শিশু একাডেমীর বাগানে দিব্যি বেড়ে উঠেছিল। কিন্তু ফুল ফোটার পর বনপারুল হিসেবে শনাক্ত করা হয়। বছরচারেক আগে এক গ্রীষ্মে হঠাত্ (Heterophragma roxburghii) প্রথম পুষ্পশোভা বিকশিত হয়। ঊর্ধ্বমুখী ফুলগুলো কাঁচা সবুজ পাতার আড়ালে অনেকটাই অদৃশ্য, প্রথম প্রস্ফুটন হওয়ায় হয়তো সংখ্যায়ও কম। তবুও চোখ এড়ায় না।

জানামতে, ঢাকায় আর কোনো গাছ নেই। ধূসর কাণ্ড, কচি ডালপালা রোমশ, পরে মসৃণ। যৌগপত্রে তিন-চার জোড়া পত্রিকা, প্রায় মসৃণ। ডালের আগায় শাখা বিভক্ত মঞ্জরিতে ছোট ফুল, ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ সেন্টিমিটার লম্বা, দল নলাকার, ১ দশমিক ৫ ইঞ্চি লম্বা, মলিন সাদা, তাতে লালচে দাগ, ঈষৎ সুগন্ধী, পর্যায়ক্রমে ফোটে। স্টেপেলিয়া : গাছ দেখে মনে হয় না ফুল এতটা সুন্দর হতে পারে।

প্রায় সারা বছরই নিষ্প্রাণ থাকে। তবে গাছের গড়নটা মনোহর। দেখতে ক্যাকটাসের মতো মনে হলেও আদতে ক্যাকটাস নয়। গ্রীষ্মের শেষ ভাগেই ফুল ফোটে। এ গাছ (Stapelia nobilis) অতটা দুষ্প্রাপ্য নয়, অনেকের ব্যক্তিগত সংগ্রহেও আছে।

গুচ্ছল ও মাংসল উদ্ভিদ, কাণ্ড খাড়া, পুরুষ্টু, ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা, গোড়া থেকে অনেকগুলো সবুজ রঙের শাখা বেরোয়, চার কোণা, দৈবাৎ ত্রিকোণা। ফুল ১-২টি, কচি ডালের গোড়া থেকে বেলুনাকৃতির কলি আসে, দেখতে ভারি সুন্দর। পরিপূর্ণ ফুল ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত চওড়া, মেটে-হলুদ, পাপড়ির আগার দিক লাল, আড়াআড়িভাবে অনেকগুলো লাল দাগ, বেগুনি রঙের অল্প-স্বল্প রোম আছে, দলের কিনারের রোম সাদা। উৎকট গন্ধী। টবে চাষযোগ্য।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।