দুই টাকা দিয়ে এখন আপনি সারা বাংলাদেশ তো দূরে থাক সাথে সারা বিশ্বের আজব আজব সব খবর পাবেন একই সাথে। এমনই দুটি দৈনিক পত্রিকা এখন ঢাকার রাস্তার গুরুত্বপুর্ন মোড়গুলোতে সুবিধাবঞ্চিত শিশু হকারের হাত থেকে কিনতেই পারবেন। এখন তো এক টাকার কোণ দামই নাই। আর না হলে কি দোকানদার এর কাছ থেকে শুনতেই হয়- ভাই পরে নিয়েন। যদিও আর কখনও সে দোকানটাতে যাওয়া হবে কি না, তাই তো অনিশ্চিত! কিন্তু এক টাকা ফেরত না দেয়ার মতো ব্যাপারটিকে দুঃসাহস তো দূরে থাক পাত্তাই দেন না এখন বোধ হয় কেউ।
এই অধমও তা শুনে মেনে নেই। কি করার আছে আসলেই?হায়রে একটাকা! কদিন পর কি দেখবো- এক লাখ টাকার কোন দাম নেই!
সেই দুই টাকার পত্রিকার আবার বৈচিত্র্যময় সব হকার। নানান বয়সী হকারের মধ্যে বাচ্চা ছেলেই বেশি। মেয়ে শিশুরা করে কি না জানি না। সে দুই টাকার পত্রিকা আসলেই কি ভাল খবর দেয় নাকি বিভ্রান্তিমুলক খবর পরিবেশনা করে।
তা নিয়েই একটু জানতে দুটি পত্রিকাই পড়লাম। যাওয়ার সময় একটি আর আসার সময় আরেকটি। যাত্রা- আজিমপুর টু মহাখালী আবার গুলশান-১ টু আজিমপুর। দ্বিতীয় পত্রিকাটি যখন কিনি, শিশু হকারটির সাথে কথা বললাম মিনিট-খানেক।
প্রশ্ন: তুমি কি শুধু পত্রিকাই বিক্রি করো?
উত্তর: হ
প্রশ্ন: এইখানেই করো নাকি?
উত্তর: হ ( মনে হল বিরক্ত হয়েছে আমার ২য় প্রশ্নে)
প্রশ্ন: কয়টি পত্রিকা বিক্রি করো প্রতিদিন?
উত্তর: ৫০ থেকে ৬০টি।
ভাই টাকা দেন? ( ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে টাকা পরিশোধ করা আমার)
শেষ প্রশ্ন: তোমার কি লাভ হয় এই পত্রিকা বিক্রি করে?
উত্তর: ১৫০০ টাকা। ( এই বলে আর টাকাটি পকেটে ফেলে দে ছুট আরেক জায়গায়)
এরপর খানিকটা হিসেব করলাম। দিনে ৬০টি হলে মাসে ১৮০০টি পত্রিকা। ভার মানে সংখ্যাটি তো ভালোই। ১৮০০টি পত্রিকা বিক্রি করে শিশু হকারটি পাচ্ছে ১৫০০টাক।
কিন্তু খুব বেশি মানুষ যে তা কিনছে তা বলতে পারি না। আমি আমার চারটাকা দিয়ে কেনা পত্রিকা দুটি বাসায় নিয়ে এসেছি। হাজার হলেও চার চারটি টাকা দিয়ে দুটি পত্রিকা!
আরেকটি ব্যাপার পরিলক্ষিত হয়েছে তা হল- এই দুই পত্রিকাটিরই হকারগুলো সুবিধা-বঞ্চিত হলেও তাদের পোশাক এবং ব্যাবহার যথেষ্ট ভদ্র ট্রাফিক পয়েন্ট এর অন্য সব হকারদের তুলনায়।
পত্রিকাগুলোর সংবাদ কি ধরনের হতে পারে। তা নিয়ে আরেকদিন না হয় আসা যাবে।
যে ব্যাপারটি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ।
দুই টাকার পত্রিকা দ্বারা রাস্তার কিছু সুবিধা-বঞ্চিত শিশুদের একটি ভালো কর্মসংস্থান হয়েছে মনে হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।