কি বলব
হাজী মোহাম্মদ দানেশ দিনাজপুর জেলার সুলতানপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩১ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এম.এ. এবং ১৯৩২ সালে বি.এল. ডিগ্রি লাভ করে তিনি দিনাজপুরে আইন ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৩৮ সালে তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক কমিউনিস্ট পার্টির অঙ্গ সংগঠন কৃষক সমিতির সাথে সম্পৃক্ত হন এবং কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করেন। তার নেতৃত্বে দিনাজপুর জেলায় টোল আদায় বন্ধ ও জমিদারি উচ্ছেদের দাবিতে কৃষক আন্দোলন জোরদার হয়। এবং আন্দোলন কালে তিনি কারাবরণ করেন।
তিনি ১৯৪২ সালে নীলফামারী জেলার ডোমারে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় কৃষক সম্মেলনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। সম্মেলনের পরপরই তিনি গ্রেফতার হন এবং কারাভোগ করেন। এ ছাড়া বর্গাচাষীদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে তিনি উত্তরবঙ্গে তেভাগা আন্দোলন সংগঠিত করেন। হাজী মোহাম্মদ দানেশ ১৯৪৫ সালে মুসলিমলীগে যোগ দেন। কিন্তু তেভাগা আন্দোলনে নেতৃত্ব দান অব্যাহত রাখার জন্য ১৯৪৬ সালে তিনি মুসলিমলীগ থেকে বহিষ্কৃত হন।
১৯৪৬ সালে তিনি পুনরায় বঙ্গীয় সরকার কর্তৃক গ্রেফতার হন এবং ১৯৪৭ সালে মুক্তি লাভ করেন। এর পরই তিনি দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ইতিহাসের অধ্যাপক পদে যোগ দেন।
১৯৫২ সালে হাজী মোহাম্মদ দানেশ গণতন্ত্রী দল নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালের ডিসেম্বর মাসে গণতন্ত্রী দল যুক্তফ্রন্টে যোগ দেয়। যুক্তফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি ১৯৫৪ সালে দিনাজপুর জেলা থেকে পুর্ববঙ্গ আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক পূর্ববঙ্গ যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার পর তিনি গ্রেফতার হন এবং ১৯৫৬ সালে মুক্তিলাভ করেন।
১৯৫৭ সালে তিনি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং দলের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। এর পূর্বে তিনি গণতন্ত্রী দলের অস্তিত্ব বিলোপ করেন। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি হওয়ার পর তিনি পুনরায় কারা বরণ করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির পূর্ব পাকিস্তান শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৫ সালে পুনরায় কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন। এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন।
১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি জাতীয় গণমুক্তি ইউনিয়ন নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ১৯৮০ সালে এই দল বিলোপ করে গণতান্ত্রিক পার্টি নামে নতুন একটি দল গঠন করেন এবং দলের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে গণতান্ত্রিক পার্টি জাতীয় পার্টির সাথে একীভূত হয়ে যায়।
তিনি জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন জাতীয় কৃষক পার্টির প্রধান উপদেষ্টা নিযুক্ত হন। ১৯৮৬ সালের ২৮ জুন বরেণ্য এই কৃষক নেতা মৃতু্যবরণ করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।