আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নেবুলাইজার

Mahmood Khan

নেবুলাইজার কী? নেবুলাইজার কোনো ওষুধ নয়, এটি একটি বিশেষ ধরনের শ্বাস-প্রশ্বাসের ডিভাইস বা যন্ত্র যা ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যা, যেমন : অ্যাজমা, সিস্টিক ফাইব্রোসিস ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে অ্যাজমা বা শ্বাস-প্রশ্বাসের তরল ওষুধের মিশ্রণকে সিস্ট বা কুয়াশার মতো, অ্যারোসোল হিসেবে সরাসরি ফুসফুসে ইনহেল বা টেনে নেয়া হয়। সে জন্য এটি যেকোনো ধরনের ওষুধ বা ইনহেলার থেকে বেশি কার্যকর। কত ধরনের নেবুলাইজার আছে? সাধারণত দুই ধরনের নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। একটি হচ্ছে জেট নেবুলাইজার আর অন্যটি হলো আলট্রাসনিক নেবুলাইজার।

জেট নেবুলাইজারকে অ্যাটোমাইজার জেট বা কমপ্রেসার নেবুলাইজারও বলা হয়ে থাকে। এ ধরনের নেবুলাইজারে একটি অ্যারোসোল কমপ্রেসার ব্যবহার করা হয়, যা তরল ওষুধের ফোঁটাগুলোকে বাষ্পায়িত করে থাকে। অন্যদিকে আলট্রাসনিক বা মেশ নেবুলাইজারে ব্যবহার করা হয় হাই ফ্রিকোয়েন্সির সাউন্ড ওয়েব যা তরল ওষুধকে দ্রুত শ্বাসযোগ্য করে তোলে। নেবুলাইজারে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ নেবুলাইজার ব্যবহারকারীদের অবশ্যই জানা প্রয়োজন একটি নেবুলাইজারের কি কি যন্ত্রাংশ থাকে। একটি নেবুলাইজারে এয়ার বা নেবুলাইজার কমপ্রেসার, নেবুলাইজার কাপ, মাস্ক বা কাউথপিস এবং ব্লিম আই ড্রপার বা ওষুধ মাপার যন্ত্রাংশ থাকে।

তাছাড়া আরো থাকে টিউবিং, টিউবিং কালেক্টর, নেবুলাইজার ফিল্টার, রিচার্জেবল নেবুলাইজার ব্যাটারি প্যাক, রিপ্লেসমেন্ট পাউডার অ্যাডাপটার ইত্যাদি। নেবুলাইজারে ব্যবহৃত ওষুধপত্র অ্যাজমা অ্যাটাক দেখা দিলে দ্রুত অবস্থার উন্নতির জন্য এলবিউটেরল জাতীয় ওষুধ দেয়া হয়ে থাকে। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শানুযায়ী অ্যাজমা রোগীকে নেবুলাইজারে ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। নেবুলাইজারের কাজ কি? অ্যাজমা বা ফুসফুসের যেকোন সমস্যায় নেবুলাইজারের কোনো বিকল্প নেই।

এক্ষেত্রে নেবুলাইজার যা করে থাকে তা হলো- শ্বাসনালীর ইনফ্লামেশন হ্রাস করে। ব্রঙ্কিয়াল সোয়েলিং কমায়। মিউফাসের অতিরিক্ত উৎপাদন কমিয়ে আনে। সর্বোপরি, শ্বাসনালীর ফুলে যাওয়া বা সংক্রমণকে দ্রুত সারিয়ে তোলে। নেবুলাইজার অ্যাজমা রোগীর জীবন বাঁচাতে অপূরণীয় মাধ্যমে হিসেবে কাজ করে।

নেবুলাইজার ব্যবহারের নিয়ম নেবুলাইজার ব্যবহার করলেই হবে না, এর চিকিৎসার সাফল্য নির্ভর করে নেবুলাইজারের যথাযোগ্য ব্যবহার ও যত্নের ওপর। এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। প্রত্যেকবার নেবুলাইজার ব্যবহারে যথেষ্ট সময় দেয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নেবুলাইজারের ওপর নির্ভর করে ৫ থেকে ১৫ মিনিট সময় ব্যবহার করা যায়। ব্যবহারের সময় নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন যে, নেবুলাইজারে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশসমূহ সম্পূর্ণ নিরাপদ ও ব্যবহারের জন্য সঠিকভাবে সংযোজিত।

নেবুলাইজার ব্যবহারের সময় আরামদায়ক স্থান বেছে নিতে হবে, প্রয়োজনে টিভি দেখুন কিংবা গান শুনুন। মাউথপিসের চেয়ে মাস্ক ব্যবহার করা বেশি নিরাপদ। প্রথমে ধীরে গভীরভাবে মাস্কের ভেতর থেকে শ্বাস নিতে হবে যা ছেড়ে দেয়ার আগে ২-৩ সেকেন্ড ধরে রাখতে হবে। ততক্ষণ নেবুলাইজার ব্যবহার করা উচিত যতক্ষণ না ওষুধ মিশ্রণ শেষ হয়। নেবুলাইজার ব্যবহারের সময় কোনো ধরনের তন্দ্রাচ্ছন্ন কিংবা অসুস্থতা বোধ করলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।

হাড় কাপানো শীত যাতে অ্যাজমা রোগীদের মৃত্যুর কারণ না হয়, সে জন্য নেবুলাইজার ব্যবহারে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। অ্যাজমা আক্রান্ত বয়স্ক কিংবা শিশুদের জন্য নেবুলাইজার ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। মনে রাখা প্রয়োজন, এখন পর্যন্ত নেবুলাইজার ব্যবহারের কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া প্রমাণিত হয়নি। নেবুলাইজার ব্যবহার একটি সাধারণ বিষয়। ওষুধ খাওয়ার বদলে শুধু সরাসরি ওষুধের মিশ্রণকে বাষ্পাকারে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ব্যবহার করতে হয়।

তাই ভয়-ভীতি সরিয়ে অ্যাজমা রোগে কষ্ট না পেয়ে নিজে নেবুলাইজার ব্যবহার করুন এবং সন্তানকেও নেবুলাইজার ব্যবহার করতে দিন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.