আমি ওসামা বিন নূর। আমি ভালবাসি নিজে সচেতন হতে এবং অন্যদের সচেতন করতে আর ভালবাসি লেখালেখি, সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ, শিশুদের কিছু করা, কমিউনিটি সার্ভিস ইত্যাদি। আমি বাস্তবতায় বিশ্বাস করি। মানুষের জন্য এমন কিছু করতে চাই যেন তারা আমাকে নিয়ে অহংকার করতে পারে। আ
দিনটি ২৫ই ডিসেম্বর ।
রাত ১০ টা থেকে শুরু । মাইক্রো করে মিরপুর নিয়ে গেলাম শীত বস্ত্র । প্রায় ১মাস ব্যাপি মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে সংগ্রহ করেছি ৫০০০ হাজারেও অধিক পুরনো কাপড় । আজ রাতেই সে কাপড় গুলো আমরা বন্ধুরা বিতরণ করব । ক্রিসমাসের আনন্দে বিশ্ববাসী যখন নানান ক্রিসমাস পার্টি, ডিজে পার্টি, কনসার্ট এবং বারবিকিউ তে বেপোরোয়া আর ঠিক সেই মুহুর্তে আমরা ঢাকার মিরপুর এলাকায় রাস্তার পাশে শীতের কাপুঁনিতে কুজো হয়ে শুয়ে থাকা মানুষদের পাশে দাড়াই ।
চেষ্টা করি নিজের সামর্থটুকু তাদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার । তাদের কষ্টগুলো ভাগ করে নেয়ার । তাদের দু:খ গুলো বুঝার ।
আমরা ২৩ জন বন্ধু এবং বড় ভাইয়াদের নিয়ে মিরপুর আসিমের বাসায় সকলে জড় হতে থাকি । একে একে রাত ১১টার আগে সকলে উপস্থিত হল ।
আসিমের আম্মু আমাদের সকলকে নাস্তা খাওয়ালেন । এখন আমাদের মূল কাজের পালা । আসিমকে দেয়া হল পুরো টিমেল নেতৃত্ব । মুশফিক আমাদের কোর্ডিনেট করছে । আর আমি পরামর্শক হয়ে তাদের কিছু পরামর্শ দিচ্ছিলাম ।
হঠাৎ মুশফিকের মোবাইলে রিমাইন্ডার বেজে উঠল । তখন ২৬ই ডিসেম্বর ঠিক ১২.০১ মিনিট । সকলে গেয়ে উঠল হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ, হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ ওসামা । সত্যিই আমি অবাক এবং এতই আনন্দিত যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবনা । আজ আমার বিশেষ এই দিনটি শুরু হচ্ছে অসহায় মানুষদের পাশে দাড়িয়ে, তাদের কে সহায়তার মাধ্যমে, তাদের দু:খ বেদনার সঙ্গী হয়ে ।
ক'জনেরই বা এ ভাগ্য হয় ।
মিরপুর পূররী সিনেমা হল থেকে বিতরণ শুরু করি দুটি দল ভাগ হয়ে । একটি দল রাস্তার বাম পাশ এবং আর অন্যটি রাস্তার ডান পাশে । রাস্তার দুপাশে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে থাকা মানুষ গুলোকে শীতের কাপড় দিতে থাকি ।
একে একে আমরা প্রায় ৫০০ বেশী মানুষকে শীতের কাপড় দেই ।
পুরবী সিনেমা হল থেকে শুরু করে শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম হয়ে সনি সিনেমা হল পর্যন্ত শীতের কাপড় বিতরণ করি । মশারি ও চাদরহীন যারা রাস্তায় শুয়ে ছিল তাদের কে আমরা কম্বল দেই । রাত ৪.০০টা তখন আমাদের শীতের কাপড় বিতরণ শেষ । সনি সিনেমা হলের সামনে গোল চত্তর দাড়িয়ে সকলে এ সুরে গেয়ে উঠি ,
' আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি ।
চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস আমার প্রাণে ।
আমার প্রাণে বাজায় বাশি ।
ওমা ফাগুনে তর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে .
মরি হায়, হায় রে-
ওমা অগ্রানে তর ভরা ক্ষেতে আমি কি দেখেছি মধুর হাসি.....'
সত্যিই কি আজ আমরা মানুষের জন্য কিছু করতে পেরেছি? আমি জানিনা এর উত্তর । তবে শীতের কাপড় পেয়ে সেই বৃদ্ধ দাদুর হাসিই বলে দেয় তার আনন্দটুকু, তার পাওয়াটুকু আমাদের জন্য তার আশির্বাদটুকু ।
অবশেষে আমরা সবাই ডিওএইচ বারিধারায় মুশফিকের বাসার ছাদে যাই । অধির আগ্রহে তাকিয়ে থাকি পূর্বাকাশে ।
সবাই নিশ্চুপ । সুদূর দিগন্তে উদিত হচ্ছে সূর্য্য । আলোকিত হতে থাকলো নগর ।
ধন্যবাদ আছিম, রুশক, তানযিম, রিজওয়ান, হিয়া, স্বপনীল, শাহিল, আমেনা, মুশফিক, কাব্য, জিসান, বাধনসহ সকল বন্ধুদের ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।