পথ হারা পাখি কেঁদে ফিরি একা!!! আমার শ্রদ্ধেয় নানা আব্দুর রশিদ সরদার। যার পেন্সিল স্কেচে লান্ড স্কেপে আর্টপেপারে আঁকা ছবি দেখলে চারুকলার শিক্ষকও অবাক হতে বাধ্য। ৩০এর কম বয়সে ৩টি মেয়ে একটি ৯মাস বয়সের ছেলে আর ননীর গর্ভে একটি মেয়ে রেখে পাকিস্তানী হানাদারদের হাতে শহিদ হয়েছিলেন। ঝালকাঠী শহরের পশ্চিম চাঁদকাঠীর সরদার বাড়ীর সন্তান আমার নানা আব্দুর রশিদ সরদার। তৎকালীন ঝালকাঠী সহরের অন্যতম প্রধান রাজাকার মৃতঃ আব্দুর রাজ্জাক চেয়ারম্যানের সহায়তায় হানাদার বাহিনীর হাতে তাকে তুলে দেয়া হয়।
২০শে মে তাঁকে চোখ বেধে গুলি করে হত্যা করা হয়। ধিক্কার সেই রাজাকারদের আজ আমার নানার আত্মা সহ শত লক্ষ অযুত কোটি আত্মা শান্তি পেয়েছে। যার স্বজন হারায়নি তিনি আজ কি করে বুঝবেন এক মুসলিম ভাই হয়ে অন্য মুসলিম অমুসলিম বা বাঙালী ভাই কে কি করে তুলে দিতে পারে পাকিস্তান দেশটির হারামী মানুষদের হাতে। আজ এই ফাঁসীকে ছাইদী নামের একজন সুকন্ঠের অধীকারী বক্তার ফাঁসী ভাবলে ভুল হব। মনে করতে হবে সেই ১৯৭১ইং সালে ৩০বছর বয়সী দেলু রাজাকারের ফাঁসী হয়েছে।
যে দেলু রাজাকার ধর্মের ঢাল ব্যবহার করে কন্ঠ বেঁচে জীবিকা নির্বাহ করে তার আসল পরিচয় লুকাতে চেয়েছিলো সেই সাইদীর বিচার হয়েছে। আজ আল্লাহ্ শত শত শহীদ পরিবারের আকুতি কবুল করেছেন।
নানা দেখো!!! তোমায় যারা মেরেছে তাদের বেঁচে থাকার অধীকার যে এই ভূমিতে হবে না তা স্পষ্ট হয়েছে। নানা তোমার আজ একটি নাতি না কোটি কোটি নাতি তোমার ঘাতকদের ফাঁসির দাবিতে কোনো আপোষ করে নি। সেই ১৯৭১ইং এর রাজাকার মৃতঃ আব্দুর রাজ্জাক বা দেলু রাজাকার নামের মানুষদের মতো তোমার নাতিরা খুনিদের সাথে আপোষ করে নি।
জানি তুমি কোনোদিন আসবে না তারপরও মনকে একটু সান্তনা দিতে দোষ কোথায়? নানা তোমার মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট আমাদের দরকার নেই। যখন দরকার ছিলো মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট বা মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা তখন এই দেশ ছিলো সেই রাজাকারদের দখলে। আজ আমরা স্বচ্ছল। আজ অনেক শহীদ পরিবার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে- এখন আর এই ফাঁসীর চেয়ে বড় সার্টিফিকেট আর নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।