এ নিয়ে তৃতীয়বার ঘটল ঘটনাটা। বিশ্বকাপের টিকিটের তিন রকমের হিসাব দিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কাল সংবাদ সম্মেলন করে সর্বশেষ হিসাবটি দিলেন বোর্ড সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল।
গত ২৭ ডিসেম্বর সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বোর্ড বলেছিল, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ২৫৫০৯টি আসনের মধ্যে ১২৭০টি সৌজন্য টিকিট দেওয়া হবে আইসিসিকে। বাকি ২৪২৩৯টি টিকিট বিক্রি করা হবে।
একইভাবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের জন্য ম্যাচপ্রতি ১৬৫৭৯টি এবং প্রস্তুতি ম্যাচের ভেন্যু ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের জন্য ১৬৪৭২টি টিকিট বিক্রি হবে বলে জানানো হয়েছিল। এর দুই দিন পর স্থানীয় আয়োজক কমিটির (এলওসি) টিকিট অ্যান্ড সিটিং কমিটি জানায়, শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের জন্য ব্যাংক থেকে বিক্রি হবে ম্যাচপ্রতি ১৫ হাজার টিকিট। বাকি টিকিটের মধ্যে সৌজন্য এবং বিশেষ ব্যবস্থায় বিক্রি হবে ৭৪৪১টি। কাল বোর্ড সভাপতি জানালেন, বিসিবি আইসিসি ছাড়া আর কাউকেই কোনো সৌজন্য টিকিট দেবে না! ব্যাংকের কাউন্টার থেকেই বিক্রি হবে ১৫১২৭টি টিকিট। নতুন হিসাবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ২৫১৬৭।
মোস্তফা কামাল বলেছেন, মিরপুর স্টেডিয়ামের ২৫১৬৭টি আসনের মধ্যে ১৯০০টি আসনেই দর্শকদের বসানো হবে না সাইটস্ক্রিনের জন্য! বাকি ২৩২৬৭টি আসন থেকে ৩২৭০টি টিকিট দিয়ে দিতে হবে আইসিসিকে। ১২৭০টি সৌজন্য টিকিট হিসেবে, বাকি ২০০০টি তারা কিনে নেবে। এ ছাড়া বিশেষ সুবিধায় ঢাকার ৭২টি ক্লাব কিনবে ১৭৪০টি টিকিট এবং ৬৪টি জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও ৭টি বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাকে একই সুবিধায় দেওয়া হবে আরও ২১৩০টি টিকিট (প্রত্যেককে ৩০টি করে)। বিসিবি সভাপতি এবং ২৪ পরিচালক নেবেন ম্যাচপ্রতি ১৬টি করে মোট ৪০০টি টিকিট (দুটি করে সৌজন্য, ১৪টি কিনে)। হসপিটালিটি বক্সের জন্য আবেদনপত্রের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে ৪৮২টি টিকিট।
এই হিসাব অনুযায়ী ম্যাচপ্রতি মোট টিকিটের মধ্যে ৮০২২টি টিকিটই থেকে যাবে সাধারণ দর্শকদের নাগালের বাইরে। বাকি ১৫২৪৫টি টিকিট (বোর্ড সভাপতি যদিও বলেছেন ১৫১২৭টি) আজ থেকে বিক্রি হবে সারা দেশের ৮০টি বুথে। একইভাবে চট্টগ্রামের প্রতিটি ম্যাচের জন্য বুথে যাবে ১৪০২১টি টিকিট এবং ফতুল্লার প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য ১৪৭৩০টি। প্রস্তুতি ম্যাচ দেখতে হলে জেলা এবং বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার লোকজনকে বুথ থেকে টিকিট কাটতে হবে। এর পরও যদি কোনো টিকিট অবিক্রীত থেকে যায়, সেসব নিলামের মাধ্যমে বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন বোর্ড সভাপতি।
মোস্তফা কামালের নতুন হিসাবেও মন্ত্রী-সাংসদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, ক্রীড়া ফেডারেশন, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদক, দূতাবাস, সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটার, বিসিবির কাউন্সিলরদের জন্য টিকিট থাকছে। বোর্ড সভাপতি এগুলোকে ‘সৌজন্য টিকিট’ না বললেও জানা গেছে ব্যাংকের মাধ্যমে বোর্ডই বিতরণ করবে এসব টিকিট। সভাপতি এই খাতের টিকিটের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলেননি, টিকিটগুলো কাদের ভাগ থেকে যাবে, বলেননি সেটাও। তবে আশঙ্কা, ভিআইপিদের টিকিটগুলো হয়তো সাধারণ দর্শকদের ভাগ থেকেই টেনে নেওয়া হবে।
বোর্ড সভাপতি যতই আশ্বাস দিন, ‘শতভাগ সততার মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করা হবে।
একটি টিকিট নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টির সুযোগ নেই’, বিশ্বকাপের টিকিট এদিক-সেদিক হওয়ার আশঙ্কা থাকছেই। তবে তিনিও স্বীকার করেছেন, ‘দর্শকদের যা চাহিদা তার ১০ ভাগের ১ ভাগ আসনও নেই স্টেডিয়ামগুলোয়। সবার চাহিদা আমরা পূরণ করতে পারছি না। সবাইকে খেলা দেখার সুযোগ দিতে পারব না। সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের ক্ষমাপ্রার্থনা ছাড়া আর কিছু করার নেই।
’
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী-সাংসদ বা সরকারি কর্মকর্তাদের কেন টিকিট দিতে হবে সে প্রশ্নও উঠেছে। বোর্ড সভাপতির উত্তর, ‘আমরা সবাইকে টিকিট দেব না। যারা মাঠে এসে নিয়মিত খেলা দেখেন তাঁদের দেব। আর জনপ্রতিনিধিরা কেন টিকিট পাবেন—এই প্রশ্ন করলে উত্তর দেওয়ার কিছু নেই। আমরা যে কাজই করি, তাতে তাঁদেরও প্রচ্ছন্ন ভূমিকা থাকে।
তাঁরা বিভিন্ন ব্যাপারে আমাদের সাহায্য করে থাকেন। ’ আইসিসিকে টিকিট দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বিসিবির সিনিয়র সহসভাপতি মাহবুবুল আনাম বলেছেন, ‘আইসিসির সঙ্গে ছয় বছর আগে আমরা বিশ্বকাপের স্বাগতিক হওয়ার জন্য যে চুক্তি করি সেখানেই তাদের এই পরিমাণ টিকিট দেওয়ার কথা ছিল। আর ভারত-শ্রীলঙ্কায়ও একই পরিমাণ টিকিট আইসিসিকে দিচ্ছে। ’
Akber Rabby
+8801717877194
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।