এই ব্লগের সব লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সরু গলির মুখে দু দিক থেকে দুটো রিক্সা ঢুকতেই একসাথে দুটোর চাকা জড়িয়ে যেতেই শব্দ করে উঠলো কট কট কট কট কট .... বিষ্ফোরিত চোখে দুজন দুজনের রিক্সার এই হাল দেখে কিছুক্ষন চুপচাপ ... হঠাৎ যেন আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ঘটলো ...
>> এ্যই রিক্সা দেখে চালাতে পারো না ?
অন্যজন ও যেন চুপ থাকতে পারলো না , বলেই বসলো
== রিক্সা কথা বলতে পারে না ...
>> আপনার সাথে কথা বলছি না তো আমি
== আমিও আপনার সাথে কথা বলছি না ...
>> তাহলে আমাকে ঐ কথা বললেন কেন ?
== কোন কথা বলেছি ?
>> ঐ যে , রিক্সা কথা বলতে পারে না ... এটা বললেন কেন ?
== ওটা যে আপনাকেই বলেছি টা বুঝলেন কিভাবে ?
>> আমাকে ছাড়া আর কাকে বলেছেন শুনি একটু ?
== একটা বোকা মানুষকে ...
>> আপনি একটা বাচাল ছেলে
== কি ?
>> বাচাল ছেলে ...
== ডাইনী মেয়ে ...
ঘাড় ঘুরিয়ে ভ্যাবলার মত তাকিয়ে থাকা রিক্সাওয়ালা দুজনকে ওরা দুজনে একসাথে ই ধমক দিলো ... " দাড়িয়ে আছেন কেন, চালান রিক্সা "
কিছুক্ষন পর ... কফি ওয়ার্ডের সামনে প্রথমে মেয়েটির তার পিছেই ছেলেটির রিক্সা থামে ... রিক্সার ভাড়া দিতে দিতে মেয়েটি বেশ জোরেই বলে ওঠে
>> ছেলেগুলো আজ বড় ছ্যাচড়া হয়ে গিয়েছে , মেয়ে দেখলেই পিছে পিছে ঘুরে বেড়ায় ... কাঠালের আঠা
== যেই না চেহারা , নাম তার পেয়ারা ...
>> খাটাশ !!
== মাকাল ফল ...
ঘুরে গিয়ে মেয়েটি বিড়বিড়িয়ে বলে -- আর যদি এ সামনে পড়েছে , তো এইটারে পান্তা ভাত দিয়ে গাল পুড়ায়ে দিবো ... ছেলেটিও রিক্সা ভাড়া দিতে দিতে মনে মনে বলে -- আর যদি এই পটপটি সামনে পড়েছে তো বিনা কেরোসিনে বাত্তি জ্বালায়ে দিবো ...
কফি ওয়ার্ডের ভিতরে পা দিতেই বাবা মা এর পাশে থেকে একটি পরিচিত মুখ হৈ হৈ করে উঠলেন
~~~ আরে সন্ধ্যা মামনি এসে পড়েছ ? ... তুমি তো অনেক বড় হয়ে গিয়েছ ... কত বছর পরে দেখলাম তোমাকে , আমাকে চিনতে পারছো ?
>> আরে মজিদ আংকেল না ? আমাদের পাশের ফ্লাটে থাকতেন ? ... কত্তদিন পরে দেখা , কবে এলেন দেশে ?
~~~ এইতো গত পরশু রাতে
>> এত্ত বছর পরে এসে দু দিন পরে মনে পড়লো আমাকে ?
~~~ কি করবো বলো ? তোমার আব্বুই তো বললো আজকে সবাই একসাথে লান্চ করি ... আমার কিন্তু দোষ নেই ...
>> আংকেল আমার গিফট কৈ ?
~~~ আমরা তো বাইরে থেকে এসেছি, তাই সাথে আনতে পারিনি ... ওটা তুহিন নিয়ে আসছে ...
>> তুহিন কে ?
~~~ গোল্টুসের কথা মনে নেই ?
>> ওওও শয়তানটা এসেছে নাকি আপনাদের সাথে ?
~~~ এসেছে মানে , সে ই তো তার শুটকীর জন্য নিজে গিফট কিনে এনেছে ..... (একটু ঘাড় ঘুরিয়েই তিনি আবার বললেন) ঐ তো ... তুহিন এসে পড়েছে ...
তুহিন কফি ওয়ার্ল্ডে ঢুকেই বাবা মার সাথে আরো কয়েকজনকে দেখে টেবিলের কাছে আসতেই তার দিকে উল্টো হয়ে বসে থাকা একজনের চেহারা দেখতেই থমকে গেল ... অতঃপর বিস্ফোরিত চোখে একে অপরের দিকে তাকিয়ে রইলো ... গোল্টুস আর শুটকী ....
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।