আমার সোনার দেশ, বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর নাম করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আবু বকর ছিদ্দিক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি নূরজাহান গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান।
গত বুধবার প্রতারণার শিকার মাসুদ রানাসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদর দপ্তরের প্রবাসী সহায়তা সেলে আবু বকর ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। একই অভিযোগে জাকির হোসেন নামের আরেক ভুক্তভোগী উত্তরা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন (জিডি নং ৮৯৭)।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক মো. শাহ আলম প্রথম আলোকে জানান, ‘কোনো জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রতারণার আশ্রয় নিলে আমরা তার লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করে থাকি।
পাশাপাশি নিয়মিত মামলা দিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার ও আইনানুগ অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে।
প্রতারণার শিকার একাধিক ব্যক্তি প্রথম আলোকে জানান, আবু বকর প্রতারিত হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে এক লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। প্রতারিত হওয়া ২৫ ব্যক্তি একত্রিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একটি নামকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রও রয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের কয়েকজন জানান, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট দেখে তাঁরা আবু বকর ছিদ্দিকের কথা বিশ্বাস করেছিলেন।
ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী নূরজাহান গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং তখন থেকেই ঝামেলামুক্তভাবে কানাডা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠিয়ে আসছে। এর বাইরে প্রতিষ্ঠানটি উত্তরা, খিলক্ষেত, গুলশান ও বারিধারায় জায়গাজমি কেনাবেচা এবং আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায় জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওয়েবসাইটে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ছাত্র ও দক্ষ লোকজন বিদেশে পাঠানোর কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন চেয়ারম্যান আবু বকর।
প্রতারণার শিকার মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, আবু বকর তাঁকে বৈধভাবে কানাডায় সেবাদাতা পদে পাঠানো হবে বলে গত ৭ জানুয়ারি এক লাখ টাকা নেন। পরে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী কানাডা পাঠাতে ব্যর্থ হয়ে নিউজিল্যান্ড পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন।
এ দফায় প্রথমে সাড়ে তিন লাখ টাকা ও পরে ২৯ আগস্ট আর পাঁচ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন। প্রতিবারই আবু বকর অঙ্গীকারনামায় সই করে টাকা নিয়েছেন। মাসুদ রানা আরও জানান, ১১ মাস ধরে ফ্লাইট পাওয়া যাচ্ছে না, এমন অজুহাতে ওই ব্যক্তি তাঁকে হয়রানি করছিলেন। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে তিনি আবু বকরের বারিধারা ডিওএইচএসের অফিসে টাকা ফেরত চাইতে আসেন। সেখানে পৌঁছে দেখেন, অফিসটি তালাবদ্ধ এবং সাইনবোর্ড খুলে রাখা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে তিনি আরও ২৫-৩০ জনকে অপেক্ষা করতে দেখেন।
মাসুদ রানা ছাড়াও জোসেফ রোজারিও, মো. জাকির হাসান, মাহমুদা নাজনীনের কাছ থেকেও বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি দশ লাখ টাকা করে নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অভিযোগ করেছেন। উত্তরা মডেল থানায় জিডি করা মো. জাকির হোসেনের কাছ থেকে আবু বকর ছিদ্দিক সাড়ে ছয় লাখ টাকা নেন।
প্রতারণার শিকার ১০-১২ জন অফিসে গিয়ে এবং মুঠোফোনে আবু বকরের সন্ধান না পেয়ে সিরাজগঞ্জে তাঁর গ্রামের বাড়ি শাহজাদপুর উপজেলার শ্রীফলতলায় যান। কিন্তু তাঁর পরিবারের লোকজনও আবু বকর ছিদ্দিকের কোনো খোঁজ দিতে পারেনি
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।