শামুক www.fb.com/shamuk.tk
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুটবলার ‘রপ্তানিকারক’ দেশ কোনটি? ভুলেও আর ব্রাজিলের নামটি মুখে আনবেন না। যে জায়গাটি এক দশক ধরে ‘কবজা’ করে রেখেছিল ব্রাজিল, সেটি এখন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার দখলে। ইউরো আমেরিকাস স্পোর্টস মার্কেটিং নামের এক প্রতিষ্ঠান হিসাব কষে দেখাচ্ছে, ২০০৯ ও ২০১০ সালে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আর্জেন্টিনার কিশোর-তরুণেরা ফুটবল খেলায় পাড়ি জামিয়েছে দেশের বাইরে। ২০০৯ ও ২০১০ সালে যেখানে আর্জেন্টিনার প্রায় এক হাজার ৮০০ কিশোর-তরুণ ফুটবলার বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে, সেখানে ব্রাজিলের সংখ্যাটা আর্জেন্টিনার চেয়ে চার শ কম—এক হাজার ৪০০!
ব্রাজিলকে হটিয়ে আর্জেন্টিনার এই শীর্ষে ওঠাটাকে হয়তো গর্বের দৃষ্টিতেই দেখবেন আর্জেন্টিনার ফুটবলের সমর্থকেরা। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়নটা অন্য।
টাকার লোভে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হওয়ার আগেই আর্জেন্টিনার কিশোর-তরুণ ফুটবলারদের বিদেশে পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ব্যাপারটির দিকে ইঙ্গিত করে আর্জেন্টিনার সাবেক ফুটবলার এবং প্রথম বিভাগের ক্লাব আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের কোচ আড্রিয়ান ডমেনেখ বলছেন, কম বয়সেই বাইরের বিভিন্ন ক্লাবে যাওয়া কিংবা খেলা, পেশাগত দিক থেকে মোটেও লাভজনক নয়। এতে তারা আরও পিছিয়ে পড়ে। কারণ, যারা বাইরে পাড়ি জমায়, তাদের অধিকাংশেরই ভালো ক্লাবে ঠাঁই হয় না।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মতো দেশে ফুটবলাররা বড় সম্পদ।
পরিবারের তো বটেই, ক্লাবেরও। ইউরো আমেরিকাস স্পোর্টস মার্কেটিংয়ের মুখপাত্র জেরার্ডো মোলিনার ভাষায়, ‘আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের ক্লাবগুলোর রাজস্বের প্রধান উৎসই হলো এই ফুটবলাররা। আরও খোলসা করে বললে, আর্জেন্টিনার অধিকাংশ ক্লাবই ঋণগ্রস্ত। তাদের লক্ষ্যই থাকে মৌসুম শেষে কোন কোন ফুটবলারকে দ্রুত বেঁচে দেওয়া যায়!’
এই নীতিতে ক্লাবগুলো উপকৃত হলেও আর্জেন্টিনার ঘরোয়া ফুটবল পড়ছে মহাবিপাকে। অন্যান্য দেশে যখন শুধু ক্লাবগুলোই বাইরের দেশে ফুটবলার রপ্তানি দেখভাল করে, সেখানে আর্জেন্টিনায় ক্লাবের পাশাপাশি ব্যক্তিগত একাডেমিগুলোও তাদের ফুটবলারদের দেশের বাইরে খেলতে পাঠায়।
তবে ব্রাজিল এদিক থেকে বেশ শৃঙ্খলিত। ক্লাবগুলো তাদের নির্দিষ্ট এজেন্টের মাধ্যমেই কাজটি করে থাকে। ক্লাবের বাইরে কোনো লেনদেন নেই।
গত পাঁচ বছরে বাইরের ক্লাবগুলোতে আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের রপ্তানির হার বেড়েছে প্রায় ৮০০ শতাংশ! যাদের অধিকাংশই আবার তরুণ বা কিশোর ফুটবলার। এমনও হয়, আর্জেন্টিনার প্রথম বিভাগে খেলার আগেই ১৫-১৬ বছর বয়সী ফুটবলাররা পাড়ি জমায় ভিনদেশে এবং ফলে যথেষ্ট পরিমাণে ফুটবলীয় মেধা ও প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও তাদের ক্যারিয়ার আঁধারেই ঢাকা থাকে।
আর সেখান থেকে একজন লিওনেল মেসি বা তেমন কোনো ফুটবলার হয়তো বেরিয়ে আসে কালেভদ্রে।
আর্জেন্টিনায় ফুটবল গরিবের খেলা। অধিকাংশ ফুটবলারের পরিবার চেয়ে থাকে ফুটবলার ছেলেটির দিকে। তাই ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো যখন কড়কড়ে টাকার মুলা ঝোলায়, ফুটবলাররা আর দ্বিতীয় কিছু চিন্তা করে না সংগত কারণেই। তবে এদের অধিকাংশই সেই ক্লাবগুলো থেকে ফিরে আসে ১৮-১৯ বছর বয়সে।
সাবেক ফুটবলার আড্রিয়ান ডমেনেখের মতে, ‘এর ফলে শুধু একজন ফুটবলারই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়, জাতীয় দলও হারিয়ে ফেলে সম্ভাবনাময় একটি তরুণকে। ’
ওয়েবসাইট অবলম্বনে মাহফুজ রহমান
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।