আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাই বিবেকের জাগরণ



১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ। দিনটি ছিল বৃহস্পতি বার। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। এখন আশা করছি,অচিরেই জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ সকল হত্যাকান্ডের বিচার হবে।

স্বাধীনতার ৪০ শে পা দিয়ে আজ আমরা ৩৯ বছর আগের দিনটিতে ফিরে যাই আর নতুন করে আশায় বুক বাঁধি। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুর্বনজয়ন্তীতে সফল এক বাংলাদেশকে দেখবে সারা বিশ্ব। অবশ্যই বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে-প্রবলভাবে-প্রখরভাবে। আর একটা কথা আমি খুব জোর দিয়ে বলতে চাই-বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের নয়নমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আজ যেমন স্বাধীনতার আস্বাদনকারী তেমনি প্রতিটি মানুষকে অবদান রাখতে হবে গঠনমূলক কাজে।

... সুন্দর উজ্জ্বল এক বাংলাদেশ গঠন করে বিশ্বকে জানিয়ে দিতে হবে আমরা বেঁচেছি কঠোর লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। আমরা বেঁচে থাকব-প্রবলভাবে-প্রখরভাবে। পাকিস্তানি মিলিটারির উদ্যত অস্ত্রকে উপেক্ষা করে ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষনটির কথা আমরা কেউ ভুলতে পারব? "এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের মানুষ যে যেখানে আছেন,আপনাদের যা কিছু আছে তা দিয়ে সেনাবাহিনীর দখলদারীর মোকাবিলা করার জন্য আমি আহবান জানাচ্ছি।

পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলাদেশের মাটি থেকে উৎখাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আপনাদেরকে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। "(স্বাধীনতার ঘোষনা সংবলিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাণীটি সমগ্র বাংলাদেশে প্রচারের জন্য ২৫শে মার্চ মধ্যরাত অর্থাৎ ১৯৭১-এর প্রারম্ভে(তৎকালীন)ইপিআর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে চট্রগ্রামে প্রেরন করা হয়েছিল। ) ৭৫ এর পর পুরো দেশটিকে একটা অন্ধকার জগতের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। আমরা খুব ধীরে ধীরে সেখান থেকে বের হয়ে আসছি। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল (স্যার) বলেন- নতুন প্রজন্ম শুধু যে দেশকে ভালোবাসে তা নয়,মুক্তিযুদ্ধকেও তারা হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারে।

তাই গত নির্বাচনে যখন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের অঙ্গীকার করা হয়েছিল তারা(নতুন প্রজন্ম)সাগ্রহে মহাজোটকে নির্বাচিত করে দেশ চালানোর দায়িত্ব দিয়েছে। তারা এখন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে আছে বিশ্বাসঘাতক দেশদ্রোহী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখার জন্যে,গ্লানিমুক্ত মাতৃভূমিকে ফিরে পাওয়ার জন্য। মার্কিন গায়িকা জোয়ান বায়েজ ১৯৭১-এ বাংলাদেশ নিয়ে একটি গান বেঁধেছিলেন। আশ্চর্য সে গানের কয়েকটি লাইনঃ "The story of Bangladesh/Is an ancient one again made fresh/By blind men who carry out commands/Which flow out of the laws upon which nation stands/which is to sacrifice a people for a land". ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের মাটিতে সংঘটিত হয় বটে,কিন্তু সে যুদ্ধের সৈনিক ছিল সারা বিশ্বে। যেমন- ফরাসি লেখক আন্দ্রে মালরো,মার্কিন কবি এ্যালেন গিনসবার্গ,ব্রিটিশ রাজনীতিক পিটার শোর,মাদার তেরেসা,ডেইলি টেলিগ্রাফের সাংবাদিক ক্লেয়ার হলিং ওয়ার্থ,প্রতিবেশি দেশ ভারত,লন্ডন ও প্যারিসের ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক,মার্কিনিরা।

বাঙ্গালির মুক্তিযুদ্ধ এভাবে হয়ে ওঠে সারা পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের নিজেদের লড়াই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে আমরা যখন গ্লানিমুক্ত হতে পারব,দেশটিকে যখন স্বপ্নে দেশের দোরগোড়ায়নিয়ে যেতে পারব,তখনই আমাদের ইতিহাস পূর্ণাঙ্গতা পাবে। কাজেই আমাদের বিবেককে সব সময় জাগ্রত রাখতে হবে। যার বিবেক সবসময় জাগ্রত থাকে সে কখনও খারাপ কাজ করতে পারে না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।