আমরা জাতীয় প্রগতির রাজনীতি চাই।
পলিটিকস অব ন্যাশনাল প্রগ্রেস!
আমাদের উন্নয়ন দরকার।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে আরো।
বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হবে।
শিল্প মালিকের বাড় বাড়ন্ত প্রয়োজন।
মধ্যবিত্ত'র আয় বাড়াতে হবে।
প্রচুর রপ্তানি দরকার আমাদের।
প্রচুর রপ্তানিমুখী নারী-মেশিন দরকার আমাদের।
আমাদের দর্জির দোকান গুলিতে প্রচুর নারী মেশিন চাই।
ওরা পেছনে রেখে এসেছে নিরন্ন গ্রাম, মন্বন্তর ও
হাভাতে আঁতের মোচড়
বিনা মজুরিতে কামলা মাতারি জোগাড়ের নিকাহনামা
ওরা পেছনে রেখে এসেছে মৌসুম শেষে এক তালাক,
দুই তালাক, তিন তালাক
বক্ষদেশের মানচিত্রে ওদের ক্ষুধাগ্রস্ত শীর্ণস্তন
বাংলাদেশের ধর্ষিত মানচিত্রের
যৌনোদ্দীপক অস্তিত্ব জ্ঞাপন করে
ওগো কিশোরীশ্রমিক
তোমরা কি জানো তোমরা কোথায় চলেছ
এই অনুন্নয়নশীল কুয়াশায়?
ওদিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জাহাজ এখনো
নোঙর ত্যাগ করেনি।
ওদিকে এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন
ওদিকে কমিশন কোম্পানি ও আন্তর্জাতিক দালাল
ওদিকে বিদেশি পরামর্শ দাতা
ওদিকে বিশ্বব্যাংক ওদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল
ওদিকে বিদেশি সাহায্য সংস্থার হেড অফিস
ওগো স্বাধীন দেশের মেয়ে
তুমি কি জানো স্বাধীনতা শব্দের অর্থ কি?
তুমি কি জানো কোন গন্তব্য লক্ষ্যে রেখে
আমরা আত্মাহুতি দিয়েছিলাম?
তোমরা এখন শ্রম হে মেয়ে!
মজুরির দাবীতে রাস্তা আটকিয়ো না যেন। এতে আমাদের অফিস শেষে বাড়ি ফিরতে কষ্ট হয়। চুপচাপ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে যাবে। এ তোমার দেশপ্রেম। জানো তো ? বায়ারের পে মেন্ট হাতে পাওয়ার পর খুশিমনে বাড়ি ফেরাটা আরামে না হলে আমাদের রাগ হয়।
রাষ্ট্র ব্যর্থ মনে হয়।
অবশ্য আমরা যখন মধ্য আয়ের দেশ হব। তোমরা যখন আরো চুপ থাকবে। আরো রপ্তানি । প্রবৃদ্ধি হবে।
তখন তো আমাদের সব মধ্যবিত্তের একটা করে গাড়ি হবে। তখন কিন্তু একদমই এসব রাস্তা আটকানো বিক্ষোভ চলবে না। লক্ষী মেয়ে তোমরা। আরেকটু চুপ।
জানো তো? তোমাদের ন্যুনতম মজুরি না পাওয়াটা 'বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্র'।
তোমাদের বিক্ষোভও। ফলে আমাদের পুলিশ আছে। এমনকি শিল্প পুলিশ। আমাদের আপোষহীন নেত্রী তো কালো পুলিশও করেছেন। কালো পুলিশের কমরেড নিধন পর্ব শেষ।
এখন তোমাদের পালা।
তাছাড়া একটি সুখি সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের জন্য আইনের শাসন তো খুব দরকার। আমাদের আইন শৃংখলা রক্ষাকারি মহান বাহিনী তোমাদের বুঝিয়ে দেবে। তাছাড়া ক্রমশ আমাদের আরো গণতন্ত্রী এবং সেকুলার হয়ে উঠতে হবে। ফলে নারীর ক্ষমতায়নের এমন সুযোগ তোমরা হাতছাড়া করো না লক্ষীরা।
বিক্ষোভ করো না লক্ষীরা, তোমাদের প্রেমিক-বাপ-ভাইদেরও বলে দিও যেন। নয়ত লাশ পড়ে যাবে। এবং তোমরা আবার চুপচাপ।
এবং দুপুরের ছুটিতে যদিও তোমরা অনেকেই বাড়ি ফের না, সকালে রান্না করতে পারো নি বলে। কিন্তু খাবার না থাকলেও বাড়ি ফিরবে যেন।
অসময়ে কারখানায় থাকতে নেই। আমাদের অনেক ব্যাপার থাকে।
ইন্স্যুরেন্স ক্লেইম, স্টক লট ক্লিয়ার সহ কত ঝামেলা! ফলে আগুন লাগতেই পারে। দেখো, রাস্তায় নেমোনা আবার। অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াতে সমস্যা হবে।
মনে রেখ
তোমরা এখন শ্রম
আমুন্ডুনখাগ্র নারীমেশিন
তোমরা এখন সেলাইকল ও মোটরচালিত সুই
তোমরা এখন রপ্তানিমুখী মুনাফা
তোমরা এখন আপাদমস্তক ঘাম ও মেহনতের যন্ত্র
শ্রম ও শ্রমের জিনিসপত্র
রক্তমাংসহীন মেহনত।
হে কিশোর শ্রম, হে কিশোরি শ্রম
এখন কোথাও কোন ভূমিশায়ী মুক্তিযোদ্ধার কবর তালাশ করে স্মৃতিজীবী শিশির ঝরে পড়ছে
তুমি সেই যুদ্ধোত্তর বিস্মৃতির বেদনা হলে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।