আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইবলিশ

আমি বিধাতার রঙ্গে আঁকা এক অস্পষ্ট ছবি।

ইবলিশ নামক পদার্থটাই দুনিয়ার সকল কুকর্মের নায়ক। ঠিক নায়ক নয়-ভিলেন। তার আবির্ভাবের পর থেকেই বিশ্বের যতসব গোলমেলে কর্মকান্ডের সূত্রপাত। একেবারে জন্মলগ্ন থেকে সে নষ্টামী বাদ্‌রামী শুরু করেছে।

দুনিয়ার মানুষ তো ছার, বেহেস্তের ফেরেশতাদের পর্যন্ত জ্বালাতন করে ওদের অতিষ্ঠ করে ছেড়েছে। অবশ্য ইবলিশ তার আসল শয়তানী খেলাটা চালায় এই মর্তের মানুষেরই উপরেই। শয়তানীটা সে শুরু করেছিলো আমাদের আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) এবং আদি মাতা হযরত হাওয়া (আঃ)-এর উপর দিয়েই। আদম এবং হাওয়া বেহেশতে তো ভারী সুখে মিষ্টি মিষ্টি ফলপাকুড় খাচ্ছিলেন। আদত বেহেশতি খানা-পিনায় আর উৎসবে একেবারে মাতোয়ারা হয়েছিলেন।

পরের সুখ কি ইবলিশ সহ্য করতে পারে ? সুতরাং সে সকাল বিকাল ওদের আশেপাশে ঘুরঘুর আর নানারকম কুপরামর্শ আর কুমন্ত্রণা কানে তুলতে লাগলো। সৃষ্টিকর্তা একেবারে গোড়াতেই হুশিয়ারী করেছিলেন। তার কড়া হুকুম ছিলো, তাঁরা আর যাই করুন , জ্ঞানবৃক্ষের ফলটা যেন না খান। একবার খেলে আর রক্ষা নাই। একেবারে প্রপাত ধরণীতল।

ইবলিশ হারামজাদা কিন্তু তাঁদের অহর্নিশ উস্কাবে। সুতরাং সাধু সাবধান। ভীষণ সাবধান। একবার ইবলিশের কবলে পরেছো তো কি মরেছো। কিন্তু ইবলিশের শয়তানীর পাল্লায় পড়লে কি ভালো কথা কারো মনে থাকে? অতএব শয়তানের কুমন্ত্রণে আদম (আঃ) এবং হাওয়া (আঃ) একদিন কুক্ষণে নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণ করলেন।

ব্যাস, আর কি, এক ধাক্কায় বেহেশত থেকে সোজা পৃথিবীতে। আর তার ফলে এই আমি আপনি পর্যন্ত বেহেশতের মেওয়া থেকে বঞ্ছিত। না হলে কি ফূর্তিতেই না বেহেশতে এখন আমরা কাটাতাম। এই যে ইতিহাসের প্রথম দিন থেকেই দুনিয়াভর দাঙ্গা-হাঙ্গামা, ঝগড়া-বিবাদ, লড়াই এসবই ইবলিশ সাহেবের কুকীর্তি। রাজায়-রাজায়, রাজায়-প্রজায়, ভাইয়ে-ভাইয়ে, ননদ-ভাবীর, বৌ-শ্বাশুড়ীতে নিত্যদিনের মারপিট শত্রুতা এসবই হলো শয়তানের নিত্যনৈমিত্তিক কর্মকান্ডের ফল।

সে একজনকে অন্যজনের বিরুদ্ধে অহোরাত্র লেলিয়ে দিচ্ছে। একজনকে দিয়ে অন্যজনের ঘাড় মটকাচ্ছে, লুঠতরাজ করাচ্ছে, ঝগড়া করাচ্ছে, খুনোখুনি করাচ্ছীবং পরম আনন্দে গ্যালারীতে বসে কোল্ডড্রিঙ্ক ও সাগরকলা খেতে খেতে মজা দেখছে আর হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। শয়তান প্রযোজিত, পরিকল্পিত, পরিচালিত, পরিবেশিত এই হাঙ্গামা হুজুগের ফিল্মই হল দুনিয়ার আসল ইতিহাস। এই চিত্রনাট্য ও কাহিনীও শয়তানের লেখা। অনেক অপরাধ বিজ্ঞানীদের মতে মানুষ মাত্রই শয়তানের চেলা।

এই জন্যেই, তাদের ভাষায়, দুনিয়ার এই ভয়ঙ্কর চেহারা। তবে সাগরেদগিরিতে সবাই সমান সফল নয় আর কর্মক্ষেত্রও তাদের এক নয়। তাই শয়তানের নির্দেশে কেউ বেআইনী অস্ত্র শানায়, কেউ টাকা জাল করে, কেঊ দুর্নীতিতে, কেউ খুনোখুনিতে, কেউ ছিনতাই-এ হাত পাকায়। শয়তান কাউকে রিলিফ দ্রব্য আত্মসাতে উদ্বুদ্ধ করে। কাউকে গোটা জাতিকে বোকা বানাবার মদদ যোগায়।

শয়তান কোনো শিষ্যের হাতে সিঁদকাটি তুলে দেয়, কাউকে সুযোগ করে দেয় পুকুর চুরির এবং এদের সকলের ঘিলুর মধ্যে অহর্নিশ হাজারো উস্কানি দিয়ে সাফল্যের সাথে এই সব দায়িত্ব পালন করিয়ে নেয়। যারা নিতান্তই অক্ষম তাদের দিয়ে কিছু গীবত (অপরের ছিদ্রান্বেষণ) করিয়ে নেয়। নিতান্ত না পারলে হিংসা, দ্বেষ আর অক্ষম কামনার বিষে তাদের মনটা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।