শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন উত্সর্গ করা কুষ্টিয়ার খোকসার ছেলে মাহাবুব রশিদের বাবা-মা, ভাইবোন আজও নিদারুণ কষ্টে জীবনযাপন করছেন। অর্থাভাবে দু’বোনের বিয়ে হচ্ছে না। সাহায্য-সহযোগিতা যা আসে তা হতভাগ্য বাবা-মায়ের হাত পর্যন্ত পৌঁছায় না। অসহায় এ পরিবারটির খোঁজখবর এখন আর কেউ রাখেন না। তবে নিহত মাহাবুবের স্ত্রী ও দুই সন্তানের লেখাপড়া ও ভরণপোষণের সব দায়দায়িত্ব পালন করছে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ট্রাস্ট।
তিন মাস আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে মাহাবুবের স্ত্রীকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ট্রাস্ট থেকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা ভাতা দেয়া হয়। স্বামীর পেনশন ১৮শ’ টাকা। এ দিয়ে মাহাবুবের স্ত্রী আসমা দুই ছেলেকে নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়ার টিঅ্যান্ডটি রোডে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। মাহাবুবের দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে রবিন কলেজে পড়ে আর ছোট ছেলে আশিক পড়ে কুষ্টিয়া জেলা স্কুলে।
মাহাবুবের স্ত্রী ও সন্তানরা মোটামুটি ভালোভাবে জীবনধারণ করতে পারলেও মাহাবুবের হতভাগ্য বাবা হারুনুর রশিদ নিদারুণ অর্থকষ্টে আছেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারানোর পর থেকে সংসারে অভাব-অনটন লেগেই আছে। অর্থাভাবে বিবাহযোগ্য দুই মেয়েকে পাত্রস্থ করতে পারছেন না। বিয়ের জন্য মাহাবুবের বাবা হারুনুর রশিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করলে তিনি পাত্রদের চাকরি দিয়ে দেবেন বলে প্রতিশু্রতি দেন। বিয়ের কথাবার্তা একরকম পাকা করে চাকরির জন্য বারবার শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার জন্য ঢাকা গেলেও দেখা করতে পারেননি।
নিজে পরের জমিতে কাজ করেন আর দুই ছেলে ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই কোনো রকম দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের ব্যবস্থা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় দু’ছেলের একজনের চাকরি হয় ঢাকার একটি গার্মেন্টসে, আরেক জনের হোটেলে। গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর তিন মাসের মাথায় হোটেল থেকে ছাঁটাই করে দেয়ায় মাহাবুবের দুই ভাই এখন ভ্যান চালিয়ে খায়। মাহাবুবের বাবা হারুনুর রশিদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে শেখ হাসিনার জন্য জীবন দিলেও কেউ আমাদের খোঁজখবর রাখেন না। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা কখনও ভুল করেও মাহাবুবের বাড়ির দিকে পা বাড়ান না।
খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সদর খাঁ মাহাবুবের নামে গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসার ফুলবাড়িয়ায় একটি সড়কের নাম ও স্মৃতিস্তম্ভ করার কথা ঘোষণা দিলেও আজও তা হয়নি। মাহাবুবের অবিবাহিত দু’বোন (আবেদা ও শিরিনা) সদর খাঁকে ব্যঙ্গ করে বলেন, তার জন্যই আমরা আজ সবকিছু থেকে বঞ্চিত।
দলের অন্য সবাই সাহায্য-সহযোগিতা দিতে গেলেও সদর খাঁ বাধা দেয় বলেও অভিযোগ করেন তারা। এমনকি এ বছর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ২১ আগস্ট মাহাবুবের মৃত্যুবার্ষিকীটিও পালন করেনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।