বিডি নিউজ ২৪ এ প্রকাশিত সংবাদটি....
ঢাকা, ডিসেম্বর ০১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ইউরোপের দেওয়া কোটি কোটি ডলার গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরানোর অভিযোগ উঠেছে মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে। নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক প্রামাণ্যচিত্রে এ অভিযোগ উঠেছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে আসা নথিপত্রে দেখা গেছে, দারিদ্র্য দূর করার জন্য ভর্তুকি হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংককে ১৯৯৬ সালে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেয় ইউরোপের কয়েকটি দেশ। নরওয়ে, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস ও জার্মানির দেওয়া অর্থ থেকে ১০ কোটি ডলারেরও বেশি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে গ্রামীণ কল্যাণ নামে নিজের অন্য এক প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নেন ইউনূস।
বাংলাদেশ নরওয়ের দূতাবাস, নরওয়ের দাতাসংস্থা নোরাড এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এ অর্থ গ্রামীণ ব্যাংকে ফেরত নিতে চেয়েও পারেনি।
১০ কোটি ডলারের মধ্যে সাত কোটিরও বেশি ইউনূসের গ্রামীণ কল্যাণ নামের প্রতিষ্ঠানেই থেকে যায়।
এরপর গ্রামীণ কল্যাণের কাছে ঔই অর্থ ঋণ হিসেবে নেয় গ্রামীণ ব্যাংক।
১৯৭৬ সালে গবেষণা কার্যক্রম হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জোবরা গ্রামে ক্ষুদ ঋণ কার্যক্রম শুরু করেন মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। ১৯৮৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে গ্রামীণ ব্যাংক।
নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে (এনআরকে) ক্ষুদ্র ঋণের ফাঁদে' নামে প্রামাণ্যচিত্রটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয় মঙ্গলবার।
প্রামাণ্যচিত্রটির নির্মাতা টম হেইনমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে মঙ্গলবার গভীর রাতে টেলিফোনে বলেন, "মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলার জন্য ছয় মাস চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি দেখাই করতে রাজি হননি। "
এই প্রামাণ্যচিত্রে তিনি ক্ষুদ্র্র ঋণ বিষয়টিকে 'ক্রিটিক্যালি' দেখার চেষ্টা করেছেন বলে জানান টম।
ড্যানিশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য টমকে ২০০৭ সালে বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করে।
কোটি কোটি ডলার 'আত্মসাতের' এ ঘটনা জনসমে যেন প্রকাশ নাহয় সে বিষয়ে সতর্ক ছিলেন ইউনূস। এ নিয়ে নোরাডের তখনকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠিও লেখেন তিনি।
১৯৯৮ সালের ১ এপ্রিল লেখা ওই চিঠিতে তিনি বলেন: "আপনার সাহায্য দরকার আমার। ... সরকার এবং সরকারের বাইরের মানুষ বিষয়টি জানতে পারলে আমাদের সত্যিই সমস্যা হবে। "
নোরাড, বাংলাদেশে নরওয়ের দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপও এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করে।
প্রায় ১৮ কোটি ডলার
৯০-এর দশকের মাঝামিোঝে ক শেষ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংক বিপুল পরিমাণ বিদেশি র্অ পায়। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষদের দারিদ্রসীেেমা ক তুলে আনাই ছিলো ওই তহবিলের ল্য। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জোনাথন মরডাকের ত্য অনুযায়ী, ওই সময় ভর্তুকি হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংক ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার পেয়েছিলো।
ইউনূসের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ডলার সরানোর যে অভিযোগ ওঠে তার ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছিলেন নোরাডকে। গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামীণ কল্যাণ নামের প্রতিষ্ঠানে র্অ সরিয়ে নেওয়ার কারণ উল্লেখ করে তিনি ১৯৯৮ সালের ৮ জানুয়ারি একটি চিঠি লেখেন।
এতে বলা হয়: "এই অর্থ রিভলবিং ফান্ড হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় থেকে গেলে ক্রমশ বাড়তে থাকা কর হারের কারণে ভবিষ্যতে আমাদের বিপুল পরিমাণ কর পরিশোধ করতে হবে। "
রিভলবিং ফানে্ডে ক কোনো র্অ ব্যয়ের পর তার বিনিময়ে পাওয়া অর্থ আবার একই কাজে ব্যবহার করা যায়। এই তহবিলের ত্র অর্থবছর বিবেচ্য হয় না।
ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের সবারই এক গল্প
ক্ষুদ্র ঋণের ফাঁদে' প্রামাণ্যচিত্রটির নির্মাতারা গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলোতে গেছেন বেশ কয়েকবার। জোবরা গ্রামে তাদের দেখা হয় গ্রামীণ ব্যাংক থেকে প্রথম ঋণ নেওয়া সুফিয়ার মেয়ের সঙ্গে।
যশোরের হিলারি পল্লীতে তাদের দেখা হয় গরীব মানুষদের সঙ্গে। ক্ষুদ্র ঋণের কারণেেে তাদর ঋণের বোঝাই শুধু বেড়েছে বলে দেখতে পান নির্মাতারা।
ওই পল্লীতে গিয়ে ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতি তার সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছিলেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি ও বর্তমান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি কিনটন।
ঋণগ্রহীতারা প্রায় সবাই একই গল্প বলেন নির্মাতাদের। তারা জানান, প্রত্যেকেই একাধিক ুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নিয়েছেন।
সেই ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে সবারই প্রাণান্ত। কেউ বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছে ঋণ শোধের জন্য। আবার ঋণের সাপ্তাহিক কিস্তি শোধ করতে না পারায় কারো ঘরের টিন খুলে নিয়ে গেছে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান।
প্রামাণ্যচিত্রটিতে শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সমাজ বিজ্ঞানী ও গবেষকের সাাৎকারও আছে। এরা দীর্ঘদিন ধরে ুদ্র ঋণের 'বৃহৎ সাফল্যের' বিষয়টিকে প্রশ্ন করে আসছেন।
ডেভিড রডম্যান, জোনাথন মারডক, টমাস ডিক্টার এবং মিলফোর্ড বেটম্যানের মতো সমাজবিজ্ঞানীদের সবার একটাই কথা: ক্ষুদ্র ঋণ চালু হওয়ার পরবর্তী এ ৩৫ বছরে এমন কোনো প্রমাণ এখনো নেই যাতে মনে হতে পারে যে ুদ্র ঋণ দরিদ্রদের দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করতে পারে।
মূল পাতা এখানে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।