এইটা আমার পারসোনাল ব্লগ, কারো ভাল না লাগেল দুঃখিত
তখনো বড় হবার অনেক বাকি ৭ম কি ৮ম শ্রেনীতে পড়ি, বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে বা তাদের পাল্লায় ফেলে স্কুল পালানো শুরু। বুঝি নিজের স্বাধীনতাটাকে করায়ত্ত করার প্রয়াসে প্রথম পদক্ষেপ। বালক হয়ে উঠবার ঝাঝ গুলো বেশ গায়ে লাগতে শুরু করেছে। স্কুল পালিয়ে দিনভর ক্রিকেট খেলা, ক্লাশে বসে বইয়ের নিচে লুকিয়ে মাসুদ রানা, কুয়াশা আর ওয়েস্টার্ন গল্পের বই পড়া। বিকালে বা খুব ভোরের টিউশনিতে আড় চোখে ওই টিউশনীর মেয়েদের দেখা, ভাবটা এমন যেনো অংক করছি আর হিসেব মিলছে না।
এত্ত বৈচিত্র্য ও যে একেঘেঁয়ে তখন উত্তেজনা সঞ্চার করতো মাসুদ রানা বা ওয়েস্টার্ন কোনো গল্পের নারী চরিত্রের পোষাকের বর্ননা। লেখক কিভাবে যেন টের পেয়ে যেতেন আমাদের একঘেঁয়েমি কাটছে না তাই মাঝে মাঝে গল্পের নায়ক নায়িকাদের আলিঙ্গনে আবদ্ধ করতেন আর তাদের শিহরনের অভূতপূর্ব বর্ননা দিতেন।
ততোদিনে আমরাও বুঝে গেছি লেখক মহাশয়রা আমাদের বেশ পাত্তা দিচ্ছেন, তাই আমরাও একটু বেশী চাইতে শুরু করলাম। ফলে গল্পে লোমহর্ষকতা বেড়ে গেল, আর এমন লোমহর্ষক ব্যপারের পর নায়কের অধিকার আছে নায়িকাকে চুমু খাবার। যা ভেবে ছিলাম হলও তাই।
নায়কের চুম্বনে নায়িকা স্বর্গীয় প্রেমে আবদ্ধ হলেন, আর আমরাও ভাবতে থাকলাম টিউশনীতে পড়তে আসা নায়িকারাই আমাদের একমাত্র ভরসা, তারাই পাড়ে আমাদের প্রেমের স্বর্গীয় অনুভূতির সত্যিকারের কদর করতে। আগের জন্মে বড় কোনো ঝামেলা ঈশ্বর মহাশয়ের সাথে হওয়ার কারনে এই জন্মে শাস্তি স্বরূপ তিনি আমাদের জন্য এমন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করেছেন যেখানে নায়িকারা আমাদের সহযোদ্ধা হয়ে আসেন না। আমাদের দু চারটা দুখের কথা শোনার কেউ নাই। এই দুঃখের লাগব হয় টিউশনীতে এসে। আর স্বপ্ন বুনতে থাকি জীবনের প্রথম চুম্বনটা কাকে দিবো, কিভাবে দিবো।
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে দিবো নাকি পূর্ণিমার আলোতে?
ওদিকে মেল ট্রেনের মতো দেয়ে আসতে থাকে পরীক্ষা। স্যারদের প্রতি আমাদের মায়া ছিল না, কিন্তু তাদের বাসায় পড়তে যাওয়ার নাম করে অনেক সুবিধাভোগ করেছি, তাই খানিকটা অনুভূতিপ্রবণ হয়ে পড়ায় একটু সময় দেই, বাবার হাতে মার খাবার ভয়ও জড়ো হয় তাই আরো মনোযোগী হই পড়াশোনা নিয়ে ফলে আমাদের চুমুর স্বপ্নে ধূলো জমে।
জীবনে নায়িকার আনাগোনা বাড়তে থাকে নান রূপে, তাদের অহরহ আনাগোনা শিহরনের অনুভূতিকে ভোঁতা করে দেয়। কিন্তু চুম্বনের আশা মরে না।
একদিন এক বন্ধু মারফত স্বর্গ থেকে খবর এলো চুম্বনে আছে বহু আকার, প্রকার, অনুভূতি।
পৃথিবীর সাত আশ্চার্যের মতো, বেশ কিছু আশ্চার্য রকমের চুম্বন লিপিবদ্ধ হয়েছে সংবাদ পত্রে, যার প্রায় সবগুলো মার্কিনি বা হলিউড তারকাদের দখলে। আরো জানা গেল চুম্বন প্রক্রিয়াও নাকি লিপিবদ্ধ। যেযার প্রয়োজন মতো শিখে নিতে পারে। একটা উদাহরণ পাওয়া যাবে এই লিংকে । প্রযুক্তির দাপটে আমার আধুনিক এবং উদার হচ্ছি, ভুল করবার আগে শিখছি পদ্ধতিগুলো।
আমার প্রথম চুম্বন কিছু না শিখে দিয়েছিলাম। সেই কাঁপুনি আজো মনে কাঁপন ধরায়। হঠাৎ করেই সে স্মৃতির কুয়াশায় আচ্ছন্ন হলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।