স্বাধীন দেশে স্বাধীন ভাবে চলতে চাই.......
২৯ নভেম্বর ন্যু ক্যাম্পের মহারণের জন্য নিজেদের ঝালাই করে নিল দুই দলই। ঘষে-মেজে তৈরি করে রাখা হলো তীর-তূণ। শাণ দিয়ে রাখা হলো সব মারণাস্ত্র। দুই সেনাপতিও মকশো করে রাখলেন পা।
রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা এবারও শুরু থেকে গায়ে গায়ে এগিয়ে চলেছে।
কয়েক ম্যাচ ধরে ছবিটা প্রায় একই রকম: বার্সা জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠে তো পরের ম্যাচেই জায়গা পুনরুদ্ধার করে রিয়াল। পরশুও তা-ই হলো। আলমেরিয়াকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বার্সা যখন রিয়ালকে বার্তা পাঠাল, পরের ম্যাচে রিয়ালও অ্যাথলেটিক বিলবাওকেও উড়িয়ে দিল ৫-১ গোলে।
এ তো গেল দলগত লড়াইয়ের হিসাব। এবার ব্যক্তিগত খেরোখাতার দিকে তাকান।
পয়েন্ট টেবিলের মতো সর্বোচ্চ গোলদাতার জায়গাটিও নিয়ে দ্বৈরথ বেশ জমেছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর লিওনেল মেসির। পরশু ম্যাচ শুরুর আগে লিগে গোলসংখ্যায় রোনালদোর চেয়ে এক ঘর পেছনে ছিলেন, সেটার ঘাটতি পুষিয়ে নিতে মেসি করে বসলেন হ্যাটট্রিক।
রোনালদো দর্শক হয়ে মেসির উল্লাস দেখবেন! তিনিও পাল্টা জবাব দিলেন ওই হ্যাটট্রিক করেই। ১২ ম্যাচ শেষে পয়েন্ট টেবিলে দুই দলের মধ্যে যেমন এক পয়েন্টের ব্যবধান (রিয়াল ৩২, বার্সা ৩১), গোলদাতার তালিকাতেও রোনালদো-মেসির ব্যবধানও ওই এক (যথাক্রমে ১৪ ও ১৩)। এখানে অবশ্য আরেকটা কথা আছে, রোনালদোর চেয়ে ২ ম্যাচ কম খেলেছে মেসি।
তাই এখানে একটু এগিয়ে আর্জেন্টাইন এ স্ট্রাইকার।
গত কয়েক ম্যাচের ফলাফলই বলছে, বার্সা ফিরে পেয়েছে তাঁর কাতালান সুর। অবনমন অঞ্চলে ঘুরপাক খেতে থাকা আলমেরিয়া তাই হয়তো ৮ নম্বর বিপদসংকেত আগেই পেয়ে থাকবে। তা ছাড়া বার্সার একটা প্রতিশোধ নেওয়ারও ব্যাপারও ছিল। গতবার এই আলমেরিয়ার মাঠ থেকেই হারতে হারতে ড্র নিয়ে ফিরেছিল বার্সা।
দুই দফায় পিছিয়ে পড়ে দলকে উদ্ধার করেছিলেন মেসি।
পরশুও মেসি করলেন ম্যাচের প্রথম গোল। ১৭ মিনিটে গোলমুখ খোলার পরই যেন গোলবৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। শুধু গা ভেজাতে পারলেন না ডেভিড ভিয়াই। আত্মঘাতী গোলও হলো একটা।
গোল করলেন ইনিয়েস্তা, পেদ্রোও। মেসি দ্বিতীয় গোলটি করে লা লিগায় পূর্ণ করে ফেললেন সেঞ্চুরিও। হ্যাটট্রিক এসেছে দ্বিতীয়ার্ধে। মাত্র ১৫৪ ম্যাচে মেসি করেছেন তাঁর ১০১তম গোলটি। দুটো গোলও করিয়েছেন।
বদলি হিসেবে নেমে জোড়া গোল করেছেন বোজান কিরকিচ। লিগে প্রতিপক্ষের মাঠে বার্সা তাদের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডটা ছুঁয়েই ছেড়েছে মাঠ (আগের রেকর্ডটি ১৯৫৯ সালের)।
রিয়ালের শুরুটাও করেছিলেন আরেক আর্জেন্টাইন, ১৯ মিনিটেই গঞ্জালো হিগুয়েইনের গোল। এরপর রোনালদোও ব্যবধান বাড়ান। যদিও বিলবাও একটি গোল শোধ করে দিলে ২-১ স্কোর নিয়ে বিরতিতে যায় রিয়াল।
দ্বিতীয়ার্ধের ১২ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করেন সার্জিও রামোস। রিয়ালের শেষ দুটো গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেছেন রোনালদো। শেষ গোলটি অবশ্য অতিরিক্ত সময়ে আসা পেনাল্টি থেকে।
কে কার চেয়ে এদিন ভালো খেলেছে, এ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু বার্সার পর রিয়ালও বড় ব্যবধানে জিতে অন্তত মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে সমানে সমান থাকল।
দুই দলকে ২৯ নভেম্বর তারিখটা তাতিয়ে রেখেছে বলেই হয়তো পাওয়া গেল এমন উদ্দীপিত ফুটবল। যদিও আলমেরিয়া কোচের চাকরি খেয়ে নেওয়া জয়ের পরও গার্দিওলা বলছেন, ‘এমন নয় যে আমরা কাউকে সতর্কবার্তা পাঠাতে চেয়েছি। বাকি ম্যাচগুলোর মতোই আমরা স্রেফ দুর্দান্ত খেলেছি। প্রথমার্ধে (৫-০) আমরা যতগুলো সুযোগ পেয়েছিলাম অন্যান্য ম্যাচেও কিন্তু তা-ই পেয়ে থাকি। পার্থক্য হলো, এদিন সুযোগগুলো কাজে লেগেছে।
দর্শক অপেক্ষায় থাকুন ২৯ নভেম্বর তারিখটার জন্য। তখনই প্রমান হবে কে সেরা, বার্সা না রিয়াল? মেসি না রোনালদো?
খবর : রয়টার্স।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।