গত ৭ নভেম্বর ২০১০ এ CERN এর LHC 'তে সীসার আয়নের প্রচন্ড গতির সংঘর্ষের পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হয়। CERN এর ALICE এক্সপেরিমেন্টে আয়নের সংঘর্ষ ডিটেক্ট করা হয়। LHC'র ছয়টি এক্সপেরিমেন্টের একটি হচ্ছে ALICE (A Large Ion Collider Experiment)। ৩০টি দেশের ১০৫টি প্রতিষ্ঠানের ১০০০ এর অধিক বিজ্ঞানী এই এক্সপেরিমেন্টে কাজ করেন। এছাড়াও সেখানে প্রায় ২০০ তুখোড় পদার্থবিদ্যার ছাত্রও উপস্থিত থাকেন।
CERN এর মেইন টানেলের বিভিন্ন অংশে স্থাপিত ছয়টি ultra-sophisticated detector এর মধ্যে ALICE অন্যতম।
২৬ মিটার লম্বা, ১৬ মিটার প্রস্থে আর ১৬ মিটার উচ্চাতা বিশিষ্ট এই এক্সপেরিমেন্টেটি ১০,০০০ টন ওজন বিশিষ্ট। এতে একটি সেন্ট্রাল ব্যারেলের সাথে আছে একবাহু বিশিষ্ট ফরোয়ার্ড মিউওন স্পেক্ট্রোমিটার। গত ৪ নভেম্বর শেষ বারের মত প্রোটন বীম এক্সট্র্যাক্ট করা হয়। পরবর্তী কয়েকদিন ধরে লেড আয়ন বীম কমিশনিংয়ের কাজ চলে।
গত ৭ নভেম্বর স্থানীয় সময় রাত ১২:৩০ মিনিটে প্রথম বারের মত বিপরীতমুখী লেড আয়ন বীমের সংঘর্ষ ঘটানো হয়। অবশেষে CERN এর পক্ষ থেকে ৮ নভেম্বর ১১:২০ মিনিটে স্ট্যাবল কন্ডিশনে আলোর গতির প্রায় ৯৯.৯% গতিতে লেড আয়ন বীমের কলিশনের রেকর্ডিংয়ের ঘোষণা দেয়া হয়।
এত অল্প সময়েই সফলতার জন্য CERN এর ডিরেক্টর জেনারেল রলফ হিউয়ার বলেন, "The speed of the transition to lead ions is a sign of the maturity of the LHC. The machine is running like clockwork after just a few months of routine operation.”
LHC'র লেড আয়ন বীমের সর্বোচ্চ collision energy ৫৭৪ TeV per nucleus। এ পরীক্ষায় অবশ্য মাত্র ২.৭৬ TeV per nucleon pair অর্জন সম্ভব হয়েছে।
ALICE এর কাজ সংক্ষেপে তিনটি মৌলিক প্রশ্নের উত্তর খোঁজা:
১. সূর্যের কেন্দ্রের চেয়ের একলাখগুণ তাপমাত্রায় পদার্থের কি অবস্থা হয়?
২. প্রোটন এবং নিউট্রনগুলো কেন তাদের উপাদান কোয়ার্কের চেয়ে প্রায় ১০০ গুণ ভারী?
৩. প্রোটন এবং নিউট্রন বিভাজন করে কখনও কি কোয়ার্ককে স্বাধীন করা সম্ভব?
এতদিন হিগস্ বোসনের সন্ধানে মূলত ATLAS এবং CMS এই দু্টি এক্সপেরিমেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
এবার ALICE ও আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছে।
University of Birmingham এর অধ্যাপক Dr. David Evans এই পরীক্ষার নাম দিয়েছেন মিনি বিগ ব্যাং। যদিও মূল বিগ ব্যাং থিওরীর ব্যাপার ভিন্ন, কিন্তু এত বেশি ঘনত্ব আর তাপমাত্রার পরীক্ষা এবারই প্রথম করা সম্ভব হয়। প্রায় দশ ট্রিলিয়ন ডিগ্রীর মত তাপমাত্রায় প্রোটন-নিউট্রন গলে গিয়ে এক ধরণের সুপের মত quark-gluon plasma তৈরী হয়েছে। এবারের পরীক্ষায় প্রায় আলোর গতির ব্যাপারটা ছিলো গৌণ।
ঘনত্ব আর তাপমাত্রায়ই ছিলো মূখ্য। এ ধরণের পরীক্ষায় বর্তমান পদার্থবিদ্যার ধারণা অনুযায়ী ১৩.৭ বিলিয়ন বৎসর আগে ঘটে যাওয়া বিগ ব্যাং এর ব্যাপারে কিছু ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
আগে প্রকাশ হওয়া দু'টি পোস্ট:
বর্তমান পদার্থবিদ্যার এক বিতর্কিত বিস্ময় LHC
LHC আপডেট
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।