আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মনে পড়ে: ৭ই নভেম্বর, ১৯৭৫



মনে পড়ে - এফ,এইচ, হল আর কার্জন হল, কখনো বা টি,এস,সি - এইটুকুন ছিল আমার পৃথিবী। হলের ক্যান্টিনে গন্ধযুক্ত ভাত আর হলুদগোলা ডালের পানি ছিল মূল খাদ্য। নিয়মিত খেতে পাচ্ছি আমি, আমার পরম সৌভাগ্য! পাশেই দেখেছি শিশু-কিশোরীদের লাইন, ডাইনিং হলের পিছনে! কিশোর বালকদের সৌভাগ্য, তারা অনেকেই হলের ভিতরে ‘স্যার’দের এটা-ওটা করে জীবন-যন্ত্রণা সয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু, কিশোরীদের ভাগ্য ভিন্ন, তারা তাদের যৌবন দিয়েই জীবন-যন্ত্রণা মিটাচ্ছিল। - কিছু বলার তেমন কেউ ছিল না! সবাই আপনার আপন নিয়েই ব্যস্ত।

- কিন্তু, যাদের দেখার কথা তাদের ব্যস্ততা ছিল অন্যখানে। সেই অন্যখানে দেশের মানুষের সুখ-দুঃখ ভাল-মন্দ দেখার বিষয়টা যে ছিল অতি নগণ্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। - ক্ষমতার লড়াই, দেশের সম্পদ হাতাবার ইঁদুর-দৌড়, আর বিদেশী ললুপতার সে ছিল এক বাস্তব চলচ্চিত্র যার দৃশ্য, দৃশ্যপট পরিবর্তিত হচ্ছিল অস্বাভাবিক দ্রুততায় ও অনিশ্চয়তায়। সাধারণ মানুষের ছিল মাথার খুলির কোটর হতে চক্ষু নির্গত হওয়া আতংক! - কে কাকে মারছে, কে কাকে রাখছে - তা ছিল এক ভয়ংকর ধাঁধা। এমন করে করেই এসেছিল ৭ই নভেম্বর! ভোরে আমার ঘুম ভাঙ্গে মিছিলে, শ্লোগানে আর গনপদাঘাতে মুখরিত মৃদু ভূকম্পনে।

এত প্রাণচঞ্চলতা ঢাকা ক্যাম্পাসে দেখি নি আগে! – তরুণ বন্ধুরা, ১৯৭৫ এর নভেম্বরের পত্রিকার পাতাগুলো উল্টালে সেই সময়কার বাংলাদেশের জনগনের আবেগ অনুভূতি জানতে পাবে। কাট-পেস্ট করেও সেই আবেগ অনুভূতির সুপ্রকাশ এখন আমার পক্ষে দুঃসাধ্য বিষয়! কিন্তু, সত্তরের দশকের স্বাধীনতা-উত্তর দুঃস্বপ্ন কি আমরা এখনো কাটিয়ে উঠতে পেরেছি? আমার মনে হয়, না!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।