কিছু কিছু নাম্বার থেকে আর আসবে না কোনো ফোন, কিছু কিছু এস এম এস পড়ে আর হাসবে না এ মন, কোনো কোনো ঠিকানায় লিখবো না আর কোনো চিঠি, কোনো কোনো গলিতে করবে না মন আর হাটাহাটি...
১.
অন্যন্যা কেঁদে চলেছে সেই তখন থেকে। এক মুহুরতের জন্যও তার কান্না থামানো যাচ্ছে না। জীবনের যুদ্ধে পরাজিত এর নারীর চোখের জল থামানোর মত শক্তি হয়নি কারো।
অন্যন্যার শ্বশ্বূর,যাকে সে বাবা বলে ডাকে,করিম সাহেব,এরই মধ্যে দুবার এসে ঘুরে গেছেন,কিন্তু পুত্রবধুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে দুটো সান্তনার বাণী তার মুখে যোগায় নি। শুধু স্ত্রী রামিসার দিকে তাকিয়ে নিরবে কি যেন জিজ্ঞাসা করে চলেছেন,কিন্তু এখনও কোনো সদুত্তর পান নি।
অন্যন্যা মাথা তুলে হঠাত বলল,”বাবা,একবার একটু খোঁজ নিন না,উনি সেই কখন বেরিয়েছেন,এখনও ফিরলেন না। “
রামিসা বলে উঠলেন,”হ্যা গো,তোমার না কোন IG বন্ধু আছেন,তাকে একবার তো ফোন কর। ”
অন্যন্যা মাথা না তুলেই শুনতে পেল,”ফোন ডেড। ” সাথে বোধহয় কিছু দীর্ঘশ্বাস তার কান এড়ালো না।
২.
দরজায় বার বার আঘাতের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
প্রতিবার আঘাতের শব্দে কুকড়ে যাচ্ছেন রামিসা। ভয়ে শিউরে উঠছেন বার বার। তাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছেন করিম সাহেব,”ভয় পেও না,সব ঠিক হয়ে যাবে”।
বাইরে আবার চিৎকার শোনা গেলো,”দারওয়াযা খোলো,হাম মুক্তি কো লেনে আয়া হ্যা। ”
সাথে দরজায় আবারও বুটজুতার ধুপধাপ লাথির শব্দ।
হঠাত করিম সাহেব রান্নাঘর থেকে অন্যন্যাকে বের হতে দেখলেন। অত্যন্ত ধীর পায়ে শান্ত মুখে এগিয়ে যাচ্ছে দরজার দিকে। ডানহাতে ধরা বটি।
করিম সাহেব অস্ফুট স্বরে বল্লেন,”অন্যন্যা। ”
অন্যন্যা বোধ হয় কথা শুনতে পাবার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে।
ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে দরজার দিকে।
৩.
ফয়সাল খাবার হাতে নিয়ে হাটছে ফুটপাথে,কিন্তু তার চোখ কাকে যেন খুঁজছে।
পার্কের কোনে এক পাগলী বসে মাথা চুলকাচ্ছে আর উকুন বের করে আনছে।
ফয়সাল তারদিকে এগিয়ে গেলো,হঠাত পাগলীটা তার দিকে চোখ তুলে তাকালো। ফয়সাল তার হাতে খাবার তুলে দিলো।
খাবার হাতে পাগলীর নিঃপাপ হাসি তার অনেক ভাল লাগে।
ফয়সাল বলল,” মা, আজ আসি?”
পাগলীর পূর্ণ মনোযোগ শুধু পাউরুটির টুকরোতে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।