আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজব দেশে গুজবের লেজ ধরে হাটি...



প্রথমে বলা হল ওরা নাস্তিক, ওরা ইসলামের শত্রু, ওদের কতল করতে হবে, জবাই দিতে হবে। ওমনি আমরা দৌড় ঝাঁপ শুরু করে দিলাম, বোঝাতে লাগলাম আমরা এক একজন পাক্কা ইমানদার, লুঙ্গি উঁচু করে খৎনা দেখিয়ে দিলাম, নে বাবা ভাল করে দেখ। আমাদেরও ইমানী জজবা কম নয়! এরপরে ওরা হিন্দুদের মালাউন বলে জবাই শুরু করলো, ওমনি আমরা আবারো দৌড় ঝাঁপ শুরু করে দিলাম। ছিঃ, মালাউনদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই, ওরা তো মূর্তি পূজা করে, ওরা ভারতে গিয়ে মরলেই পারে! শালারা সব ভারতের দালাল, আমরা ভারতকে ঘৃণা করি, আমরা হিন্দুদের ঘৃণা করি! তারপরে ওরা নারী ধর্ষণ শুরু করলো, ওমনি আমরা আবারো লাফ ঝাঁপ দিতে লাগলাম। বলতে লাগলাম, আরে, নারীরা পর্দা করলে তো এই ধর্ষণ হতো না।

বেহায়া বেশরম নারীদের উচিত শিক্ষা হয়েছে বটে! ওরা তারপরে বললো, ওরা তো চাকমা মারমা সাঁওতাল। এই দেশে ওদের থাকার কোন অধিকার নেই, ওদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। ওমনি আমরা লাফ ঝাঁপ শুরু করে দিলাম, আমাদের বাঙালিত্ব উগ্রভাবে চাগার দিয়ে উঠলো। শালারা বাঙলাদেশে কী করে? এই দেশ বাঙালির, কোন চাকমা মারমা সাঁওতালের এইখানে জায়গা নাই! এরপরে তারা বললো শালারা কমিউনিস্ট, ওদের জবাই করা এখন দ্বীনী দায়িত্ব। ওমনি আমরা আবারো লাফাতে লাগলাম।

বোঝাতে লাগলাম আমরা কমিউনিস্টদের ঘৃণা করি। কমিউনিস্টরা রাশিয়া নাইলে চীন চলে যাক, এদেশের কমিউনিস্টদের কোন জায়গা নেই। আমরা আল্লাহর আইন চাই, সৎলোকের শাসন চাই! এভাবে এক একটি শয়তানি শুরু হল, এবং আমরাও তাদের তালে তালে কোমর দুলিয়ে নাচতে লাগলাম। আস্তে আস্তে আমাদের শক্তি কমতে থাকলো, কমতেই থাকলো। ওদের তালে তালে নাচতে নাচতে কখন যে আমরাই জামাত শিবিরে পরিণত হলাম, আমাদের রক্তমাংসে পাকি প্রেতাত্মা ঢুকে গেল, বুঝতেই পারলাম না।

জামাত শিবির প্রশ্নে কোন আস্তিক নাস্তিক নাই, জামাত শিবির প্রশ্নে কোন হিন্দু মুসলমান নাই, জামাত শিবির প্রশ্নে কোন নারী পুরুষ নাই, জামাত শিবির প্রশ্নে কোন চাকমা মারমা সাঁওতাল বাঙালি নাই, জামাত শিবির প্রশ্নে কোন ডান বাম কমিউনিস্ট নাই। আছে শুধু জামাত শিবির এবং এদেশের জাত পাত ধর্ম বর্ণ লিঙ্গ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ। আমরা যত বিভক্ত হব, আমাদের শক্তি তত কমতে থাকবে এবং তাদের শক্তি তত বাড়তে থাকবে। এই সহজ বিষয়টা আজকে আমাদের বুঝতেই হবে। আর কোন উপায় নেই।

। কৃতজ্ঞতাঃ আসিফ মহিউদ্দীন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।