দুই বাজারে রেকর্ডের ছড়াছড়ি
বিদুৎ ও অবকাঠামো কোম্পানির শেয়ারবাজারে আসতে বুকবিল্ডিং পদ্ধতির শর্ত শিথিল হচ্ছে
বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো খাতের নতুন কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে চাইলে বিশেষ বিচেনায় আনা হবে। এজন্য উৎপাদনে আসেনি (গ্রিনফিল্ড) এমন কোম্পানির জন্য বুকবিল্ডিং পদ্ধতির শর্ত শিথিলের প্রস্তাব পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অফ পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এসইসি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রানলয় গঠিত একটি কমিটিও গ্রিনফিল্ড কোম্পানি নিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের জন্য বিএপিএলসির পক্ষ থেকে গত আগস্ট মাসে এসইসিতে একটি চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো খাতের নতুন প্রকল্পগুলোকে আইপিওর মাধ্যমে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে আসার জন্য তিনটি শর্ত থেকে অব্যাহতি দেয়ার প্রস্তাব করেছে বিএপিএলসি। এতে বলা হয়েছে, বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে আসতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা হিসেবে অবশ্যই কোনো তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে থাকতে হবে। উদ্যেক্তা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন অবশ্যই ১৫০ কোটি টাকা হতে হবে। এ প্রতিষ্ঠানকে টানা ৭ বছর উৎপাদন অব্যাহত রেখে মুনাফা অর্জনের রেকর্ড থাকতে হবে। উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের কোনো পুঞ্জিভুত লোকসান, খেলাপি আয়কর এবং খেলাপি ঋণ থাকা যাবে না।
বর্তমান বিধান অনুযায়ী বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজারে আসতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নূন্যতম তিন বছরে বাণিজ্যিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থাকা, তিন বছরের মধ্যে নূন্যতম দুই বছর মুনাফা অর্জন এবং আবেদনকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানটির কোন পুঞ্জিভূত লোকসান না থাকার শর্ত রয়েছে।
বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে অর্থ সংগ্রহের সম্ভাবনা সম্পর্কে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি রকিবুর রহমান বলেন, দেশের পুঁজিবাজার এখন যে কোন সময়ের চেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নে সহজেই শক্তিকে কাজে লাগানো সম্ভব। পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে সরকার বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করতে পারে। জনগণ বিদ্যুত খাতে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক।
পুঁজিবাজার থেকে পর্যায়ক্রমে ২০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব।
এর আগে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রণলয়ের ওই কমিটি পুঁজিবাজার থেকে ৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের প্রস্তাব করেছিল। এ পরিমাণ বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য আগামী ৫ বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারের মাধ্যমে ১৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব। তহবিল সংগ্রহের জন্য প্রতিবেদনে একাধিক প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বর্তমানে সরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার ছাড়ার পাশাপাশি উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
প্রয়োজনে সম্পূর্ণ নতুন (গ্রিনফিল্ড) প্রকলের জন্য পুঁজিবজিার থেকে অর্থ সংগ্রহ সম্ভব বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। তহবিল সংগ্রহের জন্য বিদ্যুত উৎপাদনে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে সেগুলোকে আলাদা আলাদাভাবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এতে শেয়ারবাজারের মাধ্যমে প্রবাসীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।
পাশাপাশি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকেও তহবিলের উল্লেখযোগ্য অংশ সংগ্রহ করা সম্ভব বলে কমিটি মনে করে। পাশাপাশি শেয়ারবাজারে বন্ড ছেড়ে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে বিশেষ তহবিল গঠনের সম্ভাব্যতা সম্পর্কেও ইতিবাচক অভিমত ব্যক্ত করেছে কমিটি।
জানা গেছে, কমিটির সুপারিশ পাওয়ার পর জ্বালানি ও আইন মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানোর কথা। ওই কমিটিতে অনুমোদিত হলে প্রয়োজনীয় পদপে গ্রহণের জন্য সুপারিশটি মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।