বর্ষায় পাহাড়ের সৌন্দর্য আরও বাড়ে, বৃষ্টির পানি পেয়ে আরও সবুজ হয় তার গাছপালা। আর পাহাড় বেয়ে নেমে আসার ঝরনাগুলোও মেলে ধরে তাদের পূর্ণ রূপ। এত দিন হয়তো তা ছিল শুকনো, পায়ে চলা পথের মতো, কিংবা কুলকুল বয়ে চলা সরু ধারা বর্ষায় তারই রূপ দেখে কে! বৃষ্টির সময় পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়াটা সব সময়ই উপভোগ্য। তাই এবার বেরিয়ে পড়লাম চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের উদ্দেশে। দেখতে যাব সহস্রধারা ঝরনা।
সীতাকুণ্ডের দুই কিলোমিটার আগেই নেমে পড়তে হলো। এই ঝরনা সবাই চেনেন না। পর্যটকদের আনাগোনা প্রায় নেই-ই, গাইডও তাই পাওয়া যায় না। স্থানীয় লোকজনের মুখের কথাই পথের নির্দেশ দেয় আমাদের। সারা দিনই ঝরছে টিপটিপ বৃষ্টি।
এর মধ্যে কাঁচা রাস্তা ভেঙে পৌঁছালাম প্রোজেক্ট। সেখানে দেখি টিলার ওপর স্লুইসগেট। আগে নাকি এটি বন্ধ ছিল, তখন পাহাড়ের ওপর এক হ্রদ ছিল। এখন ঝরনা থেকে নেমে আসা একটা ঝিরিপথ চলে গেছে সেদিকে। যেন সবুজ ভেলভেট বিছানো সেই ঝিরিপথ ধরেই হাঁটা শুরু হলো আমাদের।
কিছুক্ষণ পর ঝরনার দেখা পেলাম। সেদিন আমাদের ভাগ্য ভালোই। বৃষ্টিতে আরও বেড়েছে সহস্রধারার পানি। গর্জন শোনা যায় সেখানে। ডালপালার ফাঁক দিয়ে চোখে পড়ে তার তেজ।
সকালে এক ঝরনা দেখে বিকেলে আরেকটা দেখার পালা। এটি সীতাকুণ্ড শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে ইকোপার্ক। পার্কের প্রবেশমুখে নেমে দুই কিলোমিটার পথ সিএনজি চালিত অটোরিকশা দিয়ে যেতে হয়। এর সার্থক নাম সুপ্তধারা। প্রবেশমুখে লেখা আছে, ‘ঘুমিয়ে থাকি, জেগে উঠি বর্ষায়’।
পাহাড়ের একদম শেষে এর অবস্থান। পুরো পথটাই সিঁড়ি বাঁধানো। তবে উঠতে হবে না, নামতে হবে। গুনে দেখিনি, মনে হলো অন্তত ৫০০ ধাপ তো হবেই। তবে ক্লান্তি টেরই পাইনি।
চিকন চিকন গাছপালার ফাঁক দিয়ে নরম আলোয় নেমে যাওয়া, বৃষ্টিধোয়া পাতার ঘ্রাণও পাচ্ছিলাম যেন। একটাই সমস্যা জোঁক—একবার ধরলে বেড়ানোর মজা অনেকটাই মাটি। অনেকে সুপ্তধারা ঝরনাকেই সহস্রধারা ভাবেন। তবে দুটো একদমই আলাদা। এই ঝরনার পানির ধারা মূলত চারটি।
ছোট আরও কিছু ধারা চোখে পড়ে। ধবধবে সাদা পানির ফেনা তুলে নামছে নিচে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।