আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ড. ইউনূসঃ নন্দিত না নিন্দিত?

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।
কী বলতে কী বললে মানি লোকের মানে আঘাত লেগে সেই মান আবার তাসের ঘরের মতো ঝুরঝুর করে ঝরে গিয়ে বোদ্ধা শ্রেণীর মাথায় পড়ে গিয়ে তাদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তা আমার মতো ক্ষুদ্র জ্ঞানের তলানিতে পড়ে থাকা লেখকদের মোটেই বোঝার কথা নয়। এটি বুঝতে হলে জামায়াত-বিএনপি তথা যেকোনো ধর্ম ব্যবসায়িক রাজনৈতিক দলের বা নিদেনপক্ষে স্বাধীনতাবিরোধী আমড়া-মার্কা কোনো সংগঠনের সমর্থক হওয়া চাই। সমর্থক না হলেও ক্ষতি নাই, ভঙ বা আলখেল্লাটা ঠিক থাকলেই হয়, যেমন, ঠিক রেখেছেন ফরহাদ মজহার গং। ঐ ঘরানার যেকোনো সংগঠনের সারথি হলে, সত্য-মিথ্যা, আজগুবি-বাজগুবি, আজব-গুজব যা-ই বলা হয়, তাই-ই ছহি হয়ে যায়।

এ ক্ষতিকর উপাদানগুলোই ঐ সমস্ত দলের সৃষ্টি, অগ্রযাত্রা এবং বিজয়ের মূল পাথেয় হওয়ায়, দলগুলোর ছত্রছায়ায় থেকে সুকর্ম না করে অপকর্ম করলেই বরং ভালো বাহবা পাওয়া যায়। যেমন, এখনকার এ নির্বাচনি হাওয়ায় তারা এ জাতীয় বাহবা-তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছে এবং সে ঢেঁকুরের গন্ধে ফুরফরা হয়ে জেহাদি জোসে আকুলি-ব্যাকুলি করছে হেফাজতিরা, জামায়াতিরা এবং অচিরেই রাষ্ট্র ক্ষমতার সম্ভাব্য পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে সুদের কারবার করে দারিদ্র্যকে যাদুঘরে পাঠানোর আগাম সুখস্বপ্নে বিভোর ড. মোহাম্মদ ইউনূস। নোবেল পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। সলিমুদ্দিন-কলিমুদ্দিন বা আম্বিয়া-কুলসুম হয়ে এ বিষয়ে মন্তব্য করাও ধৃষ্টতা। যদিও ইতিপূর্বে যারা শান্তির নোবেল পেয়েছেন সে তালিকার ধারাবাহিকতা দেখলেই যেকোনো উৎকৃষ্টমানের মার্কিন পা-চাটুকেরই শান্তির নোবেল পাওয়ার স্বাধ জাগাটা অস্বাভাবিক নয়।

যাক সে কথা। উৎকৃষ্টমানের মার্কিন ‘পা-চাটুক’ হওয়াতো বিরাট একটা যোগ্যতা, সবাই কি তা পারে? পারে না। বাহবা দিতে দোষ কোথায়? কতো রকম বাহবাইতো আমরা দিয়ে অভ্যস্ত, ড. ইউনূসকে বাহবা দেওয়া আর এমন কী কাজ! আমরা বাহবা দিয়েছি আজীবন ক্ষমতার দম্ভে বুদ হয়ে থাকা সেনা নায়কের গণতন্ত্রের ভিত্তি দুমড়ে-মুচড়ে রাষ্ট্র নায়ক হবার প্রক্রিয়াকে এবং মহাসম্মানের বেদি বানিয়েছি গণতন্ত্রখেকো সেই রাষ্ট্র নায়ককে। স্বাধীনতাবিরোধী দল একমাত্র জামায়াতে ইসলামকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করে তাদের সঙ্গে গলাগলি ধরে রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করাকে আমরা বাহবা দিয়েছি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রবর্তক নামে সম্মাননা দিয়ে। আমরা গণতন্ত্র আর জলপাইরঙা গণতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য করতে পারিনি।

পৌনে একহালি জš§দিন থাকার পরেও হালিপূর্ণের জš§দিনটি কতইনা ঘটা করে বাহবা সহকারে আমরা পালন করছি। জাতীয় নেত্রী বলে কথা। জাতি হিসেবে আমরা বাহবা দিতে শিখেছি বটে। স্বাধীনতাবিরোধী চেতনার ধারক হলে, তাদেরকে আগানে-বাগানে বাহবা দিতে আমাদের অন্তত কোনো কার্পণ্য নেই। এ বিষয়ে আমরা অত্যন্ত অভিজ্ঞ ও সিদ্ধহস্ত।

রাষ্ট্রীয় আইন মানার দায়িত্ব দবিরদ্দি-ছবিরদ্দিদের। সম্মানীয় লোকের আইন ভাঙার মহোৎসবকে সমর্থন করার একটা রাজনৈতিক ধারাকে আমরা মনে-প্রাণে ধারণ করে ফেলেছি। ফলে সম্মানী লোক আইন ভঙ্গ করলে তাকে যদি আইন দেখানো হয় তবে আমরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলি, ‘উনার মতো লোকের সঙ্গে এ কাজটি করা ঠিক হয়নি’। আমরা কখনও বলতে পারি না যে, ‘উনার মতো লোকের এ কাজটি করা মোটেও ঠিক হয়নি’। কোনো ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ষাট বছর বয়সে অবসরে যাওয়ার বিধান রাষ্ট্রীয় আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত।

সে আইনকে ভঙ্গ করার কথা কোনো সাধারণ ব্যাংকার চিন্তাও করে না। কিন্তু নোবেল বিজয়ী চিন্তা করেন, কারণ তিনি সাধারণ নন, অসাধারণ। মানি লোকের সম্মানের দিকে তাকিয়ে আমরা আমজনতা আমাদের সহজাত প্রবৃত্তিগুণে তার এ আইন ভাঙার গোঁয়ার্তুমিকে সমর্থনও করে ফেললাম। মানুষ হিসেবে আমরা কত-না মহান। আমরা যোগ্য ব্যক্তিদেরকে কী সম্মানটাইনা দেই! যত প্যাঁচ বাধে শুধু স্বাধীনতার স্বপক্ষের দিকে স্বার্থ যায় এমন সব বিষয়াদী নিয়ে।

বিপক্ষের দিকে গেলে কোনো ভেজাল নেই। জাতিগতভাবে আমাদের চেতনার জোয়ার তাহলে কোনো দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে! সময়মত যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করে, তার হাতে প্রতিষ্ঠানের সকল দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে নিজে অবসরে যাওয়াই হলো সঠিক ও প্রশংসনীয় কাজ এবং তাই হওয়া উচিত। প্রয়োজনে পরামর্শক হিসেবেও প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সংযুক্ত থাকা যেতে পারে। ব্যবস্থাপনার তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক মূলনীতি দ্বারা স্বীকৃত সেই উচিত কাজটি যিনি করেননি, তার সেই ব্যর্থতাকে আমরা ‘ব্যর্থ’ বলতে পারলাম না, উল্টো এটিকে ব্যর্থতা বলার উচিত কাজটি যারা করলেন তাদেরকেই আমরা দোষারোপ করে বসলাম। বাহ! আমরা কী জাতি! অথচ এই ক্ষমতালিপ্সু ব্যক্তিটি তার প্রতিষ্ঠানে ইচ্ছাকৃতভাবেই যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি হতে দেননি বলেই প্রতীয়মান।

সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে চাকরি থেকে বরখাস্ত পর্যন্ত করেছেন। তারপরেও যদি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তাকে ক্ষমতায় থাকতে হয় বা ক্ষমতায় থাকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় তাহলে তিনি রাষ্ট্রের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বয়সসীমা বাড়ানোর আবেদন করতে পারতেন। তিনি তা করেননি। করবেন কেন? তিনি তো বড় মাপের মানুষ হয়ে গেছেন, রাষ্ট্রের থেকেও বড়। তার প্রত্যাশা অনুযায়ী উল্টো রাষ্ট্রই তার আইন-কানুন সমেত তার কাছে গিয়ে ধর্না দেবে।

তাছাড়া, মার্কিনের মতো এতোবড় মাস্তান যার হাতে আছে, তিনি কেন এতো ছোটখাট বিষয়ে রাষ্ট্রের আইন মানতে যাবেন! তিনি যাননি এবং আমরাও তার এ না যাওয়ার মতো অন্যায়কে পূর্ণভাবে সমর্থন করেছি। তিনি রাষ্ট্রের কাছে কোনো আবেদন তো করেনইনি উল্টো কেন তার এ অন্যায় আবদার রাখা হলো না সে জন্য গোস্বা করে তিনি বিশ্ব মোড়লের সহায়তা নিয়ে রাষ্ট্রের ওপরে চাপ সৃষ্টি করেছেন। বিজ্ঞমহল আলোচনা-সমালোচনা করে বলেন যে, পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের টাকা না দেওয়ার তাল-বাহানার পেছনের গোপন কলকাঠি নাকি তিনিই নাড়িয়েছেন। তারা কী ভেবে একথা বলেন, তা এ অধমের জানার কথা নয়। আমরা কখনও ভেবে দেখলাম না যে, একটা মানুষ কত বড় হয়! বড় হতে হতে সে কি তার দেশের থেকেও বড় হয়ে যায়! তার রাষ্ট্রকেও সে ছাড়িয়ে যায়! সংশ্লিষ্ট ভুক্তভুগিরা বলেন, মহাজনী ব্যবসা বা সুদের কারবারির গালভরা তেলতেলে আধুনিক নাম ‘ক্ষুদ্রঋণ’ কার্যক্রম।

সর-খাওয়ারা বলেন, এর দ্বারা নাকি গরিব মানুষ সম্পদশালী হয়ে তারা গরিবত্বকে যাদুঘরে পর্যন্ত পাঠাতে পারে। সেটা কতুটুকু সম্ভব হয়েছে তা চর্মচক্ষুর দৃষ্টিশক্তির অসুবিধা না থাকলে সবাই স্ব স্ব চক্ষু মেলে অনায়াসেই দেখতে পারেন। কী দেখা যায়? রাজধানী ঢাকার মিরপুরের আকাশচুম্বী গরিবের প্রাসাদ চোখে পড়ে? ওটি ক্ষুদ্রঋণ বাণিজ্য থেকে হয়নি, রাতারাতি মাটি ফুঁড়ে গজিয়েছে! নাদান লোকজন বলাবলি করে, অর্থ নিয়ে নাড়াচাড়া করে যদি নোবেল পান তবে তা পাবেন অর্থনীতিতে, শান্তিতে কেন? সকল কিছু বিচার-বিবেচনা করে বড় বড় রথী-মহারথীরাই নোবেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করাও চরম ধৃষ্টতা। কিন্তু পাবলিকের মুখতো বন্ধ করা যাচ্ছে না। ক্ষুদ্রঋণ বহু পুরাতন দিনের বিষয়, নতুন কিছু না।

পেটেন্ট আইনের ফাঁদে আমাদের দেশে উৎপাদিত বাসমতি চাউলকে টেকনোমতি চাউল নাম দিয়ে তা বাজারজাত করছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন-এর মালিক তারা, আমরা না। আমাদের উৎপাদিত জামদানি শাড়ির পেটেন্ট নিয়েছে ভারত, ওটাও আমাদের নেই। এভাবে নোবেল বিজয়ের মাধ্যমে ড. ইউনূস সাহেবও পুরাতন সুদ-বাণিজ্য ক্ষুদ্রঋণের জনক বলে গেছেন। নোবেল বিজয়ী এই মানুষটিকে দেশের কোনো মানবিক বিপর্যয়েই পাওয়া যায় না।

মানবতা ও যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে তিনি কথা বলেন না, দুর্ঘটনার কারণে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শ্রমিক মৃত্যু সাভারের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতেও তিনি কথা বলেন না, অবৈধভাবে রোহিঙ্গারা এদেশে ঢুকতে চাইলে সরকারের পক্ষ থেকে বাধা প্রদান করলে যখন কোনো কোনো আন্তর্জাতিক মহল সরকারকেই উল্টো দোষারোপ করে, দেশের স্বার্থ রক্ষায় তখনও তিনি কিছু বলেন না। ধ্বংসপ্রাপ্ত রানা প্লাজার সম্মুখে একজন ভিক্ষুককে একবোতল পানি এবং দশটা টাকা নিয়ে মানবতার সেবায় সহযোগিতার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়, কিন্তু গরিবের প্রতিষ্ঠান বলে খ্যাত গ্রামীণ ব্যাংক বা তার কোনো অঙ্গ সংস্থা বা তারও কোনো শাখা-প্রশাখা ও উপশাখাকেও এ মানবিক কাজে দেখা যায় না। শান্তির নোবেলের কী মমত্ববোধ। দুষ্টু লোকে বলে ওখানে সুদ বাণিজ্য থাকলে নোবেল লরিয়েটকে ঠিকই দেখা যেত। অথচ আমাদের জন্য ঘৃণ্য সমকামিতা বিষয়ে মার্কিনের প্রয়োজনে মন্তব্য করতে তার একটুও সময় লাগে না।

এতে ধর্মও যায় না। তেঁতুল থিওরি দিয়ে যেমন শফী সাহেবের ধর্ম অবমাননা হয় না, ঐ রকম। অথচ, শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের কেউ এমন করলে দেখা যেত খেল কাকে বলে আর ধর্ম কারে কয়! হায়রে পাবলিক! হায়রে ধর্মপ্রাণতা। সকল ধরনের অপকর্মের হোতাদের জন্যই বিএনপি নামক এ দলটির কলিজা ফেটে জারেজার হয়ে যায়। এখন ড. ইউনূসের জন্যও তাই হচ্ছে।

ভোট বাণিজ্যে চরম মিথ্যার মহাভারত রচনা করে, শাপলা চত্বরের আজগুবি মৃত্যু শায়রের মহাকাব্য রচনা করে, নির্বাচনি প্রচারণার কাজে তারা সেই মহাকাব্য দিবানিশি দেশব্যাপী আবৃত্তি-পুনরাবৃত্তি করে চলেছে। এর ওপরে আবার বিএনপি নেতৃত্বের ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সে সম্পর্কে চটকদারী নিউজের প্রচারণা কৌশল এবং তা কাজে লাগিয়ে আরেক নির্বাচনি ভেলকিবাজি। বিএনপি নেতারা নোবেল বিজয়ীর সঙ্গে দেখা করে নির্বিচারে গ্রামীণ ব্যাংকের সকল কর্মযজ্ঞ বৈধ করার ঘোষণা দিয়ে এসেছেন। এখন ভোটের রাজ্যে তাদের নাকি আরও জয়জয়কার অবস্থা। অথচ এ কী হবার কথা! সুত্র বর্তমান বিশ্ব নিয়ন্ত্রক, বিশ্ব মোড়ল যে দেশকে তাদের শোষণের টার্গেট করে সে দেশে এক একজন গ্রহণযোগ্য সঙ তৈরি করে।

বিশ্ব মোড়ল তার নিয়ন্ত্রিত দেশ ও সংস্থাসমূহের মাধ্যমে সেই সঙকে নানান রঙে রঙে রাঙিয়ে তাকে সাংঘাতিকভাবে দৃষ্টি নন্দন করে তোলে, যেন ঐ সঙের দ্বারা জনগণকে বিভ্রান্ত করা সহজ হয়। ড. ইউনূসরা হলো সেই সঙ, আর তাদের প্রাপ্ত এ ভারী ভারী পুরস্কার হলো সেই চোখ ধাঁধানো সঙের ‘বেনীআসহকলা’ প্রলেপ। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তনও ছিল এমনি আরেক প্রলেপ। অর্থনৈতিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর কোনো দেশ ক্ষুদ্রঋণের দ্বারা প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি এবং ক্ষুদ্রঋণকে ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠা লাভের পরিকল্পনাও কোনো দেশ নীতিগতভাবে গ্রহণ করেনি। যদিও বিচ্ছিন্নভাবে কোনো কোনো অনুন্নত দেশে এ কার্যক্রম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে।

যারা ক্ষুদ্রঋণের হোতাদেরকে পুরস্কৃত করছেন তারা নিজেরাও তাদের দেশে এটিকে গ্রহণ করেনি। একটি জাতিকে সারা জীবন দরিদ্র রাখার জন্য এমন একটি দুষ্ট চক্রের মধ্যে বেধে রাখা দরকার যেন সে জাতি ঐ চক্র ছিন্ন করে কোনো দিনই বেরিয়ে আসতে না পারে। ক্ষুদ্রঋণ হলো সেই দুষ্ট চক্র। রঙ মেখে মেখে এই দুষ্ট চক্রকে মরীচিকার মতো গ্রহণযোগ্য করে তোলা হচ্ছে। পুরস্কৃত করা হচ্ছে-এর পথিকৃতদের, যা মূলত আমাদের জন্য বুমেরাং।

বিগত এক-এগারোর যে সকল কুশীলবেরা দুই নেত্রীকে অন্তরালে পাঠিয়ে ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা করে এ দেশটাকে লুটেপুটে খেয়ে মহাজন হতে চেয়েছিলেন, জ্ঞানীদের মতে ড. ইউনূস তাদের অন্যতম প্রধান হোতা। আজ যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এসে বিএনপি ক্ষমতায় আসত তবে ড. ইউনূসের অবস্থা আরও অনেক বেশি কাহিল করে ছাড়ত। নিশ্চয়ই বেগম খালেদা জিয়া তার অন্তরীণ থাকা সেই দিনগুলোর কথা ভুলে যাননি। অথচ এখন বিএনপি নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে সেই কুশীলবকেই বুকে টেনে তোলার ভান করছে। জনগণকে বোধ হয় তলের ভাত নূন দিয়ে খাবার বিষয়টি আরেকটু গভীরভাবে ভাবতে হবে।

ই-মেইল : হধুসঁষথষবশযড়শ@ুধযড়ড়.পড়সকী বলতে কী বললে মানি লোকের মানে আঘাত লেগে সেই মান আবার তাসের ঘরের মতো ঝুরঝুর করে ঝরে গিয়ে বোদ্ধা শ্রেণীর মাথায় পড়ে গিয়ে তাদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তা আমার মতো ক্ষুদ্র জ্ঞানের তলানিতে পড়ে থাকা লেখকদের মোটেই বোঝার কথা নয়। এটি বুঝতে হলে জামায়াত-বিএনপি তথা যেকোনো ধর্ম ব্যবসায়িক রাজনৈতিক দলের বা নিদেনপক্ষে স্বাধীনতাবিরোধী আমড়া-মার্কা কোনো সংগঠনের সমর্থক হওয়া চাই। সমর্থক না হলেও ক্ষতি নাই, ভঙ বা আলখেল্লাটা ঠিক থাকলেই হয়, যেমন, ঠিক রেখেছেন ফরহাদ মজহার গং। ঐ ঘরানার যেকোনো সংগঠনের সারথি হলে, সত্য-মিথ্যা, আজগুবি-বাজগুবি, আজব-গুজব যা-ই বলা হয়, তাই-ই ছহি হয়ে যায়। এ ক্ষতিকর উপাদানগুলোই ঐ সমস্ত দলের সৃষ্টি, অগ্রযাত্রা এবং বিজয়ের মূল পাথেয় হওয়ায়, দলগুলোর ছত্রছায়ায় থেকে সুকর্ম না করে অপকর্ম করলেই বরং ভালো বাহবা পাওয়া যায়।

যেমন, এখনকার এ নির্বাচনি হাওয়ায় তারা এ জাতীয় বাহবা-তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছে এবং সে ঢেঁকুরের গন্ধে ফুরফরা হয়ে জেহাদি জোসে আকুলি-ব্যাকুলি করছে হেফাজতিরা, জামায়াতিরা এবং অচিরেই রাষ্ট্র ক্ষমতার সম্ভাব্য পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে সুদের কারবার করে দারিদ্র্যকে যাদুঘরে পাঠানোর আগাম সুখস্বপ্নে বিভোর ড. মোহাম্মদ ইউনূস। নোবেল পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। সলিমুদ্দিন-কলিমুদ্দিন বা আম্বিয়া-কুলসুম হয়ে এ বিষয়ে মন্তব্য করাও ধৃষ্টতা। যদিও ইতিপূর্বে যারা শান্তির নোবেল পেয়েছেন সে তালিকার ধারাবাহিকতা দেখলেই যেকোনো উৎকৃষ্টমানের মার্কিন পা-চাটুকেরই শান্তির নোবেল পাওয়ার স্বাধ জাগাটা অস্বাভাবিক নয়। যাক সে কথা।

উৎকৃষ্টমানের মার্কিন ‘পা-চাটুক’ হওয়াতো বিরাট একটা যোগ্যতা, সবাই কি তা পারে? পারে না। বাহবা দিতে দোষ কোথায়? কতো রকম বাহবাইতো আমরা দিয়ে অভ্যস্ত, ড. ইউনূসকে বাহবা দেওয়া আর এমন কী কাজ! আমরা বাহবা দিয়েছি আজীবন ক্ষমতার দম্ভে বুদ হয়ে থাকা সেনা নায়কের গণতন্ত্রের ভিত্তি দুমড়ে-মুচড়ে রাষ্ট্র নায়ক হবার প্রক্রিয়াকে এবং মহাসম্মানের বেদি বানিয়েছি গণতন্ত্রখেকো সেই রাষ্ট্র নায়ককে। স্বাধীনতাবিরোধী দল একমাত্র জামায়াতে ইসলামকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করে তাদের সঙ্গে গলাগলি ধরে রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করাকে আমরা বাহবা দিয়েছি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রবর্তক নামে সম্মাননা দিয়ে। আমরা গণতন্ত্র আর জলপাইরঙা গণতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য করতে পারিনি। পৌনে একহালি জš§দিন থাকার পরেও হালিপূর্ণের জš§দিনটি কতইনা ঘটা করে বাহবা সহকারে আমরা পালন করছি।

জাতীয় নেত্রী বলে কথা। জাতি হিসেবে আমরা বাহবা দিতে শিখেছি বটে। স্বাধীনতাবিরোধী চেতনার ধারক হলে, তাদেরকে আগানে-বাগানে বাহবা দিতে আমাদের অন্তত কোনো কার্পণ্য নেই। এ বিষয়ে আমরা অত্যন্ত অভিজ্ঞ ও সিদ্ধহস্ত। রাষ্ট্রীয় আইন মানার দায়িত্ব দবিরদ্দি-ছবিরদ্দিদের।

সম্মানীয় লোকের আইন ভাঙার মহোৎসবকে সমর্থন করার একটা রাজনৈতিক ধারাকে আমরা মনে-প্রাণে ধারণ করে ফেলেছি। ফলে সম্মানী লোক আইন ভঙ্গ করলে তাকে যদি আইন দেখানো হয় তবে আমরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলি, ‘উনার মতো লোকের সঙ্গে এ কাজটি করা ঠিক হয়নি’। আমরা কখনও বলতে পারি না যে, ‘উনার মতো লোকের এ কাজটি করা মোটেও ঠিক হয়নি’। কোনো ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ষাট বছর বয়সে অবসরে যাওয়ার বিধান রাষ্ট্রীয় আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। সে আইনকে ভঙ্গ করার কথা কোনো সাধারণ ব্যাংকার চিন্তাও করে না।

কিন্তু নোবেল বিজয়ী চিন্তা করেন, কারণ তিনি সাধারণ নন, অসাধারণ। মানি লোকের সম্মানের দিকে তাকিয়ে আমরা আমজনতা আমাদের সহজাত প্রবৃত্তিগুণে তার এ আইন ভাঙার গোঁয়ার্তুমিকে সমর্থনও করে ফেললাম। মানুষ হিসেবে আমরা কত-না মহান। আমরা যোগ্য ব্যক্তিদেরকে কী সম্মানটাইনা দেই! যত প্যাঁচ বাধে শুধু স্বাধীনতার স্বপক্ষের দিকে স্বার্থ যায় এমন সব বিষয়াদী নিয়ে। বিপক্ষের দিকে গেলে কোনো ভেজাল নেই।

জাতিগতভাবে আমাদের চেতনার জোয়ার তাহলে কোনো দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে! সময়মত যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করে, তার হাতে প্রতিষ্ঠানের সকল দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে নিজে অবসরে যাওয়াই হলো সঠিক ও প্রশংসনীয় কাজ এবং তাই হওয়া উচিত। প্রয়োজনে পরামর্শক হিসেবেও প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সংযুক্ত থাকা যেতে পারে। ব্যবস্থাপনার তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক মূলনীতি দ্বারা স্বীকৃত সেই উচিত কাজটি যিনি করেননি, তার সেই ব্যর্থতাকে আমরা ‘ব্যর্থ’ বলতে পারলাম না, উল্টো এটিকে ব্যর্থতা বলার উচিত কাজটি যারা করলেন তাদেরকেই আমরা দোষারোপ করে বসলাম। বাহ! আমরা কী জাতি! অথচ এই ক্ষমতালিপ্সু ব্যক্তিটি তার প্রতিষ্ঠানে ইচ্ছাকৃতভাবেই যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি হতে দেননি বলেই প্রতীয়মান। সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে চাকরি থেকে বরখাস্ত পর্যন্ত করেছেন।

তারপরেও যদি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তাকে ক্ষমতায় থাকতে হয় বা ক্ষমতায় থাকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় তাহলে তিনি রাষ্ট্রের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বয়সসীমা বাড়ানোর আবেদন করতে পারতেন। তিনি তা করেননি। করবেন কেন? তিনি তো বড় মাপের মানুষ হয়ে গেছেন, রাষ্ট্রের থেকেও বড়। তার প্রত্যাশা অনুযায়ী উল্টো রাষ্ট্রই তার আইন-কানুন সমেত তার কাছে গিয়ে ধর্না দেবে। তাছাড়া, মার্কিনের মতো এতোবড় মাস্তান যার হাতে আছে, তিনি কেন এতো ছোটখাট বিষয়ে রাষ্ট্রের আইন মানতে যাবেন! তিনি যাননি এবং আমরাও তার এ না যাওয়ার মতো অন্যায়কে পূর্ণভাবে সমর্থন করেছি।

তিনি রাষ্ট্রের কাছে কোনো আবেদন তো করেনইনি উল্টো কেন তার এ অন্যায় আবদার রাখা হলো না সে জন্য গোস্বা করে তিনি বিশ্ব মোড়লের সহায়তা নিয়ে রাষ্ট্রের ওপরে চাপ সৃষ্টি করেছেন। বিজ্ঞমহল আলোচনা-সমালোচনা করে বলেন যে, পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের টাকা না দেওয়ার তাল-বাহানার পেছনের গোপন কলকাঠি নাকি তিনিই নাড়িয়েছেন। তারা কী ভেবে একথা বলেন, তা এ অধমের জানার কথা নয়। আমরা কখনও ভেবে দেখলাম না যে, একটা মানুষ কত বড় হয়! বড় হতে হতে সে কি তার দেশের থেকেও বড় হয়ে যায়! তার রাষ্ট্রকেও সে ছাড়িয়ে যায়! সংশ্লিষ্ট ভুক্তভুগিরা বলেন, মহাজনী ব্যবসা বা সুদের কারবারির গালভরা তেলতেলে আধুনিক নাম ‘ক্ষুদ্রঋণ’ কার্যক্রম। সর-খাওয়ারা বলেন, এর দ্বারা নাকি গরিব মানুষ সম্পদশালী হয়ে তারা গরিবত্বকে যাদুঘরে পর্যন্ত পাঠাতে পারে।

সেটা কতুটুকু সম্ভব হয়েছে তা চর্মচক্ষুর দৃষ্টিশক্তির অসুবিধা না থাকলে সবাই স্ব স্ব চক্ষু মেলে অনায়াসেই দেখতে পারেন। কী দেখা যায়? রাজধানী ঢাকার মিরপুরের আকাশচুম্বী গরিবের প্রাসাদ চোখে পড়ে? ওটি ক্ষুদ্রঋণ বাণিজ্য থেকে হয়নি, রাতারাতি মাটি ফুঁড়ে গজিয়েছে! নাদান লোকজন বলাবলি করে, অর্থ নিয়ে নাড়াচাড়া করে যদি নোবেল পান তবে তা পাবেন অর্থনীতিতে, শান্তিতে কেন? সকল কিছু বিচার-বিবেচনা করে বড় বড় রথী-মহারথীরাই নোবেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করাও চরম ধৃষ্টতা। কিন্তু পাবলিকের মুখতো বন্ধ করা যাচ্ছে না। ক্ষুদ্রঋণ বহু পুরাতন দিনের বিষয়, নতুন কিছু না। পেটেন্ট আইনের ফাঁদে আমাদের দেশে উৎপাদিত বাসমতি চাউলকে টেকনোমতি চাউল নাম দিয়ে তা বাজারজাত করছে যুক্তরাষ্ট্র।

এখন-এর মালিক তারা, আমরা না। আমাদের উৎপাদিত জামদানি শাড়ির পেটেন্ট নিয়েছে ভারত, ওটাও আমাদের নেই। এভাবে নোবেল বিজয়ের মাধ্যমে ড. ইউনূস সাহেবও পুরাতন সুদ-বাণিজ্য ক্ষুদ্রঋণের জনক বলে গেছেন। নোবেল বিজয়ী এই মানুষটিকে দেশের কোনো মানবিক বিপর্যয়েই পাওয়া যায় না। মানবতা ও যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে তিনি কথা বলেন না, দুর্ঘটনার কারণে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শ্রমিক মৃত্যু সাভারের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতেও তিনি কথা বলেন না, অবৈধভাবে রোহিঙ্গারা এদেশে ঢুকতে চাইলে সরকারের পক্ষ থেকে বাধা প্রদান করলে যখন কোনো কোনো আন্তর্জাতিক মহল সরকারকেই উল্টো দোষারোপ করে, দেশের স্বার্থ রক্ষায় তখনও তিনি কিছু বলেন না।

ধ্বংসপ্রাপ্ত রানা প্লাজার সম্মুখে একজন ভিক্ষুককে একবোতল পানি এবং দশটা টাকা নিয়ে মানবতার সেবায় সহযোগিতার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়, কিন্তু গরিবের প্রতিষ্ঠান বলে খ্যাত গ্রামীণ ব্যাংক বা তার কোনো অঙ্গ সংস্থা বা তারও কোনো শাখা-প্রশাখা ও উপশাখাকেও এ মানবিক কাজে দেখা যায় না। শান্তির নোবেলের কী মমত্ববোধ। দুষ্টু লোকে বলে ওখানে সুদ বাণিজ্য থাকলে নোবেল লরিয়েটকে ঠিকই দেখা যেত। অথচ আমাদের জন্য ঘৃণ্য সমকামিতা বিষয়ে মার্কিনের প্রয়োজনে মন্তব্য করতে তার একটুও সময় লাগে না। এতে ধর্মও যায় না।

তেঁতুল থিওরি দিয়ে যেমন শফী সাহেবের ধর্ম অবমাননা হয় না, ঐ রকম। অথচ, শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের কেউ এমন করলে দেখা যেত খেল কাকে বলে আর ধর্ম কারে কয়! হায়রে পাবলিক! হায়রে ধর্মপ্রাণতা। সকল ধরনের অপকর্মের হোতাদের জন্যই বিএনপি নামক এ দলটির কলিজা ফেটে জারেজার হয়ে যায়। এখন ড. ইউনূসের জন্যও তাই হচ্ছে। ভোট বাণিজ্যে চরম মিথ্যার মহাভারত রচনা করে, শাপলা চত্বরের আজগুবি মৃত্যু শায়রের মহাকাব্য রচনা করে, নির্বাচনি প্রচারণার কাজে তারা সেই মহাকাব্য দিবানিশি দেশব্যাপী আবৃত্তি-পুনরাবৃত্তি করে চলেছে।

এর ওপরে আবার বিএনপি নেতৃত্বের ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সে সম্পর্কে চটকদারী নিউজের প্রচারণা কৌশল এবং তা কাজে লাগিয়ে আরেক নির্বাচনি ভেলকিবাজি। বিএনপি নেতারা নোবেল বিজয়ীর সঙ্গে দেখা করে নির্বিচারে গ্রামীণ ব্যাংকের সকল কর্মযজ্ঞ বৈধ করার ঘোষণা দিয়ে এসেছেন। এখন ভোটের রাজ্যে তাদের নাকি আরও জয়জয়কার অবস্থা। অথচ এ কী হবার কথা! বর্তমান বিশ্ব নিয়ন্ত্রক, বিশ্ব মোড়ল যে দেশকে তাদের শোষণের টার্গেট করে সে দেশে এক একজন গ্রহণযোগ্য সঙ তৈরি করে। বিশ্ব মোড়ল তার নিয়ন্ত্রিত দেশ ও সংস্থাসমূহের মাধ্যমে সেই সঙকে নানান রঙে রঙে রাঙিয়ে তাকে সাংঘাতিকভাবে দৃষ্টি নন্দন করে তোলে, যেন ঐ সঙের দ্বারা জনগণকে বিভ্রান্ত করা সহজ হয়।

ড. ইউনূসরা হলো সেই সঙ, আর তাদের প্রাপ্ত এ ভারী ভারী পুরস্কার হলো সেই চোখ ধাঁধানো সঙের ‘বেনীআসহকলা’ প্রলেপ। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তনও ছিল এমনি আরেক প্রলেপ। অর্থনৈতিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর কোনো দেশ ক্ষুদ্রঋণের দ্বারা প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি এবং ক্ষুদ্রঋণকে ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠা লাভের পরিকল্পনাও কোনো দেশ নীতিগতভাবে গ্রহণ করেনি। যদিও বিচ্ছিন্নভাবে কোনো কোনো অনুন্নত দেশে এ কার্যক্রম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। যারা ক্ষুদ্রঋণের হোতাদেরকে পুরস্কৃত করছেন তারা নিজেরাও তাদের দেশে এটিকে গ্রহণ করেনি।

একটি জাতিকে সারা জীবন দরিদ্র রাখার জন্য এমন একটি দুষ্ট চক্রের মধ্যে বেধে রাখা দরকার যেন সে জাতি ঐ চক্র ছিন্ন করে কোনো দিনই বেরিয়ে আসতে না পারে। ক্ষুদ্রঋণ হলো সেই দুষ্ট চক্র। রঙ মেখে মেখে এই দুষ্ট চক্রকে মরীচিকার মতো গ্রহণযোগ্য করে তোলা হচ্ছে। পুরস্কৃত করা হচ্ছে-এর পথিকৃতদের, যা মূলত আমাদের জন্য বুমেরাং। বিগত এক-এগারোর যে সকল কুশীলবেরা দুই নেত্রীকে অন্তরালে পাঠিয়ে ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা করে এ দেশটাকে লুটেপুটে খেয়ে মহাজন হতে চেয়েছিলেন, জ্ঞানীদের মতে ড. ইউনূস তাদের অন্যতম প্রধান হোতা।

আজ যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এসে বিএনপি ক্ষমতায় আসত তবে ড. ইউনূসের অবস্থা আরও অনেক বেশি কাহিল করে ছাড়ত। নিশ্চয়ই বেগম খালেদা জিয়া তার অন্তরীণ থাকা সেই দিনগুলোর কথা ভুলে যাননি। অথচ এখন বিএনপি নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে সেই কুশীলবকেই বুকে টেনে তোলার ভান করছে। জনগণকে বোধ হয় তলের ভাত নূন দিয়ে খাবার বিষয়টি আরেকটু গভীরভাবে ভাবতে হবে। সুত্র
 


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।