ব্যস্ত হাতুড়ে !!! "টাইম কম, সিরিয়াল বিরাট! কাজেই কথা তাড়াতাড়ি শেষ করেন" "মডুদের কাছ থেকে ভিজিট নেওয়া হয় না"
সচিবালয়ে ইদানীং একঝাঁক সুন্দরীর নিয়মিত যাতায়াত। এদের অধিকাংশই উচ্চশিক্ষিতা। কেউ কেউ দলীয় পরিচয়ে বিশাল ক্ষমতাধর। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ ক্ষমতাধর আমলাদের কক্ষে এসব সুন্দরীর অবাধ যাতায়াত। তাদের হাতে একাধিক দামি মোবাইল সেট।
কেউ চড়েন দামি গাড়িতে। কোনো কোনো গাড়িতে নিয়মিত সচিবালয়ে প্রবেশের স্টিকারও জুটেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব সুন্দরীর সচিবালয়ে প্রবেশ সহজ করতে প্রভাবশালী একটি মহল দাফতরিক কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে থাকে। স্টিকার লাগানো গাড়িতে চড়ে অনায়াসে সচিবালয়ের ভিতরে আসছেন সুন্দরীরা। সুন্দরীদের পাস দিতে আমলারা রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নামেন বলে গুঞ্জন রয়েছে সচিবালয়ের ভিতরে-বাইরে।
রাজনীতির সঙ্গে নূ্যনতম সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও কথায় কথায় তাদের মুখে উচ্চারিত হয় ক্ষমতাসীন দলের কর্মকাণ্ডের নানান দিক। মন্ত্রী এবং দলের শীর্ষপর্যায়ের নেতাদের সমালোচনাও করেন অবলীলায়। ভাবখানা এমন যে, ওরা বড় ছাত্রনেতা ছিলেন কিংবা দলীয় ফোরামে নিবেদিত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিজেদের সাবেক নেত্রী বোঝাতে চাইলেও তাদের অনেকেরই পরিচয় সোসাইটি গার্ল। আর যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সেই দলের সঙ্গে ভাব রেখে কাজ আদায়ই ওদের রাজনীতি।
হাতেগোনা দুই-একজন নেতার সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে সচিবালয়ের এসব সুন্দরী কার্যত সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও আমলাকে ব্ল্যাকমেইলিং করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিতর্কিত সুন্দরীদের কেউ কেউ নিজেদের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও শাসকদলের প্রভাবশালী নেতাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিচয় দিতেও দ্বিধা করেন না। সচিবালয়ে দায়িত্বরত একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাও এসব সুন্দরী সম্পর্কে এমন অভিযোগই পাচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যমতে, কমপক্ষে পঞ্চাশজন সুন্দরী বিভিন্ন সময়ে সচিবালয়ে যাতায়াত করছেন। বাগিয়ে নিচ্ছেন অনেক তদবিরের কাজ।
অভিযোগ রয়েছে, কর্মকর্তাদের পোস্টিং, নিয়োগসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বাজেট বরাদ্দের তদবির করে এসব সুন্দরী রাজধানীতে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। সব সরকারের আমলেই এরা ক্ষমতাধর। সূত্রমতে, প্রায় এক ডজন সুন্দরী রয়েছেন, যারা ফ্রি স্টাইলে প্রভাবশালী মন্ত্রীদের কক্ষেও যাতায়াত করেন। পিএস-এপিএস'র অনুমতির তোয়াক্কা করেন না। এমনও লক্ষ্য করা গেছে, কোনো সুন্দরী যখন মন্ত্রীর কক্ষে আলোচনায় মশগুল তখন হয়তো একাধিক এমপি মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করছেন।
সুন্দরীদের দৌরাত্মে ক্ষমতাসীন দলের অনেক মহিলা এমপিও বিরক্ত।
একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এ প্রসঙ্গে বলেছেন, সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র। এ নিয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কি না করলেই নয়? এত বেরসিক কেন আপনারা। সচিবালয়ের বিভিন্ন সূত্রমতে, মহাজোট সরকারের গোড়ার দিকে এসব সুন্দরী অনেকটা অন্তরালে থেকেই সচিবালয়কেন্দ্রিক নানাবিধ তদবির নিয়ন্ত্রণ করছেন। সম্প্রতি সচিবালয়ে বেড়েছে সুন্দরীদের আনাগোনা।
অভিযোগ রয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ একাধিক মন্ত্রী, সচিব এবং সচিবালয়ের ক্ষমতাধর কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে অনেক সুন্দরীর। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আমলে সচিবালয়ে সুন্দরীদের তদবির সিন্ডিকেটের কথা অনেকেরই জানা। সেই এরশাদ আমল থেকেই প্রায় দুই দশক ধরেই সুন্দরীরা পরোক্ষভাবে সচিবালয়ের তদবির নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন বলে অভিযোগ। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সন্দেহভাজন সুন্দরীদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছে। অনেকের পারিবারিক ও রাজনৈতিক অতীত জানারও চেষ্টা করছে।
সচিবালয়ে এসব বিতর্কিত সুন্দরীর দাপটে ক্ষমতাসীন দলের নিবেদিত নেতা-কর্মীরা বিরক্ত। আওয়ামী লীগের এক তরুণ এমপির মন্তব্য_ সচিবালয়ে তদবির বাণিজ্য হয়তো ওদেরই জন্য। শোনা যায়, ওদের ব্যাপারে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং আমলাদের আশীর্বাদেরও ঘাটতি নেই। কারণ ওরা সুন্দরী।
...
তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১লা অক্টোবর ২০১০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।