আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুভ বিজয়া দশমী

লিখবো অনেক কিছু.......জানবো এবং জানাবো...........

আজ শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ দিন, শুভ বিজয়া দশমী। প্রতি বৎসরের ন্যায় আজও সারা দেশে দিনটি যথাযথ মর্যাদা ও আনন্দোৎসবের মধ্য দিয়া পালিত হইবে। মা দুর্গা আজ বিদায় বিসর্জনে যাইবেন। বিসর্জনের দিনটিতে একদিকে বিদায়ের শোক ও বেদনা, অন্যদিকে দুর্গতিনাশিনী ও কল্যাণময়ী মা যে এবারও পিতৃগৃহে আসিয়াছিলেন সেই আনন্দের রেশ। অবশ্য মমতাময়ী মায়ের বিসর্জন রূপক অর্থে ব্যবহূত।

৫ দিনের পূজা শেষে তিনি আমাদের অনত্দর মন্দিরে চলিয়া যান। সেখানে নিত্য বিরাজ করেন। দুর্গাপূজা মূলত: বাঙ্গালি হিন্দু সমাজের প্রধান পূজা ও ধর্মীয় উৎসব হিসাবে অভিহিত। তবে উপমহাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে কালীপূজার ব্যাপ্তিই সর্বাধিক। প্রতি বৎসর দুর্গাপূজার পরই অমাবস্যা তিথিতে আসে এই পূজা।

যাহা হউক, দুর্গা হইতেছেন শক্তির প্রতীক। তিনি হিংসা, নাশকতা ও সকল অন্যায়-অপকর্মের প্রতীক অসুরের নিধন সাধন করিয়া মানব সমাজে শানত্দি, শৃঙ্খলা ও স্বসত্দি আনয়ন করেন। মানুষকে দীৰিত করেন অভয়মন্ত্রে। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী মা দুর্গা দেবাদিদেব মহাদেবের পত্নী। তাহাদের দুই কন্যা ও দুই পুত্র।

লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিক। এই চার সনত্দানের সঙ্গে দুর্গার মহাশক্তির চারবর্গ তথা ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোৰ সংশিস্নষ্ট। মহাদেবের বাসগৃহ কৈলাস পর্বত হইতে মা দুর্গা প্রতি বৎসর সনত্দানদেরকে সঙ্গে করিয়া পিত্রালয় মত্যর্ে বেড়াইতে আসেন। আসেন প্রতিবৎসর আশ্বিন মাসের পঞ্চম তিথিতে। পাঁচ দিন কাটাইয়া যান এইখানে।

এবার দেশব্যাপী শানত্দি ও সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশেই অনুষ্ঠিত হইতেছে এই পবিত্র ধর্মীয় উৎসব। মহাভারতের ভাষ্য মতে, কুরম্নৰেত্র যুদ্ধে জয় ত্বরান্বিত করিতে অর্জুনকে দেবী দুর্গার সত্দব করিতে উপদেশ দিয়াছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। ইহাছাড়া সম্রাট আকবরের শাসনামলে রাজশাহীর তাহিরপুরের রাজা কংসনারায়ণ বঙ্গভূমিতে সর্বপ্রথম এই পূজা প্রচলন করেন বলিয়া জানা যায়। দেবী দুর্গা যেহেতু অসুরদের দলপতি মহিষাসুরকে বধ করিয়া দেবকুলকে রৰা করিয়াছিলেন, তাই তিনি সত্য, শুভ ও ন্যায়ের পৰে সংগ্রামকারীদের আজও আদর্শ ও অনুপ্রেরণা দানকারী। দুর্গা অর্থই যিনি দুর্গতি নাশ করেন।

এজন্য তাঁহার আগমনে আমাদের সমাজ এত আলোড়িত হয়। ধর্মে-কর্মে, সৃজনে, ব্যবসা-বাণিজ্যে, শিল্প-সাহিত্যে সর্বত্র আসে গতিময়তা। মা দুর্গা আসেন দেবলোক প্রতিষ্ঠার নিমিত্ত। ইহাছাড়া সমাজের উন্নতি সম্ভব নহে। মায়ের আরেক নাম দশভুজা-মহিষমর্দিনী।

সাধারণত: কালো মহিষ গোয়ার্তুমির জন্য প্রসিদ্ধ। সুতরাং মহিষাসুর বধ সংক্রানত্দ আচার-অনুষ্ঠানের মর্মকথা হইল, নিজের অহমিকা ও পশুত্বকে বলি দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকা। এবারের পূজা উপলৰে আমাদের প্রার্থনা, সকলের দুর্গতি ও দুর্ভাবনা নাশ হউক। মন্ত্রের ভাষায়_ 'সর্বে ভবনত্দ সুখিন'। আমাদের আকাশ-বাতাস তৃণলোক মধুময় হউক।

মধুময় হউক আমাদের গৃহসমূহ। সবাইকে জানাই শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।